‘ডিজিএফআইয়ের কার্যক্রম সীমিত ও আনসার-ভিডিপির ওপর সামরিক কর্তৃত্ব বন্ধ করতে হবে’

ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। ছবি: স্টার

বাংলাদেশকে একটি নজরদারিভিত্তিক সমাজে পরিণত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি)  নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।

তিনি বলেন, 'এই নজরদারির ক্ষেত্রে জাতিসংঘ তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে বিশেষ করে মানুষের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়, এ ধরনের নজরদারি থেকে আমাদের রাষ্ট্রকে সরে আসতে হবে।'

রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সহিংসতা বিষয়ক জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নে একটি রোডম্যাপ প্রণয়নের দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে হিউমেন রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি)।

সংবাদ সম্মেলনে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'দুটি প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত করার কথা বলা হয়েছে, একটি হচ্ছে র‌্যাব, আরেকটি এনটিএমসি। এর সঙ্গে একটি প্রস্তাব আছে যা আমরা বহুদিন ধরে বলে আসছি, বাংলাদেশকে একটি নজরদারিভিত্তিক সমাজে পরিণত করা হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'ডিজিএফআইয়ের ম্যান্ডেট হচ্ছে নিরাপত্তা সংক্রান্ত গোয়েন্দা প্রতিষ্ঠান, এটা মানুষের অধিকার সংক্রান্ত দায়িত্ব পালনের জন্য নয়। এই ডিজিএফআইয়ের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ করতে হবে। একইভাবে আনসার-ভিডিপির ওপর যে সামরিক কর্তৃত্ব তা বন্ধ করতে হবে।'

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'আমরা অবশ্যই বলেছি ঢালাওভাবে বিচার করতে হবে, আওয়ামী লীগ আমলে যারা নেতৃত্বে ছিলেন তাদের বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগের পেছনের শক্তিগুলোকে কোনো অবস্থায় ছাড় দেওয়া হবে না।'

তিনি বলেন, 'জাতিসংঘের প্রতিবেদনে প্রস্তাব করা হয়েছে, সেনাবাহিনী, ডিজিএফআই, র‌্যাব, পুলিশ, আনসার ও বিজিবির যে সব সদস্যকে ২০২৪ সালের সহিংসতায় সম্পৃক্ত করা হয়েছিল, তাদের কোনো অবস্থাতেই যেন শান্তি মিশনে পাঠানো না হয়।'

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, 'আমাদের নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের স্বাধীন পরিবেশের ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে।'

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সহিংসতা বিষয়ক জাতিসংঘ প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নে একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন করার দাবি জানান তিনি।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'ভবিষ্যতে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধে পাঁচটি বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে ও ব্যাপক পরিসরে সংস্কার পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ। সেগুলো হলো- জবাবদিহিতা ও বিচারব্যবস্থা, পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী, নাগরিক অধিকার ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক সুশাসন ও দুর্নীতি দমন। জাতিসংঘের মতে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধ ও ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে সবার আগে এসব খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে।'

সংবাদ সম্মেলনে এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সমন্বয়ক তামান্না হক রীতি, ব্লাস্টের পরিচালক মো. বরকত আলী, নারীপক্ষের সদস্য রওশন আরা ও নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Housing, food may top the manifestos

Panels contesting Ducsu election are signalling key reform priorities in their upcoming manifestos

12h ago