অনশনে ৪৩ বিসিএস থেকে বাদ পড়া ৫ জন, গেজেটে অন্তর্ভুক্তির দাবি

৪৩তম বিসিএস পরীক্ষার দ্বিতীয় গেজেটে বাদ পড়া অন্তত পাঁচ চাকরিপ্রার্থী অনশন শুরু করেছেন।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে তারা অনশনে বসেন।
তাদের দাবি, বাদ দেওয়া ২২৭ জনকে চূড়ান্তভাবে গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করা এবং সরকারি চাকরি ভেরিফিকেশন নীতিমালা প্রণয়ন।
'৪৩তম বিসিএস-এর গেজেট বঞ্চিত ক্যাডার অফিসার ও সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ' ব্যানারে অনশন কর্মসূচিতে আরও বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রত্যাশী একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
অনশনরতরা জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত বছরের ১৫ অক্টোবর ৪৩তম বিসিএসের প্রথম গেজেট প্রকাশ করে। সেখানে নিয়োগের তারিখ বলা হয় ২৮ অক্টোবর।
পরে তারিখ পরিবর্তন করে ১ জানুয়ারি করা হয়।
কিন্তু, প্রথম গেজেটে অন্তর্ভুক্ত ২২৭ জনকে বাদ দিয়ে ৩০ ডিসেম্বর দ্বিতীয় গেজেট প্রকাশ করা হয়।
অনশনরতদের একজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের বাদ দেওয়ার কোনো নির্দিষ্ট কারণ জানানো হয়নি।'
বাদ পড়ার পর তারা একাধিকবার মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ করেছেন, কিন্তু এতে কোনো সুরাহা হয়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, 'যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আমাদের সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে।'
আরেক অনশনকারী বলেন, 'প্রাথমিক, লিখিত ও ভাইভা—সব ধাপ সফলভাবে উতরানোর পরও আমাদের পুলিশ ভেরিফিকেশনের নামে হয়রানি করা হয়েছে। রাষ্ট্র আমাদের অপরাধী ভাবছে।'
তিনি আরও বলেন, 'অনেকেই ইতোমধ্যে আগের চাকরি ছেড়ে ক্যাডার হিসেবে যোগদানের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এখন তারা অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে গেছেন।'
আন্দোলনকারীরা জানান, গত ৯ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে ১৪ এপ্রিলের আগে নতুন করে গেজেট প্রকাশের আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।
প্রতিবাদকারীরা জানিয়েছেন, যতদিন গেজেটে বাদ পড়াদের পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করা না হবে এবং একটি নির্দিষ্ট ভেরিফিকেশন নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন হবে, ততদিন তারা অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। তাদের সঙ্গে আরও শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থী যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর ৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। এরপর আবেদন, প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষাসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর দুই হাজার ১৬৩ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে কমিশন। পরে যাচাই-বাছাই শেষে ৯৯ জনকে বাদ দিয়ে গত বছরের ১৫ অক্টোবর দুই হাজার ৬৪ জনকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দিয়ে প্রথম গেজেট প্রকাশ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এরপর ৩০ ডিসেম্বর ওই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে প্রথম সুপারিশকৃত দুই হাজার ১৬৩ জন প্রার্থীর মধ্যে থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিত ৪০ জন এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন বিবেচনায় সাময়িকভাবে অনুপযুক্ত ২২৭ জনসহ মোট ২৬৭ জনকে বাদ দিয়ে এক হাজার ৮৯৬ জনকে নিয়োগের দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
Comments