ভারতের সঙ্গে আন্তঃসীমান্ত জ্বালানি তেলের পাইপলাইন সম্প্রসারণ কাজে অগ্রগতি নেই

‘ইন্দো-বাংলা ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন’ (আইবিএফপি) বছরে ১০ লাখ টন হাইস্পিড ডিজেল পরিবহনে সক্ষম। বর্তমানে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের সাত জেলায় ডিজেল সরবরাহ করা হচ্ছে।
আন্তঃসীমান্ত ডিজেল পাইপলাইন
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ইন্দো-বাংলা ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলা থেকে নাটোর পর্যন্ত আন্তঃসীমান্ত ডিজেল পাইপলাইন সম্প্রসারণের কাজ দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ধীরগতিতে পড়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ও ভারতের একটি সংবাদমাধ্যম।

গত বছরের মার্চে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্বোধন করা এই পাইপলাইন পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে পার্বতীপুরের একটি তেলের ডিপো পর্যন্ত বিস্তৃত।

'ইন্দো-বাংলা ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন' (আইবিএফপি) বছরে ১০ লাখ টন হাইস্পিড ডিজেল পরিবহনে সক্ষম। বর্তমানে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের সাত জেলায় ডিজেল সরবরাহ করা হচ্ছে।

এটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম আন্তঃসীমান্ত জ্বালানি পাইপলাইন। ভারতীয় অর্থায়নে এ প্রকল্পে আনুমানিক ৩৭৭ কোটি রুপি খরচ হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ অংশে খরচ হয়েছে ২৮৫ কোটি রুপি।

বিপিসি ও ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মিন্ট জানিয়েছে, গত জুলাইয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পাইপলাইন সম্প্রসারণ ও জ্বালানি রপ্তানির পরিমাণ বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করে।

গত সোমবার বিপিসির চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আন্তঃসীমান্ত পাইপলাইনটি নাটোর পর্যন্ত সম্প্রসারণের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রস্তাবে আমরা মৌখিকভাবে রাজি হয়েছি। তারা এখনো সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করতে পারেনি।'

প্রকল্পটি নাকচ করা বা বিদ্যমান কার্যক্রম বন্ধ করার কোনো সিদ্ধান্ত নেই জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমরা এখনো কোনো আলোচনায় বিষয়টি তুলিনি।'

বিপিসির তথ্য মতে, গত মাসেও (আগস্ট) আসামের নুমালিগড় রিফাইনারি থেকে বাংলাদেশ প্রায় চার হাজার টন ডিজেল আমদানি করেছে। প্রায় সাত হাজার টন ডিজেল আমদানির জন্য চারটি আমদানি আদেশ দেওয়া আছে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানেন এমন তিন জনের বরাত দিয়ে মিন্ট'র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৩১ কিলোমিটার পাইপলাইন সম্প্রসারণের প্রস্তাবে বাংলাদেশ সরকার এখন 'বিরতি' দিয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, 'যেহেতু প্রকল্পটি ভালোভাবে পরিচালিত হয়েছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সফল, তাই প্রতিবেশী বাংলাদেশের আরও বেশি জায়গায় যাতে এটি সরবরাহ করা যায় তা বিবেচনা করা হচ্ছে।'

সেই তিনজনের একজন গণমাধ্যমটিকে বলেন, 'এখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা অস্থিতিশীল থাকায় ভারত আরও বিবেচনা ও আলোচনার জন্য পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চায়। কোনো নির্দিষ্ট সময় বলা যাবে না।'

অপর একজন বলেছেন যে বাংলাদেশে ডিজেলের পাশাপাশি উচ্চ সালফার জ্বালানি তেল (এইচএসএফও) ও ফার্নেস তেল রপ্তানির প্রস্তাবও ভারত বিবেচনা করছে।

আমিন উল আহসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সব ট্যাংক এখনো অটোমেশনের আওতায় না আসায় বাংলাদেশ পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রত্যাশিত পরিমাণে ডিজেল পায়নি।

তার ভাষ্য, 'আমাদের আরও কিছু সমস্যা আছে। তবে অন্য দেশ থেকে আমদানির চেয়ে খরচ কম হওয়ায় পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি আমদানি চলমান আছে। এতে অভ্যন্তরীণ পরিবহন খরচও কম হয়। সব মিলিয়ে এই পাইপলাইন সম্প্রসারণ হলে আমাদের জন্য তা সুবিধাজনক।'

Comments

The Daily Star  | English
PM Sheikh Hasina

Govt to seek extradition of Hasina

Prosecutors of the International Crimes Tribunal have already been appointed and the authorities have made other visible progress for the trial of the ones accused of crimes against humanity during the July students protest

34m ago