দেশের ওষুধ শিল্পের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল

এশিয়া ফার্মা এক্সপোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ছবি: সংগৃহীত

চলমান ১৬তম এশিয়া ফার্মা এক্সপোয় বিদেশিরা বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা বলছেন। বাংলাদেশের ওষুধের মান ক্রমাগত ভালো হওয়ার পাশাপাশি রপ্তানি বাড়ছে।

ভারতের স্মাইলাক্স ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের সহকারী মহাব্যবস্থাপক লক্ষ্মীকান্ত এনাগান্তি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাংলাদেশের ওষুধ খাতে সত্যিই প্রশংসনীয় উন্নয়ন হয়েছে। এ দেশে বিশ্বমানের ওষুধ তৈরি হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষ কর্মী আছে।'

গত বুধবার রাজধানীর পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতি আয়োজিত এশিয়া ফার্মা এক্সপো ও এশিয়া ল্যাব এক্সপো ভেন্যুতে ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

ওষুধশিল্পে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করে তিনি বলেন, 'এখানকার ওষুধ ভালোমানের। দক্ষ জনশক্তিও আছে।' তার প্রতিষ্ঠান ৬০ ধরনের অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস (এপিআই) উৎপাদন করে। বাংলাদেশের শীর্ষ ১০ ওষুধ প্রতিষ্ঠানে তা রপ্তানি করা হয়। তিনি এই প্রবৃদ্ধিকে দুই দেশের জন্য লাভজনক হিসেবে দেখছেন।

মুম্বইয়ের টাইটান ল্যাবরেটরিজ প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক দীপক শাহও একই মন্তব্য করেন। তার প্রতিষ্ঠান ২০ ধরনের এপিআই উৎপাদন করে। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে এপিআই রপ্তানি করা এই প্রতিষ্ঠান এ খাতে ঢাকার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখেছে।

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে আমাদের রপ্তানি বাড়ছে।'

বিকন মেডিকেয়ার লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী মঞ্জুরুল আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাংলাদেশ বছরে প্রায় এক দশমিক দুই বিলিয়ন ডলারের এপিআই আমদানি করে। এশিয়া ফার্মা এক্সপোর মতো আয়োজন এ দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন উপাদান ও উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহারে উৎসাহিত করবে। ওষুধশিল্পের সম্প্রসারণে সহায়তা করবে।'

বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোও এই খাতের উন্নয়নের কথা বলছেন। জার্মানির প্রসেস টেকনোলজি ফার্মার হেড অব সেলস অ্যান্ড সার্ভিস ক্লাউস এন মোলার গত ২৪ বছর ধরে বাংলাদেশে ওষুধ সরঞ্জাম সরবরাহ করে আসছেন। প্রতিষ্ঠানটি এ দেশে ছোট আকারের যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে। বাংলাদেশে ওষুধশিল্পের বিকাশ হওয়ায় তার প্রতিষ্ঠানের বিক্রি বেড়েছে।

অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে কারখানার মালিকদের পরিচিত করতে এক্সপোর গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হালিমুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মান নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলারের যন্ত্রপাতি আমদানি করে।'

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জাকিয়া সুলতানা। তিনি বলেন, 'দেশের ওষুধের চাহিদার ৯৮ শতাংশ স্থানীয়ভাবে মেটানো হয়। আমাদের ওষুধ ১৫৭ দেশে রপ্তানি হচ্ছে।'

তিনি এপিআই আমদানি নির্ভরতার সমস্যার কথা স্বীকার করেন। বাংলাদেশে এপিআই উৎপাদন বাড়ানো এবং আমদানি নির্ভরতা ও খরচ কমাতে মুন্সীগঞ্জে এপিআই শিল্প পার্ক করা হয়েছে।

জাকিয়া সুলতানা আরও বলেন, 'সেখানে ২৭ ওষুধ প্রতিষ্ঠানকে প্লট দেওয়া হয়েছে। গবেষণা ও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো এবং ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় আসতে দেশের ওষুধশিল্পকে প্রস্তুত করার অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।'

তিনি জানান, বিশ্বব্যাপী ৪০০ বিলিয়ন ডলারের জেনেরিক ওষুধের বাজারের এক শতাংশও ধরা গেলে চার বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হতে পারে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শামীম হায়দার বলেন, 'সরকারের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজস্ব আসে ওষুধ খাত থেকে।'

প্রাথমিকভাবে স্থানীয় চাহিদা মেটানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হলেও এখন বাংলাদেশের ওষুধ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও ইইউসহ ১৬০ দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।

তিন দিনব্যাপী 'এশিয়া ফার্মা এক্সপো' আগামীকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে। খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

Comments

The Daily Star  | English

Threat of fresh Rohingya influx looms as clashes erupt in Myanmar

Gunfire and explosions were heard late Friday night from villages across the border in Myanmar opposite Whykong union in Teknaf upazila of Cox’s Bazar. Residents, gripped by panic, reported that this was the most intense gunfire they had heard in months.

3h ago