সঞ্চালন লাইনের কাজে স্থবিরতা, রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু নিয়ে ফের অনিশ্চয়তা

দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য পদ্মা ও যমুনা নদীর ওপর দিয়ে ১৬ কিলোমিটার রিভারক্রসিং লাইনসহ মোট ৬৬৯ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন দরকার।
পদ্মার ক্রসিং লাইনের ৩৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আর যমুনার ক্রসিং লাইনের অগ্রগতি ২৫ শতাংশেরও কম। ছবি: স্টার

তীব্র গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্প এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ায় পদ্মা ও যমুনা নদীর ওপর দিয়ে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে।

এই সঞ্চালন লাইন ছাড়া ১২.৬৫ বিলিয়ন ডলারের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক মো. জাহেদুল হাছান।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশের (পিজিসিবি) তথ্য অনুসারে, দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য পদ্মা ও যমুনা নদীর ওপর দিয়ে ১৬ কিলোমিটার রিভারক্রসিং লাইনসহ মোট ৬৬৯ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন দরকার।

কিন্তু রিভার ক্রসিং লাইন স্কিমের পরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেন বলছেন, পদ্মার ক্রসিং লাইনের ৩৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আর যমুনার ক্রসিং লাইনের অগ্রগতি ২৫ শতাংশেরও কম।  

ভারতীয় কোম্পানি ট্রান্সরেল লাইটিং ৫২৪ মিলিয়ন ডলার চুক্তিতে পদ্মা নদীর ওপর দিয়ে ২ কিলোমিটার সিঙ্গেল সার্কিট ৪০০ কেভি লাইন এবং যমুনার ওপর দিয়ে ৭ কিলোমিটার ডাবল সার্কিট ৪০০ কেভি এবং ৭ কিলোমিটার ২৩০ কেভি লাইন নির্মাণের কাজ পেয়েছে।

রূপপুর প্রকল্প ও পিজিসিবির কর্মকর্তারা জানান, রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের লক্ষ্যে তিনটি রিভার ক্রসিং লাইনের মধ্যে দুই কিলোমিটার ৪০০ কেভি রিভার ক্রসিং লাইনের কাজ অক্টোবরের মধ্যে শেষ করতে সম্মত হয়েছে ট্রান্সরেল।

দেলোয়ার হোসেন জানান, পদ্মায় ব্যাপক পানির স্রোত থাকায় জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময় থেকে লাইনের কাজ বন্ধ রাখতে হয়। তিনি বলেন, 'এরপর বিক্ষোভ শুরু হয় এবং বেশিরভাগ শ্রমিক ও বিশেষজ্ঞ, যারা সবাই বিদেশি নাগরিক, তারা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে দেশ ছেড়ে চলে যান।'

পিজিসিবির তথ্য অনুযায়ী, নদী পারাপারের লাইনে ১০০ ভারতীয় ও ৩০ জন ইন্দোনেশীয়সহ প্রায় ১৫০ জন বিদেশি শ্রমিক কাজ করছিলেন।

এই শ্রমিকদের বেশিরভাগ এখনো কাজে ফেরেননি। তাই কাজ শুরু করার কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। কবে নাগাদ কাজ শেষ হবে সেটাও বলতে পারছেন না কেউ।

রূপপুরের প্রকল্প পরিচালক জাহেদুল হাছান বলেন, গ্রিড লাইনের কাজ শেষ করাই এখন মূল অগ্রাধিকার। মূল সময়সূচি অনুযায়ী রূপপুরের প্রথম ইউনিটে ২০২৩ সালে এবং দ্বিতীয় ইউনিটে ২০২৪ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা ছিল।

সংশোধিত সূচি অনুসারে, চলতি বছরে ডিসেম্বরে ১ নম্বর ইউনিটে উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সঞ্চালন লাইনের কাজে ধীরগতির কারণে তা সম্ভব হবে না বলেই ধারণা করা যাচ্ছে।

রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় পাবনার রূপপুরে নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পরমাণু শক্তি কমিশন। এ প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট নির্মাণ করছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু সংস্থা রোসাটমের সহযোগী প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয়এক্সপোর্ট।

এটি আওয়ামী লীগ সরকারের একটি বড় মেগা প্রকল্প।

Comments

The Daily Star  | English

Six state banks asked to cancel contractual appointments of MDs

The Financial Institutions Division (FID) of the finance ministry has recommended that the boards of directors of six state-run banks cancel the contractual appointment of their managing directors and CEOs..The six state-run banks are Sonali Bank, Janata Bank, Agrani Bank, Rupali Bank, BAS

48m ago