র‌্যাবের অতীত অপরাধের জন্য ক্ষমা চাইলেন মহাপরিচালক, স্বীকার করলেন আয়নাঘরের কথা

র‌্যাবের অতীত অপরাধের জন্য নির্যাতিত ব্যক্তি ও হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক। একই সঙ্গে তিনি স্বীকার করেছেন যে র‌্যাবের গোপন বন্দীশালা বা 'আয়নাঘর' ছিল।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন র‌্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান।

তিনি বলেন, 'র‌্যাব সৃষ্টির পর থেকে যারা র‌্যাব দ্বারা নির্যাতিত বা অত্যাচারিত হয়েছেন, তাদের কাছে এবং নারায়ণগঞ্জের সাত খুনসহ যারা র‌্যাবের দ্বারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, তাদের পরিবারের কাছে আমরা দুঃখপ্রকাশ করছি এবং ক্ষমা প্রার্থনা করছি।'

'এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার' প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, 'এর মাধ্যমেই কেবল দায়মুক্ত হওয়া সম্ভব। অন্য কোনো ভাবেই আমরা দায়মুক্ত হতে পারব না।'

তিনি 'নিশ্চয়তা' দেন, 'আমি যতদিন এই দায়িত্বে আছি বা আমার অফিসার যারা আছেন, র‌্যাব কখনো কারো নির্দেশে ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধ—গুম, খুন—করবে না। যদি কোনো সদস্য যদি নিজ দায়িত্বে কোনো ধরনের অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িত হয়, তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিব। যেটা ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আমরা নিয়ে আসছি।'

ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'হেলিকপ্টারের বিষয়ে হাইকোর্টে রিট আছে, ফৌজদারি মামলাও রজু হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালও এটা অনুসন্ধান করছে। আমরা আশা করব, এসব অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য বের হয়ে আসবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

র‌্যাব বিলুপ্তির প্রস্তাবের বিষয়ে বাহিনীটির প্রধান বলেন, 'আমরাদের যে দায়িত্ব আছে সেটা আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করব এবং এ ব্যাপারে (বিলুপ্তি) সরকার যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, সেটাই শিরোধার্য। সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আমরা থাকব।'

তিনি জানান, 'গত চার মাসে ১৬ জন র‌্যাব সদস্যকে আটক করা হয়েছে। ডাকাতি, চাঁদাবাজি, মাদক চোরাচালানের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, ছিনতাইয়ের অভিযোগে তাদের আটক করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতেও বাহিনীর কেউ এ ধরনের অপরাধ করলে ব্যবস্থা নিবো।'

পুলিশের মতো র‌্যাবেরও পোশাক পরিবর্তনের বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'একজন ভালো মানুষকে যে পোশাকই পরানো হোক তিনি ভালো কাজ করবেন। একজন খারাপ মানুষকে যে পোশাকই পড়ানো হোক না কেন, তার কাছ থেকে ভালো কিছু পাব না।'

র‌্যাবের গোপন বন্দিশালা বা আয়নাঘর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'র‌্যাবে আয়নাঘরের যে বিষয়টি এসেছে, সেটি ছিল, আছে। কমিশন (গুমের ঘটনা তদন্তে কমিশন) আমাদের নির্দেশ দিয়েছে যা যে অবস্থায় আছে, সেই অবস্থায় রাখার জন্য। কোথাও কোনো ধরনের পরিবর্তন বা পরিবর্ধন যেন না করা হয়, যা যেভাবে ছিল সেগুলো আমরা ওইভাবেই রেখেছি।'

সদস্যদের আভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলার বিষয়ে র‌্যাব কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানান তিনি।

 

Comments

The Daily Star  | English
Prof Yunus in Time magazine's 100 list 2025

Prof Yunus named among Time’s 100 Most Influential People of 2025

A tribute article on Prof Yunus was written by Hillary Clinton for the magazine

4h ago