বিপিএল

রান তাড়ার রেকর্ড গড়ে বিপিএলে আবার চ্যাম্পিয়ন বরিশাল

আম্পায়ারের ওয়াইড সিগন্যাল দেখেই বুনো উল্লাসে ছুটলেন রিশাদ হোসেন। তাকে ধরতে ডাগআউট থেকে ছুটে এলেন বাকিরা। ম্যাচ জেতানো রানটা ওয়াইড থেকে এলেও খানিক আগে দুলতে থাকা ম্যাচের গতিপথ ছক্কায় ঠিক করে দিয়েছেন রিশাদই। বারবার রঙ বদলানো বিপিএলের ফাইনাল জিতে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফরচুন বরিশাল।

শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চিটাগাং কিংসকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে বরিশাল। চিটাগাংয়ের করা ১৯৪ রানের পুঁজি ৩ বল আগে পেরিয়ে জিতেছে তারা। বিপিএলের ফাইনালে এটাই রেকর্ড রান তাড়ার জয়। ২০২৩ সালে সিলেট স্ট্রাইকার্সের দেওয়া ১৭৫ রানের পুঁজি পেরিয়ে আগের রেকর্ড ছিলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের।

রান তাড়ায় বরিশালের হয়ে ২৯ বলে সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল, কাইল মেয়ার্স ২৮ বলে করেন ৪৬ রান। 

এক পর্যায়ে অনায়াসে জেতার দিক ছিলো বরিশাল। তিন ওভারে ম্যাচ জিততে তাদের দরকার ছিলো ২৪ রান, হাতে ৬ উইকেট। ক্রিজে মেয়ার্স আর মাহমুদউল্লাহর মতন ব্যাটার। ম্যাচ তখন পরিস্কারভাবে হেলে বরিশালের দিকে। এই পরিস্থিতিতে এসে দারুণ এক ওভার করলেন শরিফুল। বিপদজনক মেয়ার্স ও মাহমুদউল্লাহকে ওই ওভারে ফিরিয়ে মাত্র ৫ রান দিলেন তিনি। ম্যাচ জমে গিয়েছিলো তখন।

বিনুরা ফার্নেন্দোর পরের ওভারও ঘটনাবহুল। রিশাদ হোসেনের ছক্কায় রান নাগালে আসার পর শেষ বলে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নিলেন মোহাম্মদ নবি।

শেষ ওভারে ৮ রান খুব কঠিন কিছু নয়, রিশাদ প্রথম বলই ছক্কায় উড়িয়ে কাজটা করে দিলেন মামুলি।

১৯৫ রান তাড়ায় নেমে আগ্রাসী শুরু আনেন তামিম। তাওহিদ হৃদয় আরেক পাশে ধুঁকলেও বরিশাল অধিনায়কের ব্যাট হয়ে উঠে উত্তাল। তার ঝড়ে রানের চাপ আলগা হতে থাকে। ওভারপ্রতি প্রায় ১০ করে রান আনতে থাকে বরিশাল।

নবম ওভারে শরিফুল এসে জোড়া আঘাত হেনে চিটাগাং কিংসকে ফেরান খেলায়। ২৯ বলে ৫২ করা তামিমের পর ২ বলে ১ রান করা দাবিদ মালানকে তুলে নেন তিনি।

শুরুতে ধুঁকতে থাকা হৃদয় কিছুটা তাল পাচ্ছিলেন, তবে তাকে ডানা মেলে উড়তে দেননি নাঈম ইসলাম। নাঈমের বল উড়াতে গিয়ে ২৮ বলে ৩২ রানে থামেন হৃদয়।

এরপর কাইল মেয়ার্স-মুশফিকুর রহিম মিলে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে সহজ করে দিচ্ছিলেন সমীকরণ। পুরো আসরে ছন্দহীন মুশফিককে মনে হচ্ছিলো ফাইনালে দেখাবেন সেরাটা। তার বিদায়ও হয় নাঈমের বলে। নাঈমকে উড়াতে গিয়ে ৯ বলে ১৬ করা মুসফিকের আউটে ১৩০ রানে ৪ উইকেট হারায় বরিশাল।

চাপ তখন আরও বাড়েনি মেয়ার্সের ব্যাটে। ক্যারিবিয়ান ব্যাটার চেনা ঢঙে চার-ছক্কায় বরিশাল রাখেন এগিয়ে। 

খাতায় কলমে পিছিয়ে থাকলেও মাঠের লড়াইয়ে তাল মিলিয়েছে কিংস। দুই দফায় জোড়া উইকেটসহ ৩৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে চেষ্টা চালিয়েছেন শরিফুল। চিটাগাং কিংসের হয়ে পারভেজ হোসেন ইমন ৪৯ বলে ৭৮, খাওয়াজা নাফে ৪৪ বলে ৬৬ ও গ্রায়াম ক্লার্ক ২৩ বলে ৪৪ করে রাখেন অবদান।

টস হেরে ব্যাট করতে নামা কিংসকে উত্তাল শুরু এনে দেন পারভেজ ও নাফে। দুই ওপেনারই খেলে ফেলেন ১২ ওভারের বেশি। ওভারপ্রতি তারা আনেন দশের উপর রান। এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিলো অনায়াসে দুইশো ছাড়িয়ে যাবে কিংস।

৪৪ বলে ৬৬ করা নাফে যখন ইবাদত হোসেনের বলে কট বিহাইন্ড হন ততক্ষণে স্কোরবোর্ডে এসে গেছে ১২১ রান। সেখান থেকে  রান যতদূর যাওয়ার কথা ততটা যায়নি আগ্রাসণের গতি ধরে রাখতে না পারায়। পারভেজ টিকেছেন শেষ অবধি, মাঝের দিকে কিছু ডটবল শুরুর গতিকে কমিয়ে দেয়। যদিও গ্রায়াম ক্লার্ক নেমে ২৩ বলে ৪৪ রানের একটা ইনিংস খেলেছেন।

ইনিংসের শেষ দিকে পর্যাপ্ত রান না আসায় দুইশো ছুঁতে পারেনি কিংস। কিছু রানের ঘাটতি পরে ভালোই টের পায় তারা।

Comments

The Daily Star  | English
bad loans rise in Bangladesh 2025

Bad loans hit record Tk 420,335 crore

It rose 131% year-on-year as of March of 2025

7h ago