কিস্তি দিতে দেরি হলে জরিমানা করবে না ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, বাংলাদেশের কোটিপতি,

দেশব্যাপী কারফিউ ও ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় অনেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ক্রেডিট কার্ডের বিল ও ঋণের কিস্তি দিতে পারেননি। তবে এই বিলম্বের জন্য গ্রাহকের কাছ থেকে দণ্ডসুদ বা জরিমানা আদায় না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিছু ব্যাংক।

আগামী দু-একদিনের মধ্যে আরও কিছু ব্যাংক একই সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানা গেছে।

এদিকে আজ বুধবার জরিমানা বা দণ্ডসুদ না করার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ইতোমধ্যে চারটি বেসরকারি ব্যাংক যথাক্রমে- ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া বিদেশি ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশও একই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।

জানতে চাইলে যমুনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মির্জা ইলিয়াছ উদ্দিন আহম্মেদ দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন, তারা ইতোমধ্যে তাদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছেন, যেন এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।

ব্যাংকখাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসকে (বিএবি) এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।

একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে ব্র্যাক ব্যাংক বলেছে, সাধারণ ছুটি ও ইন্টারনেট বিভ্রাটের প্রেক্ষাপটে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, কোনো বিলম্ব ফি বা সুদ পরিশোধ করতে হবে না।

ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, 'গ্রাহকরা অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবহার করতে না পারায় আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'

তিনি জানান, এটিএম বুথে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ রাখার বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করেছি। তবে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় আমদানি-রপ্তানি বিষয়ক লেনদেন, প্রবাসী আয় সংগ্রহ ও বিদেশি লেনদেন স্থগিত ছিল।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান।

পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, তারা সাধারণত এ ধরনের সুদ বা ফি আরোপ করেন না। এবারও করা হয়নি। কারণ এটা নৈতিক হবে না।

তিনি মনে করেন, ইন্টারনেট বন্ধ থাকার বিষয়টি ব্যাংকের মুনাফার পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতেও বিরূপ প্রভাব ফেলবে।

এক বিজ্ঞপ্তিতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ জানিয়েছে, ক্রেডিট কার্ড বা ঋণ পরিশোধে বিলম্বের জন্য তারা কোনো অতিরিক্ত ফি, চার্জ বা সুদ আরোপ করবে না। তাদের এটিএম নেটওয়ার্ক সচল ছিল বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংকগুলোর জন্য ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সঙ্গে কথা বলেছেন।

যমুনা ব্যাংকের মির্জা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে পুনরায় সচল করতে সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ইতোমধ্যে কিছু কিছু এলাকায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হয়েছে।

সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, 'আমরা জানতে পেরেছি যত দ্রুত সম্ভব ব্যাংকগুলোর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পুনরায় চালু করতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিটিআরসির সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে।'

তিনি বলেন, প্রতিদিন প্রায় ৮০ মিলিয়ন থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স বাংলাদেশে পাঠানো হয়, যা ইন্টারনেট বন্ধের কারণে ব্যাহত হয়েছে।

ইন্টারনেট বন্ধ ও দেশব্যাপী কারফিউয়ের মধ্যে গত ১৮ জুলাই থেকে মানুষ অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবহার করতে পারেনি। এসময় অনেক এটিএম বুথ বন্ধ রাখা হয়, কিছু কিছু বুথে নগদ টাকা শেষ হয়ে যায়।

Comments

The Daily Star  | English

Patients suffer as national eye hospital remains closed for 4th day

The 250-bed hospital remained non-operational following a tripartite clash on Wednesday

44m ago