সমর্থকদের ভিড়ে যেভাবে গ্রেপ্তার এড়ালেন দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট

ছবি: সংগৃহীত

পরোয়ানা নিয়ে শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তা ছয় ঘণ্টা চেষ্টায় দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

কোরিয়ার ইতিহাসে 'নজিরবিহীন' এই ঘটনার বর্ণনা উঠে এসেছে নিউইয়র্ক টাইমস ও বিবিসির প্রতিবেদনে।

গত ৩ ডিসেম্বর দেশটিতে হঠাৎ জরুরি সামরিক শাসন জারি করেন প্রেসিডেন্ট ইওল। যে কারণে পরে তাকে অভিশংসিত করে দেশটির সংসদ। এরপর শুরু হয় ফৌজদারি তদন্ত।

ছবি: সংগৃহীত

সেই তদন্তকে তিনি পুরোপুরি উপেক্ষা করায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। ক্ষমতাচ্যুত হলেও দেশে এই ডানপন্থী নেতার ব্যাপক সংখ্যক সমর্থকগোষ্ঠী রয়েছে। তার গ্রেপ্তার ঠেকাতে শুক্রবার ভোর থেকেই তার বাড়ির সামনে জড়ো হন হাজার হাজার সমর্থক।

সকালে মধ্য সিউলে সাবেক প্রেসিডেন্টের পাহাড়ি কম্পাউন্ডের কাছে হাজির হন প্রায় ১০০ পুলিশ কর্মকর্তা ও কৌঁসুলি। প্রথমে তারা পার্ক করা গাড়ি ও সমর্থকদের দুটি ব্যারিকেড অতিক্রম করেন। কিন্তু ভবনের ৬৫০ ফুট দূরত্বে এসে নতুন বাধার মুখোমুখি হতে হয় তাদের। ১০টি বাস ও গাড়ি নিয়ে প্রেসিডেন্সিয়াল সিকিউরিটি সার্ভিসের ২০০ জন সৈনিক তাদের পথরোধ করে।

পুলিশ এগিয়েআদালতের পরোয়ানা দেখালে সেখানে ছোটখাটো সংঘর্ষ বাধে, যাতে সুবিধা করতে না পারায় পুলিশের সামনে এগোনোর পথ বন্ধ হয়ে যায়।

তবে তিন কৌঁসুলিকে ভবনের কাছে যেতে দেওয়া হয়। সেখানে ইওলের আইনজীবীরা পরোয়ানা দেখে সরাসরি বলেন, এটি অবৈধ।

প্রায় ছয় ঘণ্টা এই অচলাবস্থার মধ্যে থেকে পরে ফিরে যেতে বাধ্য হন কর্মকর্তারা।

সরকারের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তদন্তে নিয়োজিত একটি সংস্থা ইওলের বিরুদ্ধে তদন্ত ও অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

ইওলের বিরুদ্ধে আদালত অমান্য করার অভিযোগ এনে এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলে, 'এটি বেশ দুঃখজনক। পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে আমরা আলোচনা করব।'

ইওল বলেন, এখন সাংবিধানিক আদালতের মাধ্যমে পদ ফিরে পাওয়ার লড়াই শুরু করবেন তিনি।

সামরিক আইন জারি করে সংসদে সশস্ত্র সেনা পাঠিয়ে বিদ্রোহের চেষ্টা করার অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এর আগে সাবেক সামরিক একনায়ক চুন ডু-হোয়ানও প্রায় একইভাবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এড়িয়েছিলেন। ১৯৭৯ সালে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছিলেন হোয়ান। তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগও ছিল। ১৯৯৫ সালে সমর্থকদের ভিড়ের আড়ালে আদালতের পরোয়ানা অমান্য করে দক্ষিণাঞ্চলে নিজের শহরে চলে গিয়েছিলেন হোয়ান।

Comments

The Daily Star  | English
Kudos for consensus in some vital areas

Kudos for consensus in some vital areas

If our political culture is to change, the functioning of our political parties must change dramatically.

3h ago