জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা, রেশন ব্যবস্থা ও ন্যায্যমূল্যের দোকান চালুর দাবি সিপিবির

ছবি: সংগৃহীত

মহান মে দিবসে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আয়োজিত সমাবেশে নেতারা বলেছেন, শ্রমজীবী মেহনতি মানুষই তাদের শ্রম ও ঘামের মধ্য দিয়েই সভ্যতা বিনির্মাণ করে চলেছেন অথচ তারা অবহেলিত, শোষিত। আমাদের দেশে এখনো জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষিত ও বাস্তবায়ন হয়নি। দেশের শ্রমজীবী মানুষের আশি শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে। সেখানে মানুষের শোষণ সবচেয়ে বেশি। এখনকার তাপদাহে শ্রমজীবী মানুষই সবচেয়ে বেশি কষ্ট ভোগ করছে।

আজ বুধবার সকাল ৯টায় রাজধানীর পুরান পল্টনের মুক্তিভবনের সামনে মে দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আয়োজিত সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন পার্টির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহ আলম। সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারি সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, কন্ট্রোল কমিশনের চেয়ারম্যান শ্রমিক নেতা মাহবুব আলম। এ সময় সিপিবি'র সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা, কোষাধ্যক্ষ ডা. ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মন্টু ঘোষ, ডা. দিবালোক সিংহ, কাজী রুহুল আমিন, ডা.সাজেদুল হক রুবেল, জলি তালুকদার, অ্যাডভোকেট সোহেল আহমেদ, নিমাই গাঙ্গুলী, সংগঠক জাহিদ হোসেন খান প্রমুখ কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন থানা ও শাখার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম সর্বক্ষেত্রে শ্রমজীবী মানুষের জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা ও বাস্তবায়ন, সারাদেশে সর্বজনীন রেশন ব্যবস্থা ও ন্যায্যমূল্যের দোকান প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। তিনি কলকারখানাসহ সকল মজুরদের কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ, বিনামূল্যে চিকিৎসা বাসস্থান ও সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার প্রণয়নের দাবি জানান। একইসঙ্গে গ্রাম শহরের শ্রমজীবী মানুষের সন্তানদের লেখাপড়ার নিশ্চয়তা প্রদানের দাবিও জানান তিনি।

সিপিবি সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, প্রস্তাাবিত শ্রম আইনের অগণতান্ত্রিক ধারাসমূহ বাতিল করে শ্রমিক স্বার্থ ও উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করতে গণমুখী শ্রম আইন প্রণয়ন করতে হবে। মুদ্রাস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখেই প্রতিবছর শ্রমিক কর্মচারীদের মজুরি বৃদ্ধি, গ্রাচুইটি পাওয়ার নিশ্চয়তা বিধানের দাবি করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশের সংবিধানে শ্রমিক মেহনতী মানুষকে শোষণ থেকে মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু যে পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় দেশ চলছে তাতে দিন দিন শ্রমজীবী মানুষের ওপরে শোষণ-নির্যাতন বেড়েই চলছে। সম্প্রতি গার্মেন্টস শ্রমিকদের আন্দোলনে চারজন শ্রমিককে হত্যা করা হলো এখনো তার বিচার করা হয় নাই। শ্রমিকদের ন্যূনতম অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি অথচ ট্রেড ইউনিয়ন করার ক্ষেত্রে এবং কাজের ক্ষেত্রে নির্যাতন বন্ধ হয়নি।

সমাবেশে নেতারা আরও বলেন, শ্রমিক শ্রেণীর নিজস্ব দিবস মে দিবসকেও হাইজ্যাক করা হচ্ছে। মে দিবসের মর্মবাণীকে উপেক্ষা করে শ্রমিক-মালিক ঐক্যের নামে শ্রমিককে দিয়েই মালিকের শোষণ যন্ত্র অব্যাহত রাখা হচ্ছে। বক্তারা বলেন, এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। এই লক্ষ্য অর্জনে শ্রমিক মেহনতী মানুষকে নীতি-নিষ্ঠ রাজনৈতিক শক্তির পতাকাতলে সমবেত হওয়ার আহ্বান জানানো হয় সমাবেশ থেকে।

সমাবেশের শুরুতে গণসংগীত পরিবেশন করেন উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সদস্যরা। সমাবেশ শেষে লাল পতাকার এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি প্রেসক্লাব, তোপখানা মোড় পার্টি কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। মে দিবস উপলক্ষে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় এবং সারাদেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উদ্যোগে সভা সমাবেশ ও র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
 

Comments

The Daily Star  | English

Advisory council set to hold emergency meeting this evening

Sources from the CA office confirmed that the meeting will take place at the State Guest House, Jamuna

20m ago