খেলাপি বেক্সিমকোকে আরও ঋণ দেবে জনতা ব্যাংক

জনতা ব্যাংক, ঋণখেলাপি, বেক্সিমকো গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, অ্যাননটেক্স গ্রুপ, ক্রিসেন্ট গ্রুপ,

রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংককে ব্যাংক কোম্পানি আইন-১৯৯১ থেকে আংশিকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ফলে, ব্যাংকটি ঋণখেলাপি বেক্সিমকো গ্রুপকে আরও ঋণ দিতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী বলেন, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকদের বেতন দিতে এই ঋণের প্রয়োজন।

গত ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রজ্ঞাপনে জানায়, ব্যাংক আইনের ২৬ ও ২৭ ধারার কিছু অংশ থেকে জনতা ব্যাংককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, জনতা ব্যাংকের সবচেয়ে বড় ঋণগ্রহীতা বেক্সিমকো। তবে ব্যবসায়ী গ্রুপটি ঋণখেলাপি হয়ে পড়েছে এবং তারা জনতার মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি ঋণ নিয়েছে।

বেক্সিমকো এ পর্যন্ত জনতা ব্যাংক থেকে ২৩ হাজার ৩২৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে এবং বেশিরভাগ অর্থ পরিশোধ করেনি।

নথির তথ্য অনুযায়ী, বেক্সিমকো যে পরিমাণ ঋণ নিয়েছে তা ব্যাংকটির মূলধনের ৪১০ শতাংশ।

ব্যবসায়ী গ্রুপটির ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান বর্তমানে কারাগারে আছেন। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ছিলেন।

জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মজিবুর রহমান বলেন, তার ব্যাংক কোম্পানিটিকে ১৮০ কোটি টাকা ঋণ দেবে।

গত ৫ ডিসেম্বর জনতা ব্যাংক বেক্সিমকোকে ঋণ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিল।

জনতা উল্লেখ করেছিল, জনতার বিতরণ করা ঋণের ৬১ শতাংশ খেলাপি হয়েছে, তাই ব্যাংকটি তারল্য সংকটে ভুগছে।

জনতার বিতরণ করা মোট ঋণের ৪৫ শতাংশের বেশি নিয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, অ্যাননটেক্স গ্রুপ, ক্রিসেন্ট গ্রুপ ও থার্মেক্স গ্রুপ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৬০ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা, যা ব্যাংক খাতের মধ্যে সর্বোচ্চ।

এই অর্থ জনতা ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের ৬১ শতাংশ। এছাড়া ব্যাংক খাতের মোট দুই লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা খেলাপি ঋণের ২১ দশমিক ২২ শতাংশ।

সংকট কাটিয়ে উঠতে, তারল্য বজায় রাখতে ও আমানতকারীদের আস্থা ফেরাতে সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ২০ হাজার কোটি টাকা চেয়েছে জনতা ব্যাংকটি।

গত ২৮ নভেম্বর শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে এক বৈঠকে বেক্সিমকোকে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

Comments