রাজধানীবাসীর ঈদ আনন্দে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে ঈদমেলা

বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে আয়োজিত ঈদমেলা। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

বেসরকারি চাকরিজীবী রেজাউল হাসান এবারের ঈদুল ফিতরে গ্রামের বাড়ি যেতে পারেননি। গ্রামে গিয়ে পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদ করতে না পারলেও, এ উৎসবকে ঘিরে আনন্দ কম হয়নি তার।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে তিনি সন্তানদের নিয়ে বেড়াতে যান আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে আয়োজিত ঈদমেলায়। বাচ্চারা মেলায় ঘুরতে পেরে খুব খুশি। তারা ঘুরে ঘুরে মেলার বিভিন্ন অংশ দেখছে, এটাসেটা কিনছে। 

দ্য ডেইলি স্টারকে রেজাউল বলেন, 'দেশের বাড়ি যেতে পারিনি। কিন্তু ঈদে আনন্দ কম হচ্ছে না। তারা মেলায় এসে খুব আনন্দ পাচ্ছে। সুলতানি আমলের পুতুলসহ আরও নতুন নতুন খেলনা দেখে তারা ব্যাপক আনন্দিত।'

বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে আয়োজিত ঈদমেলায় সকাল থেকে দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

তিনি আরও বলেন, 'এ ধরনের আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাচ্চারা নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারে।'

রেজাউলের মতো আরও অসংখ্য পরিবার গতকাল থেকে ভিড় করছেন আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র সংলগ্ন ঈদ মেলায়। 

ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) দুই দিনব্যাপী এই মেলা আয়োজন করেছে। সেখানে প্রায় ২০০টির বেশি স্টল আছে। মজার সব খাবার-দাবার, পোশাক, খেলনা, প্রসাধনীসহ আরও নানা জিনিসপত্র নিয়ে হাজির হয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, আজ সকাল থেকেই মেলায় যথেষ্ট ভিড়। পরিবারগুলো কেনাকাটা করছে, ছবির তুলছে, পুরো এক উৎসবের আমেজ।

ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদে রাজধানীতে প্রথমবারের মতো এ ধরনের মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

আয়েশা আফরিন মেলায় এসেছেন ছোট ভাগ্নেকে নিয়ে। তিনি বলেন, 'আমরা সাধারণত ঢাকাতেই রোজার ঈদ করি এবং এবারের ঈদের আনন্দ সত্যিই নতুন কিছু আমাদের জন্য। মেলায় এসে যথেষ্ট উপভোগ করছি।'

বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে আয়োজিত ঈদমেলায় সকাল থেকে দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

তানহা তাবাসসুম বাবা-মা ও ছোট বোনের সঙ্গে এসেছিলেন মেলা প্রাঙ্গণে। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগে ঈদের সময় এমন মেলার আয়োজন দেখিনি। ঈদের আনন্দ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এবার পুরো অন্যরকম একটা আয়োজন। আমার খুবই ভালো লাগছে।'

মেলায় স্টল দেওয়া ব্যবসায়ীরাও খুবই আনন্দিত এমন আয়োজনের সঙ্গে থাকতে পেরে। 

শিশুদের পোশাক ও গয়না বিক্রির প্রতিষ্ঠান পিজোন্ডএম ক্রিয়েশনসের একটি স্টল দেখা গেছে মেলায়। এর স্বত্বাধিকারী ঝর্ণা কস্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '১২ বছর ধরে আমার এ ব্যবসা চলছে। নিয়মিত বিভিন্ন মেলায় আমরা অংশ নিয়েছি। তবে, ঈদের জন্য আয়োজিত মেলায় এই প্রথম স্টল দিয়েছি।'

নুরুন্নবী পিঠা হাউসের স্বত্বাধিকারী রানা মিয়াজি বলেন, 'এত বিশাল আয়োজনের মধ্যে ঈদ উদযাপন করা হবে ভাবতেই পারিনি। আমরা জুস বিক্রি করছি। কিন্তু দর্শনার্থীদের চাহিদা মেটাতে পারছি না। পরিবারের সঙ্গে না থেকেও নগরবাসীর সঙ্গে ঈদ উদযাপন উপভোগ করছি। এটা অন্যরকম অনুভূতি। আশা করি ভবিষ্যতে এমন আয়োজন আরও হবে।'

যোগাযোগ করা হলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসেন ডেইলি স্টারকে জানান, বিভিন্ন খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের প্রায় ২০০টির বেশি স্টল রয়েছে মেলায়। খাবার, গয়না, খেলনার মতো জিনিসপত্র বিক্রির স্টলগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। 

এছাড়া, মেলায় শিশুদের বিনোদনের জন্য পাপেট শো, ফেইরিস হুইল এবং বিভিন্ন খেলার সরঞ্জাম রাখা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, শিশুরা পুতুল ও কার্টুনের প্রদর্শনীতে বেশি ভিড় করছে। অভিভাবকরাও বেশ খুশি এমন আয়োজনে। বিক্রেতারাও ভালো সাড়া পাচ্ছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Rooppur, MRT-1, Matarbari to get special focus

Three mega projects will get special focus in the upcoming development budget with the view to providing cheaper electricity, easing Dhaka dwellers’ transportation problem and enhancing international trade for Bangladesh.

13h ago