তানজিমের ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে আবাহনীর নয়ে নয়ে

ছবি: ফেসবুক

শুরুতে আঘাত হানলেন শরিফুল ইসলাম। তাকে পাশে সরিয়ে এরপর মূল নায়কে পরিণত হলেন তানজিম হাসান সাকিব। ক্যারিয়ারসেরা বিস্ফোরক বোলিংয়ে ছড়ালেন দ্যুতি। শেষে সঙ্গ দিতে এগিয়ে আসলেন তাসকিন আহমেদ। এই পেসত্রয়ীর তোপে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। মামুলি লক্ষ্য তাড়ায় বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে আবাহনী লিমিটেডকে অনায়াস জয় পাইয়ে দিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

শনিবার ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে নয় ম্যাচে টানা নবম জয় তুলে নিয়েছে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। নারায়ণগঞ্জের খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে তারা ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষকে।

৪০ ওভারেরও আগে ফয়সালা হয়ে গেছে ম্যাচের। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৮.৩ ওভারে ৯৯ রানেই গুটিয়ে যায় লিজেন্ডস। জবাবে ১০.৪ ওভারে ২ উইকেটে ১০১ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে আবাহনী।

ডানহাতি পেসার তানজিম ৭.৩ ওভারে ২৩ রান খরচায় নেন ৫ উইকেট। লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে এটি তার ৪৮ ম্যাচের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফাইফার। বাঁহাতি পেসার শরিফুল ৬ ওভারে ৩ উইকেট শিকার করেন ২৯ রানে। আরেক ডানহাতি পেসার তাসকিন ৮ ওভারে ৪ মেডেনসহ ১৬ রানে ২ উইকেট পান।

ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই উইকেট প্রাপ্তির উল্লাসে মাতেন শরিফুল। তিনি এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন তৌফিক খান তুষারকে। নিজের পরের ওভারে তার শিকার হন সাদমান ইসলাম। ৪ বল খেলে রানের খাতা খুলতে ব্যর্থ হন এই বাঁহাতি ওপেনার। একই ওভারের শেষ বলে বাউন্সারে আঘাত পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যান মুমিনুল হক। তবে বেশিক্ষণ বাইরে থাকা হয়নি তার। লিজেন্ডসের উইকেট পতনের ধারা অব্যাহত থাকলে মাঠে ফিরতে হয় তাকে।

তানজিম আক্রমণে আসেন ইনিংসের সপ্তম ওভারে। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ইমরানুজ্জামকে ক্যাচ বানিয়ে উইকেট শিকার শুরু করেন তিনি। তার পরের ওভারে এলবিডব্লিউ হন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব।

এরপর ইনিংস মেরামতের কাজে লাগেন মাশরাফি বিন মর্তুজা ও শামিম হোসেন পাটোয়ারি। মাশরাফি তার স্বভাবের বাইরে গিয়ে মাটি কামড়ে পড়ে থাকেন। শামিম মনোযোগী ছিলেন পাল্টা আক্রমণে। তবে এই জুটিকে বেশিদূর এগোতে দেননি শরিফুল। এনামুল হক বিজয়ের দারুণ ক্যাচে সাজঘরে ফেরার আগে শামিম করেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৮ রান! ১৪ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ৪ চার। ভেঙে যায় ২৬ রানের জুটি।

ক্রিজে ফিরলেও টিকতে পারেননি লিজেন্ডসের অধিনায়ক মুমিনুল। তাকে বোল্ড করার পর একই ওভারে শুভাগত হোমকেও বিদায় করেন তানজিম। ৭২ রানে ৭ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ইনিংসের সর্বোচ্চ ২৭ রানের জুটি গড়েন মাশরাফি ও শহিদুল ইসলাম। এই জুটির ইতি টানেন তাসকিন। ১ ছক্কা হাঁকানো মাশরাফি স্টাম্প খোয়ানোর আগে ৬০ বলে করেন ১৫ রান। পরের বলে আব্দুল হালিমকেও ছেঁটে ফেলেন তাসকিন।

পরের ওভারে পুল করতে গিয়ে নাঈম শেখের হাতে শহিদুল ক্যাচ দিয়ে থামেন। তানজিম পান ৫ উইকেটের মধুর স্বাদ। কোনো রান না করেই শেষ ৩ উইকেট হারায় লিজেন্ডস।

সহজ লক্ষ্যের পেছনে ছুটে একদমই ভালো শুরু পায়নি আবাহনী। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই নাঈমকে বোল্ড করেন হালিম। পঞ্চম ওভারে তাওহিদ হৃদয়কে সাজঘরে ফেরান আল আমিন হোসেন। ২৯ রানে ২ উইকেট হারালেও বিপাকে পড়েনি ঐতিহ্যবাহী আকাশি-নীল জার্সিধারীরা। তৃতীয় উইকেটে মাত্র ৩৫ বলে ৭২ রানের জুটিতে তারা শেষ করে দেয় খেলা।

ওপেনার এনামুল ৩৪ বলে ২ চার ও ৪ ছয়ে ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন। মোসাদ্দেক খেলেন হার না মানা ৪৮ রানের আগ্রাসী ইনিংস। স্রেফ ১৮ বল মোকাবিলায় তার ব্যাট থেকে আসে ৫ চার ও ৪ ছক্কা।

নয় ম্যাচের সবকটিতে জিতে পূর্ণ ১৮ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার এক নম্বরে রয়েছে আবাহনী। সমান ম্যাচে চতুর্থ হারে ১২ দলের আসরে সাত নম্বরে নেমে গেছে লিজেন্ডস।

Comments

The Daily Star  | English

A budget without illusions

No soaring GDP promises. No obsession with mega projects. No grand applause in parliament. This year, it’s just the finance adviser and his unemotional speech to be broadcast in the quiet hum of state television.

6h ago