জুলাই হত্যাকাণ্ড

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে জিয়াউল আহসানের আবেদন

জিয়াউল আহসান। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত অপরাধ বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করেছেন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক বরখাস্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান।

আজ সোমবার আইনজীবীর মাধ্যমে দায়ের করা আবেদনে তিনি খালাস দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন৷

শুনানি শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মোর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ আগামী ২২ জানুয়ারি আবেদনের ওপর আদেশের তারিখ নির্ধারণ করেন৷

জিয়াউল আহসানের আইনজীবী নাজনীন নাহার বলেন, 'সংবিধানের ১৫০ অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে বলা আছে—১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচার করার জন্য এই ট্রাইব্যুনালটি গঠিত হয়েছিল৷ ট্রাইব্যুনালে এখন যে বিচার হচ্ছে, সেটি জুলাই-আগস্টের ঘটনা; পলিটিক্যাল কনফ্লিক্ট৷ এখানে কোনো যুদ্ধ ছিল না৷ এই জন্য আমরা এই ট্রাইব্যুনালের কনস্টিটিউশনকে চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেছি৷'

'আরেকটি বিষয় হলো এই ট্রাইব্যুনালের বিচার করার এখতিয়ার নেই৷ এই ট্রাইব্যুনালে যে বিচারপতিরা রয়েছেন, তাদের হাইকোর্ট বিভাগেই থাকা উচিত৷ ট্রাইব্যুনালে বিচার করার কোনো এখতিয়ার তাদের নেই,' যোগ করেন তিনি৷

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, 'জিয়াউল আহসানের আবেদনের মূল বিষয় ছিল যে, এই ট্রাইব্যুনালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করার ক্ষমতা নেই৷ কারণ বাংলাদেশে কোনো যুদ্ধ হয়নি৷'

'আসামিপক্ষ আরও দাবি করেছে, সরকারের ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করার কোনো ক্ষমতা নেই; এই সরকারের বৈধতা নেই; সংশোধনীতে গুমের বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে, সেটি অসাংবিধানিক হয়েছে৷ এই কয়েকটি গ্রাউন্ডে তারা ট্রাইব্যুনালে দাবি জানিয়েছেন যে, আসামি জিয়াউল আহসানকে যেন ডিসচার্জ করে দেওয়া হয়৷ এর বিপরীতে রাষ্ট্রপক্ষ তার বক্তব্য তুলে ধরেছে,' বলেন তিনি।

তাজুল ইসলাম বলেন, 'জিয়াউল আহসানের আইনজীবী সাংবিধানিক কোর্টে যেতে পারতেন৷ তা না করে, তারা একটি ফৌজদারি আদালতে আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বসেছেন৷ যেটা আনথিংকেবল এবং আন হেয়ার্ড অব৷'

'কোনো ফৌজদারি আদালত এবং একইসঙ্গে বিচারিক আদালতে ওই আদালত সম্পর্কিত আইন চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করা যায় না৷'

'আমরা আদালতে তুলে ধরেছি যে, সংবিধানের ৪৭ এর ৩ অনুচ্ছেদ এবং ৪৭ এর ক অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা এবং যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত আসামির কোনো মৌলিক অধিকার থাকবে না৷ এমনকি, মৌলিক অধিকারের দাবিতে হাইকোর্টে কোনো রিট পিটিশন করতে পারবে না এবং এ সংশ্লিষ্ট কোনো আইন তৈরি করা হলে, সেই আইন যদি সংবিধানের কোনো অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিকও হয়, তারপরও সেটি অবৈধ হবে না,' যোগ করেন তিনি৷

ট্রাইব্যুনালের বিচারিক এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আরও বলেন, 'এই পিটিশনটি করা হয়েছে মূলত মিডিয়া অ্যাটেনশনের জন্য এবং এক ধরনের হাইপ তুলে এই আদালতকে বিতর্কিত করার জন্য৷'

'আমরা আদালতের কাছে জিয়াউল আহসানের পক্ষের আইনজীবীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছি,' বলেন তিনি৷

Comments

The Daily Star  | English
yunus to meet tarique rahman in london

Yunus-Tarique meeting in London on June 13: Fakhrul

The BNP secretary general expresses hope that the meeting could have significant implications for the country's political landscape

3h ago