জানুয়ারি-আগস্টে ইউরোপে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৩.৫৩ শতাংশ

রপ্তানি কমার পেছনে ইউরোপের উচ্চ মূল্যস্ফীতিরও প্রভাব আছে। ফলে, বেশিরভাগ দেশ থেকে রপ্তানির পরিমাণে নিম্নমুখী প্রবণতা ছিল।

ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও শ্রমিক অসন্তোষের কারণে জানুয়ারি-আগস্টে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে পোশাক রপ্তানি ৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ কমে ১২ দশমিক ৯০ কোটি ডলারে নেমেছে। অথচ বাংলাদেশ ইউরোপের বাজারে দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক সরবরাহকারী দেশ।

রপ্তানি কমার পেছনে ইউরোপের উচ্চ মূল্যস্ফীতিরও প্রভাব আছে। ফলে, বেশিরভাগ দেশ থেকে রপ্তানির পরিমাণে নিম্নমুখী প্রবণতা ছিল।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো এ বছরের আট মাসে মোট ৫৯ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলারের পোশাক আমদানি করেছে। আগের বছরের চেয়ে তাদের আমদানি কমেছে ৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

তথ্য বলছে, একই সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে পোশাক সরবরাহকারী শীর্ষ দেশ চীন থেকে রপ্তানি ৪ দশমিক ১০ শতাংশ কমে ১৫ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

তুরস্ক ৬ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করে তৃতীয় স্থানে আছে এবং তাদের রপ্তানির পরিমাণ কমেছে ৭ দশমিক ৫২ শতাংশ। ভারতের রপ্তানি ২ দশমিক ৭৩ শতাংশ কমে ৩ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলারের দাঁড়িয়েছে এবং ভারত চতুর্থ অবস্থানে আছে।

প্রধান রপ্তানিকারক দেশগুলো থেকে ইইউতে পোশাক রপ্তানি কমলেও কম্বোডিয়া থেকে ১২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়ে ২ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। পাকিস্তানও ভালো করেছে, ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। মরক্কো থেকেও রপ্তানি ৬ দশমিক ০৯ শতাংশ বেড়ে ২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে, শ্রীলঙ্কা থেকে রপ্তানি ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ কমে ৯০৬ দশমিক ৯১ মিলিয়ন ডলারে এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ কমে ৬৭৭ দশমিক ৫৩ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

অবশ্য জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের প্রথম দিকে বাংলাদেশের পোশাক খাত অস্থিতিশীল অবস্থায় ছিল। ফলে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা সংকটে পড়েন।

জুলাইয়ে রাজনৈতিক উত্থান ও ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মাধ্যমে এই অস্থিতিশীলতা শুরু হয় এবং ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পরিবর্তনের মাধ্যমে শেষ হয়েছিল।

এরপর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার পাশাপাশি অগ্নিসংযোগ ও চাঁদাবাজির ঘটনা স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে থাকে।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর থেকে শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে ৪০ কোটি ডলারের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কয়েক মাস ধরে চলা অস্থিরতা পোশাক ব্যবসায়ে প্রভাব ফেলায় বেশিরভাগ রপ্তানিকারক সময়মতো পণ্য পাঠাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন।

অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওয়ার্ক অর্ডার বাতিল হয়েছে। এমনকি বিদেশি ক্রেতাদের প্রতিনিধিরা কারখানা পরিদর্শন স্থগিত করেছিল। তারা দ্রুত পণ্য সরবরাহ চেয়েছিল বলে কিছু কাজের আদেশ অন্য দেশে সরিয়ে নেওয়া হয়।

একইসঙ্গে করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মারাত্মক বিপর্যয়ের কারণে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে ইইউ বাজারে চাহিদা কমে। ফলে, কারণ মূল্যস্ফীতির চাপে ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতা কমে যায়। যদিও ইউরোজোনের অর্থনীতি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh Civil Administration

Entry into public jobs: Govt raises age bar to 32

Candidates can only take part in the Bangladesh Civil Service Examination a maximum of three times

1h ago