অভিযোগ সঠিকভাবে গ্রহণ করা হয়নি, হাইকোর্টে যাব: ড. ইউনূসের আইনজীবী

আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন। ছবি: টিভি থেকে নেওয়া

অর্থ আত্মসাতের মামলায় নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তার আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন।

আজ বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ প্রাঙ্গণে তিনি এ কথা জানান।

আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, অভিযোগের বিষয় হচ্ছে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় উনি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অথচ টাকা চলে গেছে সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টে। ডব্লিউপিপিএফে (ওয়ার্কার্সার প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড) শ্রমিকের পাঁচ শতাংশ পাওনার সিগনেটরি ড. ইউনূস না এবং গ্রামীণ টেলিকমও না।

তিনি বলেন, সেখান থেকে অর্থ তারা ডিস্ট্রিবিউশন করেছে। এখানে বলছে, উনি (ড. ইউনূস) সহযোগিতা করেছেন। রেজ্যুলেশন নিয়েছেন। এইভাবে মানি লন্ডারিংয়ের জন্য ওনাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে বেআইনি, আইনের সঙ্গে পড়ে না। কারণ অভিযোগ করতে হলে আমার কাছে কেউ আমানত রাখতে হবে। গ্রামীণ টেলিকম বা ড. ইউনূসের কাছে কেউ আমানত রাখে নাই যে আমানত তিনি খেয়ানত করেছেন। তাহলে এখানে মামলা নাই! অর্থ আত্মসাতের কোনো বিষয় নাই।

এখানে দণ্ডবিধির ৪২০ এর কোনো বিষয় নেই মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, 'কারণ উনি প্ররোচিত করেননি যে টাকা দিয়ে দেওয়া হোক। শ্রমিকের টাকা শ্রমিক নিয়েছে।'

'আরেকটি প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে, আইনজীবী ফি এক কোটি টাকা হবে, কেন ২৬ কোটি টাকা হলো? এখানে সরকার কিন্তু একটা ভূমিকা পালন করেছে। এই সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট হওয়ার আগে হাইকোর্টে যে মামলা করা হয়েছে, অ্যাটর্নি জেনারেল দাঁড়িয়েছেন। অথচ তিনি কিন্তু দাঁড়াতে পারেন না শ্রমিকের পক্ষে, কারণ শ্রম অধিদপ্তর সেখানে বিবাদী ছিল। সরকারের বিরুদ্ধে অ্যাটর্নি জেনারেল দাঁড়াতে পারেন না। সরকার এই মামলা গ্রহণ করিয়ে, তারপর সেটেলমেন্ট করিয়ে, চাপ দিয়ে, তাদের প্রাপ্য হয়তো হয় ২৫ থেকে ৫০ লাখ টাকা।'

এই আইনজীবী বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের নিজস্ব একটি শেয়ার গ্রামীণ ফোনে আছে দীর্ঘ দিন যাবৎ যেটাতে শ্রমিকের কোনো প্রাপ্য নাই। সরকার সেখানে বাধ্য করেছে গ্রামীণ ফোনের টাকাসহ ১০ বছরের হিসাব দেওয়ার জন্য। তাই এটা হয়েছে ৪৩৭ কোটি টাকা। আইনজীবীর ফি শ্রমিকরা নির্ধারণ করেছিলেন ছয় শতাংশ। যেহেতু ওই টাকা বেড়ে গেছে। এটাও কিন্তু সরকারের একটা চক্রান্ত এবং সরকার অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে হাইকোর্টে এই মামলাটা দায়ের করে এই অভিযোগ আনার জন্য।

'আগে অভিযোগ করেছে শ্রম আদালতে—আপনি কেন শ্রমিকের প্রাপ্য দিলেন না? আর প্রাপ্য দেওয়ার পর বলছে, আপনি তাদের প্রাপ্য দিয়েছেন, কেন দিলেন? কেন নোগোসিয়েশন করলেন? এটাই হলো অপরাধ।'

আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা ন্যায়বিচার পাইনি, উচ্চ আদালতে যাব।

তিনি অভিযোগ করেন, সরকারপক্ষ বারবার চেষ্টা করছে মামলাটি অতি দ্রুত শেষ করার।

'আমরা বলেছি, যেহেতু এটা দ্রুত বিচার আইনের মামলা না, ন্যায়বিচারের স্বার্থে অন্যান্য মামলায় যেভাবে তারিখ নির্ধারণ করা হয়, সেখানে তারিখ দেওয়ার অনুরোধ করেছি। আমরা বলেছি, এটাকে যেন বিশেষ মামলা পরিণত করা না হয়।'

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই অভিযোগ গঠনের আদেশে আমরা হাইকোর্টে যাব। কারণ ওনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিকভাবে গ্রহণ করা হয়নি। এই প্রাথমিক তথ্য বিবরণী এবং অভিযোগপত্র যদি আদালত সত্য বলেও মনে করে; দণ্ডবিধির ধারাগুলো ড. ইউনূসসহ ১৪ জনকে কোনোভাবেই দায়ী করে না। তাদের দোষী সাব্যস্ত করে না।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda Zia returns home from London

Tarique's wife Zubaida Rahman and his late brother Arafat Rahman Koko's wife Syeda Sharmila Rahman accompanied her

1h ago