নড়াইলে ঈদের রাতে ১০ বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর-লুটপাট

নড়াইল
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় ঈদের রাতে অন্তত ১০টি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার রাতে উপজেলার সাতরাহাজারি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আক্রান্ত বাড়িগুলোতে ভাঙচুরের চিহ্ন এখনো স্পষ্ট। দেয়ালে ফাটল, কেটে ফেলা টিনের বেড়া এবং ঘরের ভেঙে ফেলা টেলিভিশন, ফ্রিজ, আলমারি ও অন্যান্য আসবাবপত্র দেখে তা আঁচ করা যায়।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সাতরাহাজারি এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য সাঈদ মিনা ও সাবেক ইউপি সদস্য আকতার কাজীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এর জেরে ঈদের রাতে ৮টার দিকে আকতার কাজীর নেতৃত্বে একদল ব্যক্তি সাঈদ মিনার সমর্থক অন্তত দশটি পরিবারের ওপর হামলা চালায়। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে রয়েছেন জলিল মোল্লা, মফিজুর মোল্লা, মান্নান মোল্লা, নজরুল মোল্লা, আবু তাহের মিনা, জব্বার মিনা, তারিকুল মিনা ও নাঈম মিনা।

হামলার শিকার জলিল মোল্লা বলেন, 'বাজার থেকে ফিরে দেখি আমার ঘর তছনছ করা হয়েছে। ট্রাংকের তালা ভেঙে আমার ৫১ হাজার টাকা নিয়ে গেছে, যা দিয়ে বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা করছিলাম। আমার স্ত্রীর সোনার চেইন ও কানের দুল পর্যন্ত নিয়ে গেছে। টিভি, ফ্রিজসহ অন্যান্য জিনিসও ভেঙে ফেলেছে।'

আরেক ভুক্তভোগী মফিজুর মোল্লা বলেন, 'আমি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। শুধু মিনা পরিবারের সদস্য হওয়ায় আমার বাড়িতেও হামলা হয়েছে। হামলাকারীরা ২১ হাজার টাকা, সোনার গয়না, পাঁচ বস্তা ধনিয়া, পাঁচ বস্তা ডাল ও ১০ বস্তা ধান লুট করে নিয়ে গেছে। আমি দিনমজুর, অনেক কষ্ট করে এগুলো জমিয়েছিলাম।'

ক্ষতিগ্রস্ত আরেক বাসিন্দা লেখজান বেগম বলেন, 'কোনো কারণ ছাড়াই গত রাতে আকতার কাজী ও তার লোকজন আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়, সবকিছু তছনছ করে দেয়। তিন লাখ টাকা আর তিন ভরি সোনা নিয়ে গেছে। আমরা এখনো আতঙ্কে আছি, আবার হামলা হতে পারে। প্রশাসনের কাছে আমরা ন্যায়বিচার চাই।'

তবে ভুক্তভোগীতেদর এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আকতার কাজী। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি ওই ঘটনায় জড়িত নই, ঘটনাস্থলেও ছিলাম না। এসব মিথ্যা অভিযোগ। হামলার কথা শুনেছি, কিন্তু কোনো লুটপাট হয়নি। আমার অনুসারীরা এ ঘটনায় জড়িত নয়। কারা হামলা চালিয়েছে, তা আমি জানি না।'

এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুর রহমান বুধবার সকালে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই ইউপি সদস্যের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। উভয়পক্ষ এর আগে একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। লুটপাটের অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত কেউ এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

'Election Commission shamelessly favouring a particular party'

Hasnat Abdullah says police obstructed NCP leaders and activists from entering EC building

53m ago