ট্রাম্প-শুল্ক: আইফোনের দাম বেড়ে কত হতে পারে

ছবি: রয়টার্স

চীনা পণ্যের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বসানো অতিরিক্ত ১২৫ শতাংশ শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ট্যাবলেটসহ প্রায় সব রকমের গ্যাজেটের দাম ব্যাপকভাবে বাড়তে পারে।

আজ বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে কেবল আইফোনের দামই কয়েকশ ডলার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।

কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া আইফোনের ৮০ শতাংশই চীনে তৈরি হয়। বাকি ২০ শতাংশ তৈরি হয় ভারতে।

শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর, অ্যাপল সম্প্রতি ভারতে আইফোনের উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। 

বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, ভারতে তৈরি আইফোন যুক্তরাষ্ট্রে আনতে বেশ কিছু কার্গো ফ্লাইট ভাড়া করেছে অ্যাপল, যেগুলো ৬০০ টনের বেশি পণ্য সরবরাহ করবে।

কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের এই শুল্কযুদ্ধ শুরুর মূল্য উদ্দেশ্যই ছিল যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বাড়ানো।

শুল্কযুদ্ধ শুরুর পর পরই, ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ হাজার কোটি ডলারের নতুন বিনিয়োগের ঘোষণা দেয় অ্যাপল। এর মাধ্যমে অ্যাপল পণ্যের স্থানীয় উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করছে ট্রাম্প প্রশাসন।

কিন্তু স্মার্টফোন, ল্যাপটপের মতো প্রযুক্তি খাতের যেকোনো পণ্যের উপাদান ও সংযোজনের জন্য বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের ওপর নির্ভর করতে হয় কোম্পানিগুলোকে। এশিয়ার দেশগুলোতে কম খরচ ও দ্রুত উৎপাদনের দক্ষ শ্রমিক পাওয়া যায় বলেই এসব দেশে কারখানা স্থাপন করে অ্যাপলের মতো কোম্পানি। 

ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক ড্যান ইভসের মতে, এশিয়ার সাশ্রয়ী উৎপাদনকেন্দ্রগুলো থেকে সরবরাহ ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে আনাটা অনেক সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া। 

'আমাদের হিসাব অনুযায়ী, অ্যাপলের সরবরাহ ব্যবস্থার মাত্র ১০ শতাংশ এশিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে আনতে কমপক্ষে তিন বছর সময় লাগবে, অতিরিক্ত ৩০ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে,' বলেন ইভস। 

আইফোনের দাম কত হবে? 

শুল্কজনিত বাড়তি খরচ ভোক্তার ওপর চাপানো হবে কি না এবং এতে আইফোনের দাম বাড়বে কি না, তা এখনো স্পষ্ট করেনি অ্যাপল।

কিছু বিশ্লেষকের মতে, অন্য যেকোনো কোম্পানির চেয়ে প্রতি পণ্যে বেশি পরিমাণ লাভ করছে অ্যাপল। যে কারণে শুল্ক-সংক্রান্ত মূল্যস্ফীতি কমানোর ক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছে তারা। 

ফরেস্টারের প্রধান বিশ্লেষক দিপাঞ্জন চ্যাটার্জি বলেন, 'অ্যাপল শুল্কজনিত খরচ কিছুটা নিজেদের ঘাড়ে ফেলতে পারবে। এতে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা নেই তাদের।' 

তবে শুল্কের বাড়তি খরচ পুরোপুরি ভোক্তাদের ওপর চাপানো হলে যুক্তরাষ্ট্রে আইফোনের দাম তিনগুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান ইউবিএস জানায়, এখন চীনে তৈরি ২৫৬ গিগাবাইট স্টোরেজের আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্সের দাম এক হাজার ১৯৯ ডলার থেকে বেড়ে এক হাজার ৯৯৯ ডলার হয়ে যেতে পারে।

অর্থাৎ, বাংলাদেশি মুদ্রায় এই আইফোন মডেলের দাম হবে দুই লাখ ৪৩ হাজার টাকা। 

তবে ভারতে তৈরি ১২৮ গিগাবাইট স্টোরেজের আইফোন ১৬ প্রোর দাম এতটা বাড়বে না। এর দাম ৯৯৯ ডলার থেকে বেড়ে এক হাজার ৪৬ ডলারে যেতে পারে। 

ট্রাম্প প্রশাসনের স্বপ্ন অনুযায়ী, সামনে অ্যাপল যদি তাদের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের কারখানায় উৎপাদন করে, তাহলে দাম বহুগুণ বেড়ে যাবে। 'মেইড ইন ইউএসএ' আইফোনের দাম তিন হাজার ৫০০ ডলার বা চার লাখ ২৫ হাজার টাকার মতো হতে পারে। 

Comments

The Daily Star  | English

NBR plans to roll back tax benefits for exporters

The prospect of reduced tax benefits has rattled exporters, already wrestling with shifting global trade dynamics, including fresh US tariffs

11h ago