কাফনের কাপড় বেঁধে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের গণমিছিলের ঘোষণা

নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করছে আন্দোলনরত পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। ছবি: ভিডিও থেকে স্ক্রিণশট
নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করছে আন্দোলনরত পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। ছবি: ভিডিও থেকে স্ক্রিণশট

ছয় দফা দাবি পূরণ নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা না আসায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আন্দোলনরত পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শিক্ষার্থীরা।

ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ শুক্রবার সারা দেশে একযোগে কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে গণমিছিল করবেন তারা।

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে 'কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ' নামের পেজে পোস্ট করে এই কর্মসূচির বিষয়টি জানিয়েছেন তারা।

পোস্ট ও ভিডিওতে উল্লেখ করা হয়, 'বাদ জুম্মা সারা বাংলাদেশের সকল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট একযোগে "৮৭ এর কাফন আন্দোলন" এর ন্যায় কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে গণমিছিল করবে।'

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

পরবর্তীতে ৬ দফা দাবি আদায়ে আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় পলিটেকনিকের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি শাখা) রেহানা ইয়াসমিন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি মাশফিক ইসলাম বলেন, 'আমরা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো অফিসিয়াল কাগজপত্র বা তাদের কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ দেখিনি। তারা প্রতিটি বিষয়ের অগ্রগতি আটকে রেখেছেন।'

'আজকের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। আমাদের ছয় দফা দাবি আদায়ে শিগগির নতুন করে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করব,' বলেন তিনি।

শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবিগুলো হলো, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।

দ্বিতীয় দাবি, ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করতে হবে এবং একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে।

তৃতীয় দাবি, উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

চতুর্থ দাবি, কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোয় অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ ও সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।

পঞ্চম দাবি, স্বতন্ত্র 'কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা' মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও 'কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন' গঠন করতে হবে।

ষষ্ঠ দাবি, পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

1h ago