ঢাকায় ফিরতেও যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া

গাবতলী বাস টার্মিনাল। স্টার ফাইল ফটো

ঈদুল আজহা উদযাপন শেষে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষের ঢাকায় ফেরার শেষ ধাক্কা চলছে। তবে এবারের ফেরার অভিজ্ঞতা বেশ খারাপ বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।

শুক্রবার রাতে রাজধানীর গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে আগত বেশ কিছু যাত্রীর সঙ্গে দ্য ডেইলি স্টারের কথা হয়। তারা জানান, পথে গাড়ি পেতে ভোগান্তি ও বাড়তি ভাড়ার কারণে এবার তারা বেজায় ক্ষুব্ধ। 

রাত সাড়ে ১২টার দিকে একটি বাস থেকে পরিবারের তিন সদস্যকে নিয়ে নামেন বগুড়ার তাসলিমা বেগম। ঢাকায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে কর্মরত এই নারী জানান, এবারের ঈদযাত্রায় তাদের কাছ থেকে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হয়েছে।

তাসলিমা জানান, স্বাভাবিক সময়ে ভাড়া ৫০০-৬০০ টাকা, এবার দিতে হয়েছে ১১০০ টাকা। গত শুক্রবার বগুড়া গিয়েছিলেন। সেসময়ও ১১০০ টাকা ভাড়া গুনতে হয়।

'ঈদ এলেই গাড়ি ভাড়া নৈরাজ্য চলে' বলে জানান তিনি। প্রকাশ করেন ক্ষোভ। বলেন, 'এসব দেখার কেউ নেই।'

রাজশাহী থেকে স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে ফিরেছেন কোরবান আলী। পথে নানা ভোগান্তিতে ফেরার অভিজ্ঞতা ততটা সুখকর নয় বলে জানান তিনি।

বলেন, 'ভালো কোনো বাস পাইনি। শেষে নিউ হিমাচল নামে একটি লোকাল বাসে চড়ি। যেখানে ভালো বাসের ভাড়াই ৮২০ টাকা, সেখানে এই লোকাল বাসে নিয়েছে ১৩০০ টাকা। তাও আবার আমাদের নামিয়ে দিয়েছে আশুলিয়ায়। গাবতলীতে আসেইনি।' 

আশুলিয়া থেকে সেই বাস আবার নতুন ট্রিপ আনতে ঘুরে যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, 'এবার বাড়ি যাওয়ার সময়ও ১১০০ টাকা ভাড়া গুনেছি।'

মাজাররোড এলাকার ব্যবসায়ী জাহিদ। ফিরেছেন খুলনা থেকে। জানান, পথে গাড়ির সংখ্যা কম, যাত্রীর চাপ বেশি। প্রায় সব গাড়ির ভাড়াও বেশি।

৬০০ টাকার ভাড়া ৮০০ টাকা দিয়ে এসেছেন বলে জানান তিনি।

মাগুরা থেকে ফিরেছেন রাজধানীর একটি কলেজের শিক্ষক সজিব। কিংফিশার পরিবহনের বাসে তার কাছ থেকে ভাড়া আদায় করা হয়েছে ৭৫০ টাকা। তবে বছরের অন্যান্য সময় ৫৫০ টাকা ভাড়ায় বাড়ি যাওয়া-আসা করেন বলে জানান তিনি।

যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেল, ঈদের আগে ও পরের কিছুদিন নামি-বেনামি প্রায় সব বাসেই কম-বেশি বাড়তি ভাড়া আদায় করা হয়।

তবে হানিফ, শ্যামলীসহ আরও কিছু বড় পরিবহনের কাউন্টারে গিয়ে বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। এসব কাউন্টার থেকে জানানো হয়, তাদের প্রায় ৮০ শতাংশ টিকিট আগেই বিক্রি এবং তারা সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাড়তি ভাড়া আদায় করে না।

সাতক্ষীরা থেকে আসা একটি বাসের সুপারভাইজারকে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে নাম প্রকাশ না করে তিনি জানান, ঈদের সময় কিছুটা বাড়তি ভাড়া আদায় করা হয়। অন্যান্য সময় স্বাভাবিক ভাড়াই থাকে।

তিনি বলেন, 'মালিকেরা পরিবহন শ্রমিকদের বেতনের বাইরে কোনো টাকা দেয় না। তাই শ্রমিকদের বোনাসসহ আনুষঙ্গিক খরচ দিতে এই বাড়তি ভাড়া আদায় করা হয়।'

Comments

The Daily Star  | English

Familiar Dhaka in an unfamiliar mood

The familiar city now appears in an unfamiliar form—no traffic jams, no honking, no packed footpaths

2h ago