‘অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর দায়িত্ব চাপিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর নিষ্ক্রিয় থাকার সুযোগ নেই’

আয়োজিত সংলাপ। ছবি: সংগৃহীত

সংস্কার টেকসই করতে সমঝোতা পরিষদ গঠন জরুরি উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কারের 'সমঝোতা পরিষদ' গঠনের উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

আজ শনিবার সকাল ১১টায় রংপুরের হোটেল ক্যাসপিয়ায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও জুলাই ৩৬ ফোরাম-অপরাজেয় বাংলার উদ্যোগে 'সমঝোতা ব্যতীত সংবিধান সংস্কার সম্ভব কি?' শীর্ষক সংলাপে তারা বিষয়টি জানায়।

'টেকসই সংস্কারের একমাত্র পথ: রাজনৈতিক সমঝোতা' এই বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মিডিয়া ও প্রচার সমন্বয়ক সৈয়দ হাসিবউদ্দীন হোসেন। প্রবন্ধে বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর অন্তর্বর্তী সরকারের অপেক্ষায় না থেকে নিজ উদ্যোগে সমঝোতা পরিষদ গঠন করা উচিত। রাজনৈতিক দল ও পক্ষগুলোর মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে সংবিধান সংস্কারের ব্যাপ্তি এবং প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা প্রয়োজন। সংবিধান সংস্কারের এই প্রক্রিয়া সহজ করতে অন্তর্বর্তী সরকারের 'ঐক্য কমিশন' সেক্রেটারিয়েট হিসেবে কাজ করতে পারে।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর এখন অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর দায়িত্ব চাপিয়ে নিষ্ক্রিয় থাকার সুযোগ নেই। সংবিধান সংস্কারের প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিতে হবে এবং দেশব্যাপী অংশীজনদের নিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে বাস্তবমুখী ও টেকসই পথ নির্ধারণ করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্যোগ নিয়ে সমঝোতার পথ নির্ধারণ করতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কার ব্যাহত করতে নানামুখী ষড়যন্ত্র হচ্ছে, গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া হবে।

বিএনপির রংপুর মহানগর শাখার আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু বলেন, রাজনৈতিক মহলে সংস্কার নিয়ে ঐক্য করতে হবে। সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে সমঝোতা পরিষদ তৈরির প্রস্তাবে বিএনপির নৈতিক সম্মতি রয়েছে। তবে সংবিধান সংস্কার প্রশ্নে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতেই থাকবে।

জুলাই ৩৬ ফোরাম-অপরাজেয় বাংলার আহ্বায়ক এমএএন শাহীন বলেন, একটা দেশের উন্নয়ন সমৃদ্ধি নির্ভর করে বিনিয়োগ এর ওপর। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশ গত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় ধ্বংস করে দেওয়া হয়। এখন রাজনৈতিক শক্তিদের সেই বিনিয়োগের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার সংকল্প করতে হবে।

এবি পার্টির রংপুর মহানগর শাখার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ বলেন, সংস্কার করে তারপর নির্বাচন করতে হবে। এজন্য সমঝোতায় ছোট-বড় সব শক্তিকে আলোচনার প্ল্যাটফর্মে আনতে হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের রংপুর জেলা সমন্বয়ক তৌহিদুর রহমান বলেন, জাতির জীবনে ঐতিহাসিক মুহূর্ত বারবার আসে না। অতীত থেকে দলগুলোকে শিক্ষা নিতে হবে এবং জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত সৃষ্টি করতে হবে।

ইসলামী আন্দোলন চরমোনাই রংপুর জেলার সেক্রেটারি আমিরুজ্জামান পিয়াল বলেন, সংস্কার আগে, নির্বাচন পরে—এই নীতিই গ্রহণ করা উচিত।

এছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেন এবং সংবিধান সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক সমঝোতার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের রংপুর জেলা সমন্বয়ক অধ্যাপক চিনু কবিরের সভাপতিত্বে এবং বিভাগীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট রায়হান কবীরের পরিচালনায় আয়োজনে আরও বক্তব্য রাখেন—জেএসডি রংপুর মহানগর শাখার সদস্য সচিব এবিএম মশিউর রহমান, নাগরিক ঐক্যের রংপুর জেলা আহ্বায়ক মাহি আজাদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের জাতীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য ফরিদুল ইসলাম ও কনক রহমান, গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য হানিফ খান সজিব, জেলা কমিটির সংগঠক আশিকুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক শাহরিয়ার সোহাগ ও সুমন, সুজন রংপুরের সংগঠক মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন ও খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু, সাবেক কাউন্সিলর নাসিমা আমিন, রংপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফতাব উদ্দিন, মাপা রংপুরের প্রধান নির্বাহী মুনির চৌধুরী, দর্জি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, মোবাইল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ এবং রংপুরের ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

Comments

The Daily Star  | English
National election

Political parties must support the election drive

The election in February 2026 is among the most important challenges that we are going to face.

6h ago