জীবিত স্বামীকে আন্দোলনে নিহত দেখিয়ে মামলা, স্ত্রীসহ ৩ জন পুলিশ হেফাজতে

আশুলিয়া থানা। ছবি: সংগৃহীত

আশুলিয়ায় জীবিত স্বামীকে মৃত দেখিয়ে করা মামলার বাদী স্ত্রীসহ তিনজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

তারা হলেন—সিলেটের দক্ষিণ সুরমার বাসিন্দা মো. আল আমিনের স্ত্রী কুলসুম আক্তার (২১), মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানার বাসিন্দা রুহুল আমিন (৬৪) ও শিবালয় থানার শফিউদ্দিন (৪০)।

কুলসুম আক্তারের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানার সিংজুরী গ্রামে। স্বামী আল আমিনকে হত্যার অভিযোগ এনে গত ২৪ অক্টোবর কুলসুম ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।

১৩ নভেম্বর আল আমিন মৌলভীবাজারের জুড়ি থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

কুলসুমের দাবি, চাকরির লোভ দেখিয়ে তাকে দিয়ে মামলাটি করানো হয়েছিল।

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, আল আমিন গত ৫ আগস্ট নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে কুলসুম ১৩০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা করার পর ৮ নভেম্বর সেটি ঢাকার আশুলিয়া থানায় এজাহারভুক্ত হয়। পরে জুড়ি থানায় যোগাযোগের পর আল আমিনকে আশুলিয়া থানায় আনা হয়।

পুলিশ হেফাজতে থাকা কুলসুম আক্তার জানান, তিনি স্বামী মো. আল আমিনের সঙ্গে সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় থাকতেন। ২৮ আগস্ট তিনি সিলেট থেকে মানিকগঞ্জ চলে আসেন। পরে চাকরির খোঁজ করতে থাকেন। বাসে পরিচয় হয় শফিউদ্দিনের সঙ্গে। 

কুলসুমের দাবি, চাকরির কথা জানালে কুলসুমকে ফোন নম্বর দেন শফিউদ্দিন। এর কিছুদিন পর কুলসুমের চাকরি হয়। তার কয়েকদিন পর শফিউদ্দিন ও রুহুল আমীন কুলসুমকে জানান, একটি হত্যা মামলায় তাকে বাদী করা হয়েছে। এরপর তারা কুলসুমকে কক্সবাজার নিয়ে যান।

কুলসুম বেগম বলেন, 'চাকরির লোভ ও ভয় দেখিয়ে আমাকে মামলার বাদী করা হয়। আমি আসামি কাউকে চিনিও না। কে মারা গেছেন, তাও আমি জানি না।'

এদিকে কুলসুমকে থানায় আনা হয়েছে জানতে পেরে মামলার এক আসামি লিয়াকত দেওয়ান থানায় উপস্থিত হন। মামলা থেকে নাম প্রত্যাহারের কথা বলে তার কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি তার।

লিয়াকত দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি ওই মামলার ৫৭ নম্বর আসামি। এ ঘটনায় রুহুল জড়িত বলে জানতে পেরেছি। রুহুলের ছেলে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একজনের মাধ্যমে প্রত্যেক আসামির কাছে দুই লাখ টাকা করে চায়। পরে আমরা ১১ জন মিলে ১৭ লাখ টাকা দিয়েছি।'

এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, 'মামলার বাদীসহ তিনজনকে কক্সবাজার থেকে আশুলিয়া থানায় হেফাজতে আনা হয়েছে। বাদীকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Why 1971 still casts a shadow in Bangladesh-Pakistan relations

The truth of the 1971 remains buried in denial, distortion, and evasion

2h ago