১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনে যেকোনো পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দেবো: রয়টার্সকে সেনাপ্রধান

রাষ্ট্র পরিচালনা ও নির্বাচন ব্যবস্থায় যেসব গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে তাতে পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার অঙ্গিকারের কথা জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

তিনি বলেছেন, যাতে আগামী ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে সে জন্য তিনি যেকোনো পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দেবেন।

গতকাল সোমবার ঢাকায় জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তার কার্যালয়ে বসে রয়টার্সকে দেওয়া এক বিরল সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্তি করার একটি রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে।

সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় সেনাবাহিনীর ইউনিফর্মে ছিলেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

তিনি বলেন, 'আমি তাকে (ড. ইউনূস) সমর্থন করব। পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন। যেন তিনি তার কাজ সম্পন্ন করতে পারেন।'

তিনি আরও বলেন, এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণ হওয়া উচিত। তবে ধৈর্য ধরার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন তিনি।

'আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে আমি বলব যে এই সময়সীমার মধ্যে আমাদের একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করা উচিত,' সাক্ষাৎকারে বলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রতি সপ্তাহেই বৈঠক হওয়ার কথা জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, 'আমাদের মধ্যে সম্পর্ক খুব ভালো। আমি নিশ্চিত যে আমরা যদি একসাথে কাজ করি তবে আমাদের ব্যর্থ হওয়ার কোন কারণ নেই।'

সাক্ষাৎকারে সেনাবাহিনীর প্রসঙ্গও উঠে আসে। তিনি বলেন, তার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করবে না।

'আমি এমন কিছু করব না যা আমার প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতিকর। আমি একজন পেশাদার সৈনিক। আমি আমার সেনাবাহিনীকে পেশাদার রাখতে চাই।'

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাবিত সংস্কার কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সেনাবাহিনীর ভেতরে অন্যায়ের সঙ্গে জড়ানোর অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে কয়েকজনকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে আর কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি সেনাপ্রধান।

সেনাবাহিনীতে কর্মরত কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন জানিয়ে তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সরাসরি নিয়ন্ত্রণে থাকা সংস্থাগুলোতে কাজ করার সময় কিছু সামরিক কর্মকর্তা বিচ্যুতিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকতে পারেন।

দীর্ঘ মেয়াদে সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান থেকে দূরে রাখার ইচ্ছার কথাও জানান সেনাপ্রধান। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, 'এটি কেবল তখনই ঘটতে পারে যখন রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার কিছুটা ভারসাম্য থাকবে। সেক্ষাত্রে সশস্ত্র বাহিনীকে সরাসরি রাষ্ট্রপতির অধীনে রাখা যেতে পারে।'

বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী বর্তমানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত। সাধারণত প্রধানমন্ত্রী নিজেই এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলান। অন্তর্বর্তী সরকার সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে এ দিকটায় নজর দিতে পারে বলেও উল্লেখ করেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

তিনি বলেন, 'সামগ্রিকভাবে সামরিক বাহিনীকে কখনোই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা উচিত নয়। কোনো অবস্থাতেই একজন সৈনিকের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া উচিত নয়।'

Comments

The Daily Star  | English

Child rape cases rise nearly 75% in 7 months

Child rape cases in Bangladesh have surged by nearly 75 percent in the first seven months of 2025 compared to the same period last year, according to data from Ain o Salish Kendra (ASK).

5h ago