দেশের আনাচে-কানাচে খুঁজে অপরাধীদের বের করে বিচারের মুখোমুখি করুন: প্রধানমন্ত্রী

রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন পরিদর্শন শেষে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত ও শিবির দেশের উন্নয়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করার পাশাপাশি বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে দেশব্যাপী তাণ্ডব চালিয়েছে।

তিনি এই ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে সহায়তা করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

মেট্রোরেল, বিটিভিসহ বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংসের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'যারা এসবের সঙ্গে জড়িত, সারা বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে যে যেখানে আছে তাদের খুঁজে বের করুন। তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য সহযোগিতা করুন। আমি দেশবাসীর কাছে এই আহ্বান জানাচ্ছি।'

প্রধানমন্ত্রী আজ শুক্রবার সকালে গত ১৮ জুলাই কোটা বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে চালানো ধ্বংসযজ্ঞ পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন।

১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর সরকারে এসে এবং দ্বিতীয় মেয়াদে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর থেকে তার সরকার বিটিভির উন্নয়ন ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সজ্জিত করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'আজ এত বছর পর এসে দেখা গেল সেই ৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর যে নারকীয় তাণ্ডব তারই যেন একটা বীভৎস রূপ বাংলার মানুষ দেখছে।'

প্রধানমন্ত্রী ২০১৩ সালে বিভিন্ন যানবাহন ও সরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, 'এবার কোটা সংস্কার আন্দোলনকে পুঁজি করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হলো।'

তিনি বলেন, 'তবে, এবারের আগুন লাগানোর ধরন আগেরগুলোর তুলনায় আলাদা। তারা এবার আগুন লাগাতে গান পাউডার ব্যবহার করেছে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।'

শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কিন্তু টেলিভিশনের ওপর হাত দেয়নি বা কেউই কখনো দেয়নি। কিন্তু আজ এই টেলিভিশন সেন্টারকে যারা এভাবে পোড়ালো, একটা কিছু নেই যে তাদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। তাহলে এরা কারা? এরা কি এদেশেরই মানুষ? এদের কি এ দেশেই জন্ম? একটা দেশকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার চিন্তা নিয়েই যেন তাদের এই আক্রমণ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেল ছিল সারাবিশ্বের প্রতিটি বাঙালির কাছে একটা সম্পদ, সেটাকে ধ্বংস করল। যার মাধ্যমে মানুষ অল্প সময়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে পারত। আজ সেটা বন্ধ। আবার সেই ট্রাফিক জ্যাম, আবার সেই পূর্বের অবস্থায় মানুষকে ফেলে দিল। আর এই টেলিভিশন সেন্টারে তারা যেভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, যেসব জিনিস মানুষের সেবা করে মানুষের জন্য কাজ করে সেই জায়গাগুলোতেই আঘাত।

তিনি বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতেও আগুন দিয়ে পোড়ালো। গাড়িগুলো, এমনকি জাপান থেকে আনা অত্যাধুনিক সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িগুলো পুড়িয়েছে, পানি শোধনাগারে হামলা করতে গেছে, পয়ঃশোধনাগারে হামলা—এটা কী হচ্ছে? কী তাদের মানসিকতা?

শেখ হাসিনা বলেন, আমি তাই দেশবাসীকে বলব এই ঢাকাবাসীকেই বলব, আজ আপনাদের এই দুর্ভোগ, আমি লাঘব করে দিয়েছিলাম। কিন্তু যারা এটা ধ্বংস করল আর যাদের জন্য এই দুর্ভোগ আর যাদের জন্য আজ বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে আমি তাদের বিচারের ভার এদেশের জনগণের ওপরই দিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, যারা এদেশের মানুষের রুটি-রুজির ওপর হাত দিয়েছে, রুটি-রুজির পথ বন্ধ করে দিয়েছে, তাদের বিচার জনগণকেই করতে হবে। কারণ, এদেশের জনগণই একমাত্র শক্তি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বিভ্রান্তি ছড়িয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে কাউকে যেন বিভ্রান্ত করতে না পারে। আসল সত্যটা জানুন। যারা এসবের সাথে জড়িত সারা বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে যে যেখানে আছে তাদের খুঁজে বের করুন। তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য সহযোগিতা করুন। দেশবাসীর কাছে আমি সেই আহ্বানই জানাই।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দেশ আমরা অনেক কষ্ট করে পাকিস্তানিদের কাছ থেকে স্বাধীন করেছি। আজ বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। সেই মর্যাদাকে ধ্বংস করার জন্যই এই ধ্বংসযজ্ঞ।

