শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের জায়গা থেকে আন্দোলন করছেন, আমরা ইন্ধন দেবো কেন: মির্জা ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর | স্টার ফাইল ফটো

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে বিএনপি ইন্ধন দিচ্ছে বলে ক্ষমতাসীনদের তোলা অভিযোগ নাকচ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ সোমবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সরকারি দলের মন্ত্রীদের অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি এই মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'আমাদের কখনই এই ধরনের আন্দোলনে ইন্ধন দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এই সব আন্দোলন তাদের নিজস্ব, এটা তাদের প্রফেশনাল জায়গা থেকে… বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা করছেন, ছাত্ররা করছেন, ছাত্রীরা করছেন। আমরা এখানে ইন্ধন দিতে যাব কেন? প্রশ্নই উঠে না।'

এইসব আন্দোলনেকে বিএনপি 'যৌক্তিক' বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'তবে যেটা সত্যি সেটা সত্যি বলব, যেটা যৌক্তিক সেটা যৌক্তিক বলব... এটা আমরা সব সময় বলছি। দেশের মানুষের কাছে তাদের দাবিটা অন্তত তাদের স্বার্থে যদি তারা যে এখনো ঐক্যবদ্ধ হয়, এটা আমাদেরকে বরঞ্চ অনুপ্রাণিত করছে।'

মির্জা ফখরুল বলেন, 'এটাকে আমরা দুইভাবে দেখি। একটা হচ্ছে, দেশে বিপুল সমস্যা আছে, সেটাকে ডায়ভার্ট করার জন্যে আন্দোলন তৈরি করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, কোটাবিরোধী ছাত্রদের এই দাবিকে আমরা সমর্থন করি, কারণ এটা যৌক্তিক দাবি। এটাকে অযৌক্তিক বলার কোনো কারণ দেখি না।'

'৫০ বছর পরেও ৫৬ শতাংশ আপনি কোটা দিয়ে রাখবেন... এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এখানে যেটা হচ্ছে মেধার বিকাশ হচ্ছে না, মেধাবীদের অ্যাডমিনিস্ট্রেশনসহ বিভিন্ন জায়গাগুলোতে নিতে পারছেন না। একটা বড় ক্ষতি হয়ে গেছে।'

শিক্ষকদের আন্দোলন যুক্তিসঙ্গত দাবি উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'শিক্ষকদের দাবি যৌক্তিক।'

'কারণ হচ্ছে সরকারের আর্থিকখাতে যে দুরাবস্থা তাদের টাকা-পয়সা সব শেষ হয়ে গেছে। এখন বিভিন্ন জায়গা থেকে মানি হয়ে আসছে... বিভিন্ন অটোনোমাস বডি আছে, এদের মধ্যে অনেকগুলো বডি আছে যাদের কাছে বহু সারপ্লাস মানি ছিলে, সেগুলো নিয়ে নিয়েছে। কোথাও কিছু বাকি রাখছে না... সব নিয়ে ফেলছে।'

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'এটা বাস্তব কথা। আমরা বারবার বলছি, এই সরকারের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, সবাই দুর্নীতিবাজ। এমনকি আপনার যারা প্ল্যানিং করছে, অর্থনৈতিক পরিকল্পনা করছে, বাজেট তৈরি করছে সবক্ষেত্রে দেখবেন দুর্নীতির ব্যাপারটা প্রধান। এত বেশি দুর্নীতি করেছে যে এখন ডেথ ট্র্যাপে পড়ে যাচ্ছে আরকি …ঋণের যে ট্র্যাপ, সেই ফাঁদে পড়ে যাচ্ছে। সেই ফাঁদে পড়ে যাওয়ার কারণে এখন তারা চতুর্দিক থেকে একটা ঋণ নিয়ে আরেকটা ঋণ শোধ করা, আরেকটা ঋণ নিয়ে আরেকটা ঋণ শোধ করা... এভাবে চলছে।'

'একটা ঋণ নিয়ে আরেক ঋণ শোধ, এটা কারা করে? দেখবেন যারা সব জায়গাতে ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে, ঠিকমতো চালাতে পারছে না, তাদেরকে কিন্তু এই কাজটা করতে হয়।'

মির্জা ফখরুল বলেন, 'মারাত্মক... ভুল তথ্য তারা দিচ্ছে। আজকের পত্রিকায় দেখলাম যে, রপ্তানি আয় ৬৪ বিলিয়ন বেশি দেখিয়েছে। ইট ইজ নট ট্রু। ওদের হিসাবেই এসব ভুল বেরুচ্ছে।'

দুপুরে গুলশানের কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নিরব, দক্ষিণের রফিকুল আলম মজনু এবং উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।

পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'নবগঠিত মহানগর কমিটি দেশনেত্রীর চলমান আন্দোলনসহ সব আন্দোলনে অত্যন্ত ভালো ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশা করি। কারণ যে নেতৃত্বটা এসেছে, আমি মনে করি একটি ঢাকা মহানগরীর বিএনপি জন্য যে ভালো নেতৃত্ব এসেছে।'

রোববার বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণসহ বরিশাল, চট্টগ্রাম মহানগরের নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Disrupting office work: Govt employees can be punished within 8 days

The interim government has moved to amend the Government Service Act-2018 to allow swift disciplinary action against its employees who will be found guilty of disrupting official activities.

7h ago