ঋণখেলাপিদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের উদারনীতি

সংস্কার কমিশন
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

ঋণ থেকে প্রস্থান-সংক্রান্ত নীতিমালার (এক্সিট পলিসি) সর্বশেষ সংস্করণ ঘোষণা করেছে করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যেখানে ঋণখেলাপিসহ ঋণগ্রহীতারা ঋণস্থিতির ন্যূনতম ১০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট বা অগ্রিম দিয়ে বিনা সুদে তিন বছরের মধ্যে ঋণ হিসাব বন্ধের সুযোগ পাবেন।

সংসদে যখন সুদ মওকুফের সুবিধা ব্যাপকভাবে সমালোচিত হচ্ছে, তখন এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।

এদিকে এ বছরের মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ রেকর্ড ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এই খেলাপি ঋণের পরিমাণ মোট ঋণের ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। তাই এক্সিট পলিসি পরিস্থিতিকে খেলাপিদের জন্য আরও অনুকূল করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিভিন্ন কারণে গ্রাহকের আর্থিক অবস্থায় বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তাই তাদের কাছ থেকে ঋণ আদায়ে একটি এক্সিট পলিসি প্রয়োজন।

খেলাপি ঋণ, আদায়ের সম্ভাবনা কম এমন ঋণ এবং বিলুপ্ত কোম্পানির নেওয়া ঋণের ক্ষেত্রে এক্সিট পলিসি প্রযোজ্য হবে।

এজন্য ঋণগ্রহীতাকে ঋণস্থিতির ন্যূনতম ১০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিতে হবে, তাহলে তারা এই নীতিমালার অধীনে সুদ মওকুফ সুবিধা পাবেন।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নোটিশে বলা হয়েছে, জালিয়াতি ও ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের ঋণের ক্ষেত্রে সুদ মওকুফ সুবিধার মেয়াদ বাড়ানো যাবে না।

গ্রাহকরা এক কিস্তি বা একাধিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন, তবে ঋণ পরিশোধের সর্বোচ্চ মেয়াদ হবে দুই বছর। কিন্তু ব্যাংকগুলো এর মেয়াদ আরও এক বছর বাড়াতে পারবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

এ সুবিধার আওতায় ঋণগ্রহীতারা ঋণের পুরো অর্থ পরিশোধ না করা পর্যন্ত নতুন ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবেন না।

কিন্তু এ সুবিধা ঋণ পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠন হিসেবে বিবেচিত হবে না বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ সমন্বয়ের আগে ঋণের বিপরীতে যথাযথ প্রভিশন নির্ধারণ ও জামানত গ্রহণের জন্য ব্যাংকগুলোকে অনুরোধ জানিয়েছে।

সুবিধা পাওয়ার পর ঋণগ্রহীতারা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ব্যাংকগুলোকে ঋণ আদায়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

এর আগে, দেশের ব্যাংকিং খাতে উচ্চ খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে ২০১৯ সালের মে মাসে ঋণখেলাপিদের জন্য এককালীন এক্সিট পলিসি চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তখন খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক মনজুর হোসেন বলেন, 'এক্সিট পলিসির বিষয়টি ব্যাংকগুলোর বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত ছিল।'

তিনি আরও বলেন, 'এই নীতি ব্যাংকগুলোর মুনাফায় প্রভাব ফেলবে, অন্যদিকে ঋণখেলাপিরা এ সুবিধা থেকে প্রলুব্ধ হবে।'

একই কথা বলেছেন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন। তিনি মনে করেন, এ সুবিধার কারণে ঋণ পরিশোধ না করতে খেলাপিদের উৎসাহিত করা হতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh lost over Tk 226,000cr for tax evasion: CPD

CPD estimated that around 50 percent of this amount has been lost to corporate tax evasion.

2h ago