দাম বাড়ানোর পরও মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল

বোতলজাত সয়াবিন, সয়াবিন তেল, ভোজ্যতেল,
ছবিটি গতকাল ঢাকার কারওয়ান বাজার থেকে তোলা। ছবি: রাশেদ সুমন

দুদিন আগে সরকার সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর অনুমতি দিলেও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের কাঁচাবাজারে এখনো চাহিদা মতো বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, তারা চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত বোতলজাত সয়াবিন তেল পাচ্ছেন না। অন্যদিকে সুপারস্টোরগুলোও ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে।

দোকান ও সুপারশপে বোতলজাত সয়াবিন তেল না পেয়ে অনেকে বিকল্প হিসেবে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে চেষ্টা করেন। তবে, সেখানেও প্রায় একই অবস্থা দেখা গেছে।

ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার বাসিন্দা সোহানা পারভীন (৩২) অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে সয়াবিন তেল কেনার অভিজ্ঞতার কথা বলেন।

তিনি গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি কেবল এক লিটার বোতলের সয়াবিন তেল পেয়েছি। চেষ্টা করেও সেখানে দুই বা পাঁচ লিটারের কোনো বোতল পাওয়া যায়নি।'

তিনি আরও বলেন, সূর্যমুখী ও সরিষার মতো অন্য তেল পাওয়া গেলেও বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই।

প্রায় এক মাস ধরে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। মূলত রিফাইনাররা বাজারে পর্যাপ্ত তেল সরবরাহ না করায় সারাদেশের কাঁচাবাজার থেকে একপ্রকার উধাও হয়ে যায় রান্নার এই দরকারি উপকরণটি। পরে সোমবার সয়াবিন ও পাম তেলের খুচরা মূল্য প্রতি লিটারে আট টাকা বাড়ানোর অনুমতি দেয় সরকার।

ফলে বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটার এখন ১৭৫ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল ও সুপার পাম তেলের লিটার ১৫৭ টাকা।

খুলনা, চট্টগ্রাম ও ঢাকার খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, দাম বাড়ার পর ডিলাররা বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ শুরু করলেও চাহিদার তুলনায় তা এখনো কম।

রিফাইনাররা প্রত্যাশা করছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে খুচরা পর্যায়ে সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।

খুলনা শহরের খুচরা ব্যবসায়ী আবদুর রব দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি চাহিদার বিপরীতে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ সয়াবিন তেল পাচ্ছেন।

'ফ্রেশ নিয়মিত তেল সরবরাহ করলেও অন্যান্য ব্র্যান্ড করছে না,' মন্তব্য করেন তিনি।

স্বপ্ন সুপারশপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বলেন, বোতলজাত তেলের সংকট তীব্র হলে তারা কর্তৃপক্ষের কাছে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রির অনুমতি চেয়েছিলেন।

তিনি বলেন, 'বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার আগে আমরা চাহিদার মাত্র ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ তেল পেতাম। এখন তা কিছুটা বেড়ে ৫০ শতাংশে দাঁড়ালেও চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়।'

চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ির খুচরা বিক্রেতা মো. ইসমাইল হোসেন জানান, তিনি শুধু রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেল পাচ্ছেন, তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাচ্ছেন না।

'চাহিদা অনুযায়ী আমরা কোম্পানির ডিলারদের কাছ থেকে মাত্র ৩০ শতাংশ তেল পেয়েছি,' বলেন এই ব্যবসায়ী।

বরিশালের বাজার রোড এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ী পানা সাহা জানান, সরবরাহের কারণে তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। তবে ডিলাররা তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে, আগামী শনিবারের মধ্যে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।

বরিশালের এক নারী জানান, সয়াবিন তেলের ঘাটতির কারণে তিনি সরিষার তেল ব্যবহারে ঝুঁকেছেন, তবে সরিষার তেলের দামও বাড়ছে।

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় আমদানিকারক ও পণ্য প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান টিকে গ্রুপের পরিচালক (ফিন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন) শফিউল আতের তসলিম জানান, গতকাল নতুন রিলেবেলযুক্ত পুষ্টি ব্র্যান্ডের তেল পরিবেশক পয়েন্টে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবারের মধ্যে সারা দেশে পাওয়া যাবে।

তীর ব্র্যান্ডের বাজারজাতকারী সিটি গ্রুপের করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, 'আমরা এখনো আগের দামেই বাজারে সয়াবিন তেল সরবরাহ করছি।'

তিনি আরও বলেন, 'নতুন দাম দিয়ে চালান সরবরাহ শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সব খুচরা বাজারে তেল পৌঁছে যাবে।'

(এই প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন নজরুল ইসলাম, দীপংকর রায় সুশান্ত ঘোষ)

Comments

The Daily Star  | English

Threat of fresh Rohingya influx looms as clashes erupt in Myanmar

Gunfire and explosions were heard late Friday night from villages across the border in Myanmar opposite Whykong union in Teknaf upazila of Cox’s Bazar. Residents, gripped by panic, reported that this was the most intense gunfire they had heard in months.

6h ago