নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ

গুনে গুনে ঘুষ নেন ২ প্রকৌশলী

ঘুষের টাকা গুনে নিচ্ছেন দুই প্রকৌশলীর একজন। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ কার্যালয়ে এক ঠিকাদারের কাছ থেকে প্রকাশ্যে দুই প্রকৌশলীর ঘুষ নেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওতে থাকা দুই প্রকৌশলীর একজন জেলা পরিষদের বর্তমান উপসহকারী প্রকৌশলী কাঞ্চন কুমার পালিত এবং অপরজন বদলি হওয়া সাবেক সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল কুদ্দুস। জেলা পরিষদে সহকারী প্রকৌশলীর পদটি গত কয়েক মাস ধরে খালি থাকায় কাঞ্চন কুমার এ পদেও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন।

মোবাইল ফোনে ধারণ করা পাঁচ মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ কার্যালয়ে জহির নামে এক ঠিকাদারের কাছ থেকে ঘুষের টাকা নিতে দর কষাকষি চলছে। দুই প্রকৌশলী দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। জহির এক লাখ ত্রিশ হাজার টাকা দিতে রাজি হন। পরে জহির পকেট থেকে টাকা বের করে গুনে প্রকৌশলীদের হাতে দেন।

ভিডিওতে প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের আলাপে শোনা যায়, এই এক লাখ ত্রিশ হাজার টাকা ভাগ করে নেবেন কাঞ্চন ও কুদ্দুস। ঘুষের আরও কিছু টাকা জেলা পরিষদের অ্যাকাউন্ট অফিসার গোপাল বোসকেও দিতে হবে বলতে শোনা যায় জহিরকে। 'স্যারও পাবেন' বলে আলাপচারিতায় উল্লেখ করা হয়। তবে এ স্যার কাকে সম্বোধন করা হয়েছে, তার নাম কেউ সেসময় বলেননি।

ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, জহির নিজেই তার মোবাইলে এটি ধারণ করেছেন।

জেলা পরিষদের এক সূত্রে জানা গেছে, জেলা পরিষদের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার মো. জহির। তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীলের ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচিত। জেলা পরিষদের অর্থায়নে একটি কাজ পেতে ঘুষ দেওয়ার এ ঘটনা ঈদুল আজহার কয়েকদিন আগের। তবে বৃহস্পতিবার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে জেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চন্দন শীল দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ভিডিওটি তিনি দেখেছেন। ভিডিওতে থাকা দুই প্রকৌশলীকে স্পষ্ট চেনা গেছে।

তিনি বলেন, 'ভিডিওতে থাকা সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল কুদ্দুস বেশ কিছুদিন আগেই বদলি হয়ে গেছেন। আর উপসহকারী প্রকৌশলী কাঞ্চন কুমার পালিতের বিরুদ্ধে সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের সময়কাল থেকেই নানা অনিয়মের অভিযোগ আমার কাছে এসেছে।'

ঠিকাদার জহিরের বিষয়ে চন্দন শীল বলেন, 'আমার সঙ্গেই জহির থাকতো। আমার সঙ্গেই পরিষদে আসা-যাওয়া করতো। কিন্তু ও একটা টাউট, আমার নাম ভাঙিয়ে নানা অপকর্ম করতো। পরে আমি জানতে পেরে পরিষদে ওর ঢোকা বন্ধ করেছি। দেখা যাচ্ছে, জহির নিজেই ভিডিওটি করছে। কেন করছে জানার চেষ্টা করব। এই কার্যালয়ে আমি কারও কোনো অনিয়ম, দুর্নীতি বা অপকর্ম সহ্য করব না।'

এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে উল্লেখ করে ঘুষ গ্রহণের ভিডিও সরকারের উচ্চ পর্যায়েও পাঠাবেন বলে জানান তিনি।

ঘুষ গ্রহণের বিষয়ে জানতে প্রকৌশলী কাঞ্চন কুমার পালিতের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh, Japan for concluding EPA soon to boost economic, trade ties

Japanese PM Ishiba described Bangladesh as a long-standing friend and said that Japan would stand by Bangladesh in its endeavour for a democratic transition

3h ago