তিন অভিযোগ তদন্তে বিসিবিতে দুদকের প্রতিনিধি দল

মঙ্গলবার দুপুরে আচমকাই জানা গেল বিসিবিতে অভিযান পরিচালনা করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের তিন সদস্যের একটি দলকে পরে দেখা গেল মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বিসিবি কার্যালয়ে প্রবেশ করতে। বেরিয়ে এসে তারা জানান মূলত তিনটি অভিযোগ নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুদকের প্রতিনিধিরা বিসিবি কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। ঘণ্টা দেড়েক সেখানে অবস্থান করার পর দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন গণমাধ্যমে জানান, তারা মূলত তিনটি অভিযোগ নিয়ে কাজ করছেন। তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, 'তৃতীয় বিভাগ বাছাই লিগে এবার ৬০টি দল অংশ নিয়েছে। আগে ২-৩ বা সর্বোচ্চ ৪ দলের লিগ হতো। এখানে হয়তো কোনো কারণ আছে। আমরা কাগজপত্র সংগ্রহ করেছি, এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বা বোর্ডের কোনো প্রভাব ছিল কিনা দেখার জন্য। এমনিতেই বোঝা যাচ্ছে, আগে হয়তো অংশগ্রহণের স্বাধীনতা ছিল না, কোনো চাপ ছিল, যে কারণে দলগুলো আসত না। আমরা বিস্তারিত যাচাইবাছাই করে বুঝতে পারব এখানে কী অসঙ্গতি ছিল।'
বিপিএলের গত আসরে টিকিট বিক্রি করে ১৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা আয় করার কথা জানায় বিসিবি। এবার এক আসরে ১৩ কোটির বেশি, বাকি ১০ আসর মিলিয়ে স্রেফ ১৫ কোটি। আয়ের সেই অস্বাভাবিক হার নিয়ে তদন্ত করছে তারা, 'আগে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থ নিয়ে টিকেটের ব্যাপারে চুক্তি করা হতো। তারা টিকেট বিক্রি করে বিসিবিকে একটা অংশ দিত। গত ৩-৪ আসরে বিসিবি নিজ থেকে টিকেট বিক্রি করছে। যার প্রেক্ষিতে একাদশ আসরে আমরা দেখেছি, ১৩ কোটি টাকা আয় হয়েছে। আট বছরে যেখানে ১৫ কোটি, এক বছরেই ১৩ কোটি। রেকর্ডপত্র আমরা পেয়েছি। বিস্তারিত যাচাই করলেই বোঝা যাবে কী অসঙ্গতি এখানে।'
২০২০-২১ সালে স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দেশব্যাপী সরকারি নানান আয়োজন ছিলো। এর অংশ হিসেবে বিসিবিও জাকজমকপূর্ণ কনসার্টসহ বর্ণিল আয়োজন করে। এই আয়োজনে ব্যয়ের হিসেব গড়মিলের তথ্যের কথা বলেন দুদকের কর্মকর্তা, 'মুজিব শতবর্ষের ব্যয়ের হিসেবে কিছু অস্বাভাবিকতা আছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো যাচাইবাছাই করে আমরা আমাদের এনফোর্সমেন্ট ইউনিটে প্রতিবেদন দাখিল করব। সেই অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপের ব্যাপারে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।'
'কনসার্টসহ যে আয়োজন হয়েছিল, সেখানে সব মিলিয়ে ২৫ কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। আমরা এই অভিযোগ পেয়েছি। তবে আসলে খরচ হয়েছে ৭ কোটি টাকার মতো। এখানে প্রায় ১৯ কোটি টাকা সরানো হয়েছে বা কিছু হয়েছে। এরকম অভিযোগ আমরা পেয়েছি।'
দুদকের অভিযানে সহযোগিতা করে পুরোটা সময় উপস্থিত ছিলেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী। গণমাধ্যমকে তিনি জানান তারা সমস্ত কাগজ পত্র দিয়ে দুদককে সহযোগিতা করবেন, 'যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, এসবের ব্যাপারে আমাদের কাছে যত কাগজপত্র আছে, সব বিভাগকে সেগুলো দুদকের কাছে দিয়ে সহযোগিতার জন্য বলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। এখন যেহেতু অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে, তাই এর বেশি কিছু বলা উচিত হবে না।'
Comments