‘অনৈতিক কাজের’ অভিযোগে ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে বাড়ি ভাঙচুর-লুট

‘অনৈতিক কাজের’ অভিযোগে ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে বাড়ি ভাঙচুর-লুট
ঢাকার ধামরাই উপজেলার আমতা ইউনিয়ন পরিষদের বড় নারায়ণপুর এলাকায় এক নারীর বাড়িতে হামলার পরের দৃশ্য | ছবি: আকলাকুর রহমান আকাশ/স্টার

ঢাকার ধামরাই উপজেলায় আমতা ইউনিয়ন পরিষদের বড় নারায়ণপুর এলাকায় 'অনৈতিক কাজের' অভিযোগ তুলে এক নারীর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত নারীর অভিযোগ, হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের নেতৃত্বে ছিলেন ইউপি সদস্য মো. আশরাফুল ইসলাম। তিনি আরও জানান, এর আগে গত ৫ আগস্ট, ৬ আগস্ট ও ১৩ সেপ্টেম্বর তার বাড়িতে হামলা হয়েছে।

রুপালী বেগম বলেন, 'আমি ১০ বছরের বেশি সময় পোশাক কারখানায় কাজ করেছি। টাকা জমিয়ে একটি গরুর ফার্ম, মুরগির ফার্ম ও দোকান দিয়েছি। এগুলো থেকে আসা আয় দিয়েই সংসার চালাই। বাড়িতে আমি ও আমার ছেলের বউ থাকি। ছেলে বাইরে থাকে।'

'আমি তরিকা ভক্ত। বাড়িতে একটি মেলা ও ওরস করি। গ্রামের কিছু লোক এবং আশরাফুল মেম্বার আমাকে বাধা দিচ্ছিল। এবার চেয়ারম্যানের অনুমতি নিয়ে মেলা করছি। উনি (মেম্বার) এবারও আমাকে বাধা দিয়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন, তবে আমি সেই টাকা দেইনি। এরপর থেকে তারা আমার নামে নানা বাজে কথা ছড়াতে থাকে,' বলেন তিনি।

রুপালী আরও বলেন, 'আমাকে নিয়ে কোনোদিন বিচার-সালিশ হয়নি। গত ৫ আগস্ট বিকেলে আমার ছেলের বউ দোকানে বসেছিল। সে সময় হামলা হয়। আমার ছেলের বউ অন্তঃসত্ত্বা ছিল। তার গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। পরেরবার তারা ঘর-বাড়ি, দুটি টিভি, দুটি ফ্রিজ ও একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে, একটি ওয়াটার মোটর, দোকানের মালপত্র লুট করে।'

আতঙ্কে গত এক মাস যাবত বাড়িছাড়া বলে জানান তিনি। রুপালী বলেন, 'এখন পুলিশকে ডাকলে আসে না। আমি থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাব।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন বাসিন্দা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তার সঙ্গে পুরোপুরি অন্যায় হচ্ছে।'

ঘটনাস্থল ঘুরে ভাঙচুরের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে আমতা ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, 'ওই নারী অনৈতিক কাজ করে আসছিলেন। কেউ কিছু বললেই হামলা-মামলার ভয় দেখাতেন।  অনেকবার থানায় জানিয়েছি, কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকায় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।'

তিনি বলেন, 'আমার নামেও জিডি করেছে। আমি গ্রামবাসীদের নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি এরা আর এলাকায় থাকতে পারবে না। ওকে আর বাড়ি করে থাকতে দেওয়া যাবে না। থাকলে আবার অবৈধ কাজ চালু হবে। তাই এলাকার লোকজন নিয়ে গিয়ে (ভাঙচুর) এটা করেছি।'

এ সময় চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেন আশরাফুল।

ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, 'এই বিষয়ে ওই নারী থানায় এখনো কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খান মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, '২০০৬ সালের আইন অনুযায়ী, গ্রাম আদালত ছোটখাটো বিষয় মীমাংসা করতে পারে। কিন্তু ঘর-বাড়ি ভেঙে দেওয়া শতভাগ আইনবিরোধী কাজ।'

Comments

The Daily Star  | English

Curfew in Gopalganj from 8:00pm

It will be in effect until 6:00pm tomorrow

19m ago