তৃতীয় দিনের মতো গাজীপুরে ৪ পোশাক কারখানা শ্রমিকদের কর্মবিরতি

তারা গত আগস্টের বকেয়া বেতনসহ ১৩ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন।
পোশাক কারখানা
গাজীপুরের পুবাইলে পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন। ছবি: সংগৃহীত

তৃতীয় দিনের মতো আজও ১৩ দফা দাবিতে গাজীপুরের পুবাইল ও টঙ্গী থানায় চার পোশাক কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন।

আজ মঙ্গলবার টঙ্গীর গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেইজ লিমিটেড ও ব্রাভো অ্যাপারেলসের প্রায় তিন হাজার শ্রমিককে কর্মবিরতি পালন করতে দেখা গেছে। সকাল ৯টা থেকে তারা টঙ্গী পূর্ব থানা বিসিক শিল্প এলাকায় আন্দোলন করছেন।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শ্রমিকরা আঞ্চলিক সড়কে বিক্ষোভ-মিছিল করছেন।'

তারা গত আগস্টের বকেয়া বেতনসহ ১৩ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন।

গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেইজ লিমিটেড ও ব্রাভো অ্যাপারেলস আন্দোলনরত শ্রমিকরা ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, কোনো কর্মীকে হয়রানি করা যাবে না। তাদের প্রতিনিধিদের ন্যায্য দাবি গুরুত্বের সঙ্গে মেনে নিতে হবে। দাবি মেনে নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে হবে। দাবিগুলো না মানা পর্যন্ত তারা কাজে যাবেন না বলেও জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এপিএস পোশাক কারখানা এক শ্রমিক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের প্রতিষ্ঠানে প্রায় দুই হাজার শ্রমিক কাজ করেন। আমাদেরকে মাসের ৭ তারিখের মধ্যে বেতন দি‌তে হবে। হা‌জিরা বোনাস এক হাজার টাকা কর‌তে হ‌বে। বেতন ১৫ শতাংশ বাড়াতে হ‌বে। ১৮ দি‌নের ছু‌টির টাকা এক সঙ্গে দি‌তে হ‌বে। চাকরি ছাড়ার ১৫ দি‌নের ম‌ধ্যে সা‌র্ভিস বিল দি‌তে হ‌বে। ৬ মাস চাক‌রি মেয়াদ হ‌লেও ঈদ বোনাস দি‌তে হ‌বে।'

গাজীপুর শিল্প পুলিশ জানিয়েছে, আজ টঙ্গীর সাতাইশ বাগানবাড়ি এলাকায় প্রিন্স জ্যাকার্ড সোয়েটার লিমিটেডের শ্রমিকরা আগস্টের বেতনসহ অন্যান্য দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন।

পুবাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাসির মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এপিএস গা‌র্মেন্টসের শ্রমিকরা গতকাল বিকেলে নির্ধারিত সময়ে বেতন দেওয়াসহ অন্যান্য দাবিতে রাস্তা অবরোধ করেছিলেন। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হলেও সমাধান হয়নি।'

তিনি আরও বলেন, 'কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শ্রমিকরা কাজে আসেননি।'

পোশাক কারখানা
পুবাইলে বন্ধ এপিএস গ্রুপের পোশাক কারখানা। ছবি: সংগৃহীত

এপিএস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম রেজা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল শ্রমিকরা আন্দোলন করেছেন। আজ থেকে কারখানা বন্ধ। আমাদের অবস্থা খুব খারাপ। অর্থনৈতিক সংকট চরমে। ঘোষণা অনুযায়ী ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার কথা। যদি আজ টাকা আসে তাহলে আগামীকাল কারখানা খোলা যাবে।'

আন্দোলনকারীদের ভাষ্য, তাদের দাবিগুলোর মধ্যে আছে—প্রতি মাসের ৩ তারিখ পেস্লিপ ও ৭ তারিখের মধ্যে বেতন দিতে হবে। হাজিরা বোনাস এক হাজার টাকা দিতে হবে। বেতন ১৫ শতাংশ বাড়াতে হবে। বছরে ১৮ দিনের ছুটির টাকা এক সঙ্গে দিতে হবে ও সার্ভিস বিল দিতে হবে।

এর মধ্যে আরও আছে—সন্ধ্যা ৭টার পর থাকলে টিফিন বিল ৫০ টাকা ও নাইট বিল ২০০ টাকা দিতে হবে। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের চার মাসের ছুটি ও ছুটির টাকা আগে দিতে হবে। ছুটি শেষে আবার কাজে ফিরতে দিতে হবে। আন্দোলনকারী কাউকে চাকরিচ্যুত করা যাবে না। কোনো শ্রমিকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা যাবে না।

উৎসব ছুটি ১২ দিন করতে হবে জানিয়ে তারা আরও বলেন, কোনো কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হলে তিন মাস ১৩ দিনের বেতন দিতে হবে। সার্ভিস বিল দিতে হবে। বকেয়া ও ছুটির টাকা ও দুই ঈদে বোনাস দিতে হবে এবং শুক্রবার বা কোন ছুটির দিন কাজ করলে তাকে ৫০০ টাকা দিতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Former planning minister MA Mannan arrested in Sunamganj

Police arrested former Planning Minister MA Mannan from his home in Sunamganj's Shatiganj upazila yesterday evening

3h ago