ব্যাটিংয়ের বেহাল দশার শেষ কোথায়?

বাংলাদেশের ব্যাটিং নিয়ে হতাশার গল্প এখন বারবার পুনরাবৃত্তিতে ক্লিশে, অতি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জ্যামাইকায় দ্বিতীয় টেস্টেও ভিন্নতা হয়নি। আরও একবার মুখ থুবড়ে পড়ে দুইশোর আগে গুটিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে।

রোববার স্যাবাইনা পার্কে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে পরিস্কার ব্যবধানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। ১৬৪ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ উইকেটে ৭০ রান তুলে দিন শেষ করেছে।

২ উইকেটে ৬৯ রান নিয়ে দিন শুরু করে আর ৯৫ রান তুলে বাকি ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারী দল। আরও একবার পেসারদের বলেই হয়েছে সব সর্বনাশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসাররা ভালো বল করেছেন বটে, নিজেদের কন্ডিশনে ঝাঁজালো বল তারা করবেন এটাই স্বাভাবিক। 

কিন্তু এসব চ্যালেঞ্জে টিকে থাকার নিবেদন,  দক্ষতা, মানসিক দৃঢ়তা দেখানো চাই। টাইগার ব্যাটারদের মধ্যে তার ছিঁটেফোঁটা ছিলো না। 

দুই অপরাজিত ব্যাটার সাদমান ইসলাম ও শাহাদাত হোসেন দিপু প্রথম দিনেই দুজন মিলে তিনবার জীবন পেয়েছিলেন। দ্বিতীয় দিনে শুরুর কয়েক মিনিট তাদের স্থির দেখাচ্ছিলো। দিপু আরও ১০ রান যোগ করলেন, এরপর বেরিয়ে এলো তার স্কিলের কঙ্কাল। শামার জোফেস আউটস্যুয়িং করিয়ে তাকে পরীক্ষা করছিলেন, হুট করে সোজা স্টাম্পমুখী ডেলভারি দিলেন। সেটা ঠেকানোর যেন কোন উপায় জানা নেই তার। প্রশ্ন উঠল টেস্টের জন্য এই তরুণ প্রস্তুত তো?

এই দলে সবচেয়ে অভিজ্ঞ দুইজন ব্যাটারের একজন যিনি, সেই লিটন দাস যেন মাঝে মাঝে ভুলে যান সব পরিস্থিতিতে আয়েশি ঘরানায় ব্যাট চালালে হয় না। জেডন সিলসের বলে ড্রাইভ করে তিনি ক্যাচ দিয়েছেন স্লিপে। বলটা বাড়তি নিবেদন নিয়ে ছাড়তে পারতেন।

আগের টেস্টের নিচের দিকে লড়াই করা জাকের আলি অনিক শামারের পেস বৈচিত্র্যর জবাব খুঁজে পাননি। সাদমানের নিবেদন নিয়ে প্রশ্ন নেই, ক্রিজে টিকে থাকার মানসিকতা তার ছিলো। কিন্তু টেকনিকের দুর্বলতা ঢাকা দায়! প্রথম দিনে দুবার ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান। এবার আর রক্ষে হয়নি। শামার তাকেও ফাঁদে ফেললেন, কোন বল বের করলেন, কোনটা ঢুকালেন। পা সচল রেখে, রিফ্লেক্স ভালো রেখে এসব বল সামলানোর সামর্থ্য তিনি দেখাতে পারেননি।

মেহেদী হাসান মিরাজ লড়াই করে শেষ দিকে আউট হয়েছেন। টেল এন্ডারদের কথা বলা অপ্রয়োজনীয়। তাদের দায়ও দেয়া যায় না।

অল্প রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর বোলিং খারাপ হয়নি বাংলাদেশের।  প্রতিপক্ষের একটা উইকেট ফেলা গেছে, ফেলতে পারত আরও কিছু। সেরকম পরিস্থিতি এসেছে একাধিকবার। বাংলাদেশ যে ভালো বল করেছে স্কোরকার্ডও সায় দেবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭০ রান তুলতেই লাগিয়েছে ৩৭ ওভার,  তাদের রানরেট দুইয়ের নিচে। এখনো বাংলাদেশ ম্যাচে আছে বোলারদের সৌজন্যে।  কিন্তু শুধু বোলিং দিয়ে ম্যাচ জেতা যায় না।

Comments

The Daily Star  | English
Kudos for consensus in some vital areas

Kudos for consensus in some vital areas

If our political culture is to change, the functioning of our political parties must change dramatically.

2h ago