রূপগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ তরুণ নিহত, আহত ১২

রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় এক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ইউপি সদস্যের সমর্থকদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন নারীসহ ১২ জন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকায় সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটে বলে জানান রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা।

পুলিশ জানায়, নিহত তরুণ মো. দ্বীন ইসলাম (২৩) নাওড়া এলাকার বিল্লাত হোসেনের ছেলে।

সংঘর্ষে আহতরা হলেন, নাওড়া এলাকার জাহিদ মিয়া, মো. সোহেল, শাহিন, জাহিদুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, রাজীব, হোসেন মিয়া, নাজমুল প্রধান, জেসমিন, ইভা, ওয়াসিম ও সাখাওয়াত। 

আহতরা রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

পুলিশ ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রূপগঞ্জে জমির ব্যবসা ও এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তার ভাই রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের সঙ্গে কায়েতপাড়ার সাবেক ইউপি সদস্য ও পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী মোশাররফ হোসেনের দীর্ঘদিনের বিরোধ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ও উভয়পক্ষের সংঘর্ষ হয়।

গত মঙ্গলবার মোশাররফ এক স্বজনের জানাজায় অংশ নিতে গেলে প্রতিপক্ষের হামলার মুখে এলাকা ছাড়েন। এ নিয়ে তিন দিন ধরে নাওড়া এলাকায় দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছিল এরই জেরে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়, পরে সন্ধ্যায় তারা সংঘর্ষে জড়ান বলে জানান স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে জানতে মোশাররফ হোসেনের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।

তবে, মোশাররফের ফুফাতো ভাই ও নিহত দ্বীন ইসলামের চাচা নাজমুল প্রধান বলেন, বিকেলে মিজানুর তার লোকজন নিয়ে মোশারফের বাড়িতে হামলা করেন। এর প্রতিবাদ জানালে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

'মিজানুর ও তার লোকজনের ছোঁড়া গুলিতে দ্বীন ইসলাম আহত হলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকলেও হামলার ঘটনায় তারা নির্বিকার ছিল। মিজান নিজে আমার ভাতিজাকে (দ্বীন ইসলাম) গুলি করছে', অভিযোগ করেন তিনি।

তবে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'আমি এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। শুনেছি, গ্রামবাসীর ওপর মোশাররফ ও তার ভাইয়ের লোকজন হামলা চালালে গ্রামবাসীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়।'

ওসি দীপক বলেন, 'ঘটনার সময় সেখানে নাওড়া পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ছিলেন। তারা শুরুতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে এবং পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশও সেখানে পৌঁছায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উভয়পক্ষকে ধাওয়া দেয় এবং অন্তত ১৩ রাউন্ড শর্টগানের ফাঁকা গুলি ছোড়ে৷ পরে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পুলিশ নির্বিকার থাকার অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা।'

ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন আছে, তবে রাত ৯টা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

ওসি বলেন, এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Comments

The Daily Star  | English

How the US has shifted military jets and ships in the Middle East

As America’s national security leaders discuss the next steps, the Pentagon has moved to ensure that its troops and bases in the region are protected.

51m ago