৫ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আটকে আছে ইসলামী ব্যাংকের ৮ হাজার ২৭৯ কোটি টাকা

ব্যাংকগুলো হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি হলো আভিভা ফাইন্যান্স। ইসলামী ব্যাংকের পাশাপাশি এগুলো এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
ইসলামী ব্যাংক

এস আলম গ্রুপকে বিপুল অঙ্কের ঋণ দিয়ে সংকটে আছে ইসলামী ব্যাংক। এর মধ্যে চারটি ব্যাংক ও একটি ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে (এনবিএফআই) তারল্য সহায়তা হিসেবে আট হাজার ২৭৯ কোটি টাকা দিয়েছে। এই অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে ইসলামী ব্যাংক।

ব্যাংকগুলো হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি হলো আভিভা ফাইন্যান্স। ইসলামী ব্যাংকের পাশাপাশি এগুলো এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমানতের দিক থেকে সবচেয়ে বড় ব্যাংক হলো ইসলামী ব্যাংক। বেসরকারি ব্যাংকটি পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে তারল্য সংকট দেখা দিলে অর্থ জোগান দিত।

তারল্য সহায়তার মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংককে ৩ হাজার ৪৩ কোটি টাকা, ইউনিয়ন ব্যাংককে ২ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে ১ হাজার ১৭ কোটি টাকা, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংককে ৫৪৭ কোটি টাকা এবং আভিভা ফাইন্যান্সকে ৬৯০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

ব্যাংকটির তথ্য অনুযায়ী, জুন শেষে ইসলামী ব্যাংকের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭৪ হাজার কোটি টাকা।

এছাড়া, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা।

নথিতে দেখা গেছে, ২০১৭ সাল থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত এস আলম গ্রুপ ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো ৭৪ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যা গত মার্চ পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের ৪৭ শতাংশ।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠক শেষে ইসলামী ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ইসলামী ব্যাংক থেকে বিতরণ করা মোট ঋণের অর্ধেকের বেশি নিয়ে গেছে এস আলম গ্রুপ।

এর আগে, ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হলে সাত বছর পর গত ২২ আগস্ট ইসলামী ব্যাংকের ওপর এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ শেষ হয়।

তার আগে গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংকটির পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন বোর্ড গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকটি জানিয়েছে, ঋণপত্র খোলাসহ ইসলামী ব্যাংকের ওপর থেকে সব ধরনের বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইসলামী ব্যাংকে আমানতকারীদের অর্থ সম্পূর্ণ সুরক্ষিত।

তারল্য সহায়তা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নুরুল আমিন।

তার ভাষ্য, 'ইসলামী ব্যাংকের কাছে তার ব্যাংকের দায় আছে।'

তবে এস আলম গ্রুপের অনিয়মের কারণে এসব দায় তৈরি হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, 'এর কারণ 'এস আলম মডেল', যার মাধ্যমে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গ্রুপটি বিপুল পরিমাণ অর্থ সরিয়ে নিয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'এখন আমরা চেষ্টা করছি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে এনে ব্যাংকটিকে পুনর্গঠন করার। এসব প্রাতিষ্ঠানিক দায় ধীরে ধীরে পরিশোধ করা হবে।'

এ বিষয়ে জানতে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

Comments

The Daily Star  | English

Post-August 5 politics: BNP, Jamaat drifting apart

The taunts and barbs leave little room for doubt that the 33-year-old ties have soured. Since the fall of Sheikh Hasina’s government on August 5, BNP and Jamaat-e-Islami leaders have differed in private and in public on various issues, including reforms and election timeframe.

4h ago