সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলা, নিহত অন্তত ২

ইসরায়েলি এফ-১৫ যুদ্ধবিমান। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলি এফ-১৫ যুদ্ধবিমান। ফাইল ছবি: রয়টার্স

সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে ও দামেস্কের বাইরের অংশে বেশ কয়েকটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এসব হামলা অন্তত দুই জন নিহত হয়েছেন।

আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি, যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম গার্ডিয়ান ও কাতারভিত্তিক গণ মাধ্যম আল জাজিরা।

নিহতরা সামরিক না বেসামরিক ব্যক্তি, তা জানা যায়নি।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তারা যেন রাজধানী থেকে বের হয়ে দক্ষিণ দিকে না যায়।

মঙ্গলবার দিনের শেষভাগে দামেস্কের দক্ষিণে কিসওয়াহ শহরে ও দক্ষিণের ডেরা প্রদেশে হামলা চালিয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইসরায়েল 'সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলকে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের মতো হতে দেবে না।'

উল্লেখ্য, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল দেশটির সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর ঘাঁটি হিসেবে বিবেচিত।

ইসরায়েলের নিরস্ত্রীকরণের দাবি

ক্যাটজ জানান, 'সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ও দেশটির কোনো জঙ্গি সংগঠন দক্ষিণাঞ্চলের নিরাপত্তা জোনে নিজেদের (সামরিক উপস্থিতি) প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নিলে আমরা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে মোকাবিলা করব।'

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ। ফাইল ছবি: রয়টার্স

এর আগে রোববার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের 'সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের' দাবি জানান।

সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের নেতৃত্বে বাশার আল আসাদের সরকার পতনের অল্প সময় পর ইসরায়েল-সিরিয়ার জাতিসংঘ নির্ধারিত বাফার জোনে অনুপ্রবেশ করে ইসরায়েলি বাহিনী।

এরপর থেকে সিরিয়ার নতুন সরকার ও জাতিসংঘের প্রতিবাদ সত্ত্বেও ফিরে যায়নি ইসরায়েল, সেখানেই খুঁটি গেড়ে বসে আছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) ওই সেনারা।

আসাদের পতনের পর বেশ কয়েক সপ্তাহ সিরিয়ার অস্ত্র সংরক্ষণাগার, নৌ ঘাঁটি ও সামরিক অবকাঠামোয় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। নেতানিয়াহু দাবি করেন, আসাদ সরকারের ফেলে যাওয়া অস্ত্র যাতে বিদ্রোহীদের হাতে না যায়, সে জন্য এসব উদ্যোগ।

তবে নতুন বছরে এসে ইসরায়েলি হামলা বন্ধ হয়ে যায়। অন্তত গতকাল পর্যন্ত। আজ আবার নতুন করে শুরু হয়েছে হামলা।

সিরিয়ার নিন্দা 

মঙ্গলবারের ওই হামলার আগে সিরিয়া বাফার জোনে ইসরায়েলের অনুপ্রবেশের নিন্দা জানায় এবং সিরীয় ভূখণ্ড থেকে সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানায়।

ন্যাশনাল ডায়ালগ কনফারেন্সের শেষে এই বিবৃতি দেওয়া হয়। ওই সম্মেলনে হাজারো সিরীয় অধিকারকর্মী ও নেতা যোগ দিয়ে আসাদ-পরবর্তী রাজনৈতিক রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করেন।

বিদ্রোহীদের নেতা আবু মোহাম্মদ আল-গোলানি। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
বিদ্রোহীদের নেতা আবু মোহাম্মদ আল-গোলানি। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

তবে নিন্দা জানালেও এখনও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেনি সিরিয়ার নতুন সরকার।

১৪ বছরের গৃহযুদ্ধে জর্জরিত দেশটির নতুন সরকার এখন নতুন করে সেনাবাহিনী গঠন ও অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য কাজ করছে।

২৯ জানুয়ারি সব বিপ্লবী সংগঠনকে বিলুপ্ত করে দেয় নতুন সরকার। তবে কাগজেকলমে এই উদ্যোগ নেওয়া হোলেও এখনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আধা-সামরিক বাহিনীগুলো পুরোপুরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় হাজার দশেক 'সাবেক' সশস্ত্র বিদ্রোহীদের ওপর রাশ টেনে ধরার জন্য কাজ করছে। 

আসাদের পতনের আগেও নিয়মিত সিরিয়ার বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব হামলার দায় স্বীকার করতো না নেতানিয়াহুর সরকার। সিরিয়ায় ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের বাহিনী ও লেবাননের হিজবুল্লাহর কাছে অস্ত্র স্থানান্তর বন্ধের প্রচেষ্টা।

আসাদের পতনের সময় হিজবুল্লাহ ও ইরান-সমর্থিত বাহিনী সিরিয়া ছেড়ে যায়। তবে সিরিয়ার নতুন শাসকদেরও সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখে ইসরায়েল।

ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডেওন সা'আর সোমবার নতুন নেতৃবৃন্দকে 'জিহাদি ও ইসলামপন্থি জঙ্গি সংগঠনের' অংশ বলে মন্তব্য করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Govt decides to ban AL until completion of ICT trial

Law Adviser Prof Asif Nazrul said this at a press briefing after a special meeting of the advisory council tonight

31m ago