আগামী কয়েক মাস বাংলাদেশের রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকবে: মুডিস

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চার দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার ঋণ কর্মসূচি চলমান রাখতে এই ইতিবাচক ধারা জরুরি।
রিজার্ভ
মুডিস মনে করে যে স্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে ঋণ সহায়তা পাচ্ছে। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বারবার ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি গত দুই বছর ধরে ডলারের মজুদ ক্রমাগত কমতে থাকা সত্ত্বেও আগামী কয়েক মাস বাংলাদেশের রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকবে বলে মার্কিন রেটিং এজেন্সি মুডিস পূর্বাভাস দিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির ভাষ্য, গত জানুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার পর ব্যবসায় অনিশ্চয়তা ধীরে ধীরে কমতে থাকার পাশাপাশি আমদানি বিধিনিষেধ চলমান থাকায় চলতি অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স ইতিবাচক হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ দেওয়া চলমান রাখায় রিজার্ভে এই ইতিবাচক দিক দেখা যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চার দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার ঋণ কর্মসূচি চলমান রাখতে এই ইতিবাচক ধারা জরুরি।

২০২২ সালের জুনের আগে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ৪০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এরপর থেকে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় কমতে থাকে। এ ছাড়াও, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় আমদানি খরচ বেড়ে যায়। ফলে রিজার্ভ কমে যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, গত ২১ মে রিজার্ভ ছিল ১৮ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার।

মুডিস বাংলাদেশের রেটিং নিয়ে পর্যায়ক্রমিক পর্যালোচনার পর প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, স্থিতিশীল দৃষ্টিভঙ্গিসহ প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের জন্য 'বি ওয়ান' রেটিং অপরিবর্তিত রেখেছে।

এতে আরও বলা হয়, 'এই স্থিতিশীল অবস্থার জন্য বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে ঋণ সহায়তা পাচ্ছে।'

মুডিস আশা করে যে, মহামারির আগের অবস্থার বিবেচনায় বাংলাদেশের আর্থিক পরিস্থিতি দুর্বল হলেও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ সহায়তা রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

এতে বলা হয়, পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের আর্থিক স্থিতিশীলতার পেছনে এই খাতের অবদান আছে।

দেশটির কম মাথাপিছু আয়, অবকাঠামো, মানবসম্পদ ও প্রতিযোগিতামূলক অর্থনীতির সীমাবদ্ধতা ও পোশাক খাতের ওপর ব্যাপক নির্ভরতা সত্ত্বেও এই স্থিতিশীলতা ভারসাম্যপূর্ণ।

মুডিস আরও বলছে, জোরালো প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা বাংলাদেশের ঋণকে ভারসাম্যে রেখেছে। রাজস্বের তুলনায় বাড়তি ঋণ ও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা দেশটির আর্থিক স্বস্তি কমিয়ে দিয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রতিযোগিতামূলক পোশাক শিল্প দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের জিডিপি, রপ্তানি ও আয়ে অবদান রাখবে। তবে পোশাকের বৈশ্বিক চাহিদা কমে যাওয়া ও আর্থিক হিসাবের ঘাটতি বাংলাদেশের অবস্থানকে দুর্বল করার পাশাপাশি রেটিংয়ের ওপর চাপ বাড়িয়েছে।

কম পরিমাণে রাজস্ব আদায়, সক্ষমতার তুলনায় সুদ মেটাতে বেশি খরচ ও তুলনামূলকভাবে ক্রমবর্ধমান সরকারি ঋণের কারণে বাংলাদেশের ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা কমে যাচ্ছে।

মুডিস বলেছে, 'এই পরিস্থিতি দুই থেকে তিন বছর আগের তুলনায় নাজুক থাকবে।'

এতে বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতির চাপ বেশি থাকবে, ক্রয় ক্ষমতা কমবে ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে সীমিত হবে।

এপ্রিলে ভোক্তা মূল্য সূচক বেড়েছে নয় দশমিক ৭৪ শতাংশ, যা গত এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত অর্থবছরে এই সূচক ছিল নয় দশমিক শূন্য দুই শতাংশ।

Comments

The Daily Star  | English

Police didn't follow int'l standards while using lethal weapons: IGP

Police failed to adhere to the standards in home, which they have maintained during their UN missions, Mainul Islam said

6h ago