শ্রীপুরে মসজিদের ব্যাটারি চুরির অভিযোগে যুবককে নির্যাতন, ১৩ দিন পর মৃত্যু

ইসরাফিলকে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় মসজিদের ব্যাটারি চুরির অভিযোগ তুলে নির্যাতনের ১৩ দিন পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইসরাফিল (২৪) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ইসরাফিলের বাড়ি শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের বাঁশবাড়ী বাড়ি গ্রামে। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন। শৈলাট মেডিকেল মোড় মসজিদের ব্যাটারি চুরির অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। নির্যাতনে আহত হওয়ার পরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

সন্ধ্যায় ইসরাফিলের বাবা নাসির উদ্দিন শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।'

অভিযোগ আনা হয়েছে একই ইউনিয়নের শৈলাট মেডিকেল মোড় গ্রামের মৃত মনির উদ্দিনের ছেলে কামরুল হাসান লিটন (৫০), মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে বাবুল মন্ডল (৪৫) ও মৃত টেপপাঞ্জুর ছেলে শফিকুল ইসলামের (৩২) বিরুদ্ধে। এছাড়া, অজ্ঞাতনামা আরও ছয় থেকে সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, কামরুল হাসান লিটন দুই নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।

আসামিদের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আকতারুল আলম মাস্টারকে কল হলে তিনিও রিসিভ করেননি।

নাসির উদ্দিন উল্লেখ করেন, গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৭টায় অভিযুক্তরা তার ছেলে ইসরাফিলকে গলা চেপে ধরে বাড়ি থেকে শৈলাট মেডিকেল মোড় স্কুল মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে বলা হয়, ইসরাফিল মসজিদের ব্যাটারি চুরি করেছে। এই মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হাত-পা বেঁধে তার শরীরে গরম পানি ঢেলে দেয়। তারা হত্যার উদ্দেশ্যে রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ইসরাফিলের দুই পা ভেঙে দেয় এবং দুপুর ২টা পর্যন্ত মাঠে ফেলে রাখে। বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গেলে নাসির নিজেও মারধরের শিকার হন। আসামিরা ইসরাফিলের কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন এবং নাসিরের কাছ থেকেও জোর করে ননজুডিশিয়াল সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে দেন। তারা হুমকি দিয়েছিলেন, আইনের আশ্রয় নিলে নাসির ও তার ছেলেকে হত্যা করা হবে।

ইসরাফিলকে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

Comments

The Daily Star  | English
cancellation of jamaat's registration

Forging unity with islamist parties: Jamaat eyes large electoral alliance

The vacuum in the wake of the Awami League’s departure from the political arena and the BNP’s impending reemergence as number one are leading other parties to peel away from these major players and seek to make their own spheres of alliance.

7h ago