বিসিএসকে যুগোপযোগী করতে সিলেবাস ও আরও যেসব পরিবর্তন আনছে পিএসসি

বিসিএস পরীক্ষা যুগোপযোগী করতে সিলেবাস ও আরও কিছু পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন।
পিএসসির চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম জানিয়েছেন, ৪৯তম বিসিএস থেকে যুগোপযোগী সিলেবাস হবে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কমিশনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
কমিশনের কাজের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল।
মোবাশ্বের মোনেম প্রথমেই কমিশনের কাজের অগ্রগতি তুলে ধরেন।
তিনি জানান, ফলাফল প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও দ্রুত করার লক্ষ্যে মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে ব্যবহৃত লিথোকোড ফর্মের ডিজাইন ও মূল্যায়ন পদ্ধতিতে সংস্কার আনা হয়েছে।
'উত্তরপত্র পরীক্ষণের স্বচ্ছতা ও বস্তুনিষ্ঠতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সার্কুলার সিস্টেম চালু করা হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রে কমিউনিটি বেইজড ইনভিজিলেশন চালু করা হবে। নেক্সট জেনারেশন অ্যানসার স্ক্রিপ্ট প্রস্তুত করা হবে। প্রক্সি পরীক্ষার্থীদের প্রতিরোধের জন্য প্রার্থীদের আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে ভেরিফিকেশনের পদ্ধতি নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে,' বলেন তিনি।
বিসিএসের জট নিরসন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, 'আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে চলমান চারটি বিসিএসের জট নিরসন করার পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে জট নিরসনের দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাবে। এ লক্ষ্যে কমিশন কোনো পরীক্ষা পেছানোর চিন্তা করছে না।'
এক বছরের মধ্যে একটি বিসিএস সম্পন্ন করা সম্ভব কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ৪৭তম বিসিএস এক বছর বা তার চেয়ে কিছু বেশি সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হচ্ছে।'
৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা বাতিল না করে আরও ১০ হাজার পরীক্ষার্থীকে কেন উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হলো—জবাবে পিএসসি সদস্য মো. সুজায়েত উল্যা বলেন, '৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস সংক্রান্ত অভিযোগ সিআইডি (পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ) তদন্ত করছে এবং তদন্ত শেষে প্রশ্ন ফাঁসের অবৈধ সুবিধাভোগী প্রার্থীরা অবশ্যই শনাক্ত হবে। শনাক্ত প্রার্থীরা বিসিএস পরীক্ষার নির্বাচন প্রক্রিয়ার যে পর্যায়েই থাকুক না, কেন তাদের পরীক্ষার ফলাফল বাতিল ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ থাকবে।'
'প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সবার পরীক্ষা বাতিল করা হলে বহু নির্দোষ পরীক্ষার্থীর মূল্যবান সাফল্য হাতছাড়া হয়ে যাবে ও অধিকার ক্ষুণ্ন হবে এবং এর ফলে তাদের যে ক্ষতি হবে, তা পূরণ করা সম্ভব নাও হতে পারে,' মত দেন তিনি।
কমিশনের বিকল্প সিদ্ধান্ত জানিয়ে তিনি বলেন, 'জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কেউ যদি প্রথম নির্বাচিত ১০ হাজার ৬৩৮ জনের মধ্যে ঢুকে গিয়ে অন্যদের বঞ্চিত করে থাকে, সে ক্ষেত্রে আরও কিছু সংখ্যক প্রার্থীকে প্রিলিমিনারিতে নির্বাচিত করে অর্থাৎ কাট অফ কিছুটা নিচে নামিয়ে বঞ্চনার অবসান ঘটানো যেতে পারে।'
কমিশনের মত, আরও সম সংখ্যক অর্থাৎ ১০ হাজার ৬৩৮ জন প্রার্থীকে উত্তীর্ণদের মধ্যে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করা।
উল্লেখ্য, বিসিএস পরীক্ষায় চূড়ান্ত নির্বাচিতদের তালিকা লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে হয়। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর বিসিএস লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে যোগ হয় না।
বিসিএসের সিলেবাস পরিবর্তন বিষয়ে নাজমুল আমীন মুজমদার বলেন, '৪৮তম বিসিএস (বিশেষ) হলে ৪৯তম বিসিএস থেকে সিলেবাস পরিবর্তন করা হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সিভিল সার্ভিসের সিলেবাস সংগ্রহ করে গবেষণা করা হচ্ছে।'
Comments