শেখ হাসিনা বিটিভির ধ্বংসযজ্ঞ আর আগুনে পোড়া অবস্থা দেখে স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, আজ অতীতের কথা মনে পড়ে আমি কতবার এখানে এসেছি। প্রত্যেক নির্বাচনের আগে এখানে ভাষণ দিতে এসেছি। নানা অনুষ্ঠানে এসেছি। আজ যে ধ্বংসযজ্ঞ দেখলাম এরপর এটা আবার কবে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা যাবে, জানি না।

তিনি বিটিভির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আপনারা জীবনের ঝুঁকি নিয়েও অনেক চেষ্টা করেছেন। এই সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে পার পাওয়া অত্যন্ত কষ্টকর ছিল। তবুও আপনারা এই জাতীয় সম্পদকে রক্ষার চেষ্টা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী এই সময় অত্যন্ত আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, 'এগুলো দেখে আমি আসলে আর কথা বলতে পারছি না। এক একটা জিনিস যখন গড়ে তুলতে অনেক কষ্ট করতে হয়।'

তিনি বলেন, দেশের জনগণের উন্নয়নের জন্য দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করি। সেটা আমার দেশের মানুষেরই জন্য। একটা জিনিস এমনভাবে তৈরি করার চেষ্টা করি যাতে এগুলো শুধু দেশে নয়, বিদেশিদের কাছেও দৃষ্টিনন্দন হয়। আমরা দেশের যে উন্নতি করছি তার প্রতীক হিসেবে ব্যবহার হবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে সেই জায়গাগুলো একে একে ধ্বংস করা হচ্ছে। এত দিনের কষ্টের ফসল সব শেষ করে দিতে চাচ্ছে। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কষ্টের। দেশবাসীর কাছে এর বিচার চাই, আমি তাদের সহযোগিতা চাই।

প্রধানমন্ত্রী আজ সকাল ৯টা ১৩ মিনিটের দিকে বিটিভি ভবনে প্রবেশ করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত সব বিভাগ পরিদর্শন করেন। বিটিভি ভবনে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ প্রত্যক্ষ করে প্রধানমন্ত্রীকে হতাশ ও অসন্তুষ্ট দেখা গেছে।

বিটিভি ভবনে ধ্বংসযজ্ঞ দেখে কর্মকর্তারা তাদের চোখের পানি ধরে রাখার চেষ্টা করার সময় বাতাস ভারী হয়ে উঠলে তাকেও অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়তে দেখা যায়। বিটিভির সদরদপ্তর ও ভবনে ভাঙচুরের একটি ভিডিও চিত্রও প্রধানমন্ত্রীকে দেখানো হয়।

বিটিভির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হামলায় বিটিভির বিভিন্ন অবকাঠামো, সম্প্রচার সরঞ্জাম, নকশা বিভাগ, অফিস ভবন এবং বিভিন্ন কক্ষ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। ১৯৬৪ সাল থেকে সংরক্ষিত অমূল্য প্রাচীন জিনিস দিয়ে সজ্জিত টেলিভিশন জাদুঘর এবং মুজিব কর্নার, মুক্তিযুদ্ধের স্মারক, প্রায় ৪০টি কম্পিউটার, ১০০টি টেলিভিশন সেট এবং কম্পিউটার ল্যাবের আসবাবপত্র, প্রশিক্ষণ কক্ষ ও প্রিভিউ রুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনটি তলায় আগুন দিয়ে পোড়ানো এবং যন্ত্রাংশ লুটপাট, একটি সম্প্রচার ওবি ভ্যান, ১৭টি গাড়ি ও ২১টি মোটরসাইকেলে আগুন এবং ৯টি গাড়ি ভাঙচুর করাসহ সম্পূর্ণ স্থাপনাটির ব্যাপক ক্ষতি সাধন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সারাদেশ থেকে বিএনপি-জামায়াত বিশেষ করে শিবির কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর নির্ভর করে এই ধ্বংসলীলা চালিয়েছে।'

তিনি বলেন, পুলিশকে হত্যা করা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়া পুলিশ সদস্যকে হাসপাতাল থেকে টেনে বের করে রাস্তায় ফেলে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। র‌্যাবের গাড়ির ভেতরে র‌্যাব সদস্যকে হত্যা, সাংবাদিক হত্যা করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ হত্যার শিকার হয়েছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। গাজীপুরে এক কর্মীকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখে। বাড়ি বাড়ি খুঁজে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে হত্যা, যাত্রাবাড়িতে তার মোটর শোভাযাত্রার এক চালকও বাদ যায়নি। এভাবে একদিকে হত্যাকাণ্ড একদিকে জ্বালাও-পোড়াও। এরা কি বাংলাদেশের নাগরিক ? দেশের স্বাধীনতা বা উন্নয়নে বিশ্বাসী, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।

সরকার প্রধান বলেন, তার সরকারের কোটা বাতিলের জারি করা পরিপত্র বাতিলে হাইকোর্টের রায় যেখানে স্থগিত হয়ে গিয়েছিল এবং সরকারের আপিলের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিল সেখানে কোটাবিরোধী আন্দোলনের কী ছিল, সে প্রশ্ন তিনি শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের উদ্দেশে ছুড়ে দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ধৈর্য ধরে তাদের বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে, বারবার বলেছি, মন্ত্রীরা পর্যন্ত দিনের পর দিন বৈঠক করেছে। কিন্তু একটা বিষয় লক্ষ করলাম, মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের প্রতিই তাদের যেন বেশি ক্ষোভ। তার একটি কথাকে বিকৃত করে নিজেদের রাজাকার আখ্যায়িত করে কতদিন তারা প্রতিবাদ করল। যার প্রতিবাদ প্রত্যেকটি শ্রেণি-পেশার মানুষ এমনকি ছাত্রলীগ, যুবলীগ থেকে শুরু করে প্রগতিশীল সংগঠনগুলো পর্যন্ত করেছিল। তখন তারা শ্লোগান পরিবর্তন করল 'চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চারিদিকে যখন আগুন, এই টেলিভিশন ভবনে যখন আগুন লাগানো হলো, দমকল কর্মীরা এসেছে তাদের ঢুকতে দেবে না। তাদের গাড়িতেও আগুন দেওয়া হলো। পুলিশ, র‌্যাব কাউকে ঢুকতে দেবে না, আগুন দাউদাউ করে জ্বলছে।

শেখ হাসিনা বলেন, তখন তিনি হেলিকপ্টারে করে পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নিলেন। অনেক ভবনে আগুন দেওয়ায় অনেকে ছাদে গিয়ে হাহাকার করায় হেলিকপ্টার দিয়েই তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, 'কিন্তু আজ টেলিভিশন ভবনে এসে যে ধ্বংসযজ্ঞ আমি দেখলাম এটা কারো পক্ষেই সহ্য করার নয়। আজ বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হলো। যদিও যারা আগুন দিয়েছে তাদের কিছু আসে যায় না। কারণ, লন্ডন থেকে নির্দেশ দেয় যেখানে যেখানে বাঙালি আছে তাদের আন্দোলন করতে হবে।'

সরকার প্রধান বলেন, লন্ডনে আওয়ামী লীগের ওপর হামলা করা হলো। সেখানে পুলিশ এসে বিএনপির তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতেবিক্ষোভ করাতে ৫৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ১৬ জন ১০ বছরের কারাদণ্ড আর বাকিদের সেখানে রাখা হবে না। দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তারা যে রুটি-রুজির পথ হারাল শুধু তাই নয়, যেসব বাঙালি সেখানে থাকে তাদের মুখটা আজ কোথায় গেল। কারণ, ওই দেশে আইন আছে, কেউ মিছিল করতে পারে না কিন্তু তাদের উস্কে দেওয়া হয়েছিল লন্ডন থেকেই।

তিনি বলেন, সেখানে আর বাংলাদেশিদের নেওয়া হবে না জানতে পেরে তিনি তাৎক্ষণিক সেখানকার দূতাবাস এবং সে দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলেছেন। সৌদি আরবও কঠিন আইন প্রয়োগকারী দেশ। সেখানেও ২০ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

তাহলে এই গ্রেপ্তার হওয়া লোকজন ও আমাদের লাখ লাখ কর্মীর ভবিষ্যৎ কী। সে প্রশ্ন উত্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানেও তিনি মেসেজ পাঠিয়েছেন। কিন্তু তাদের আইনতো তাদের নিজস্ব গতিতেই চলবে। এখনও বিভিন্ন দেশে ফোন করে আন্দোলনের জন্য উস্কে দেওয়া হচ্ছে, এতে সেখানকার বাংলাদেশিদের রুটি-রোজগারও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, সাজাপ্রাপ্ত আসামি মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে এখন দেশ ধ্বংসে নেমেছে, সঙ্গে জামায়াত-শিবির যারা সবসময়ই স্বাধীনতা বিরোধী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষা ও নিরাপত্তা বিধানে তার সরকার কারফিউ দিতে এবং সেনাবাহিনী নামাতে বাধ্য হয়েছে।

তিনি বলেন, 'মানুষের জানমাল রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। আজকে মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।'

Comments

The Daily Star  | English

What's causing the unrest among factory workers?

Kalpona Akter, labour rights activist and president of Bangladesh Garment and Industrial Workers Federation, talks to Monorom Polok of The Daily Star about the recent ready-made garments (RMG) workers’ unrest.

8h ago