পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫: নির্বাচনী নির্দেশনা পাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

আসন্ন পুলিশ সপ্তাহ ২০২৫ শুরুর আগে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত ও একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্দেশনা চূড়ান্ত করেছেন পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শক্ত হাতে সামাল দিতে সপ্তাহব্যাপী আলোচনায় মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে চ্যালেঞ্জ ও দাবি-দাওয়াও শুনবেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আসন্ন নির্বাচনে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার এবং কোনো পক্ষের চাপের কাছে নতিস্বীকার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সদরদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আগামী ২৯ এপ্রিল শুরু হতে যাওয়া পুলিশ সপ্তাহের প্রস্তুতি সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদরদপ্তরের সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক এনামুল হক সাগর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আইনশৃঙ্খলাসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের যৌক্তিক দাবি-দাওয়া পূরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

তিনি জানান, এ বছর বড় পরিসরের আনুষ্ঠানিকতা বাদ দিয়ে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক আয়োজন সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজারবাগ পুলিশ লাইনস অডিটোরিয়ামে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উদ্বোধন করবেন।

আয়োজনে তিনি পুলিশকে নির্বাচন সংক্রান্ত নির্দেশনা দেবেন এবং পুলিশ সদরদপ্তর নির্বাচিত ৬২ জন কর্মকর্তাকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক ও রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক প্রদান করবেন।

পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক আইজিপি মঈনুল ইসলাম, র‌্যাব মহাপরিচালক এ কে এম শাহিদুর রহমান, কয়েকজন ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত আইজিপি, ডিআইজি, কমিশনার, এসপি ও অন্যান্য কর্মকর্তা। আজ রোববার ঢাকায় উপস্থিত থাকতে তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।

উদ্বোধনের পর পুলিশ সদরদপ্তর প্রণীত দাবি প্রধান উপদেষ্টা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সামনে উপস্থাপন করা হবে। সেখানে অগ্রাধিকার পাবে একটি স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের প্রস্তাব।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশ সদরদপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, 'কেবলমাত্র একটি স্বাধীন কমিশনই পারে পুলিশ বাহিনীকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে এবং জনমুখি বাহিনীতে পরিণত করতে।'

তাদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে ক্ষতিপূরণ ভাতা চালু, পুলিশের জন্য আরও যানবাহন, কর্মীদের দাফন বা সৎকারের জন্য আর্থিক সহায়তা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, স্বাধীন সাইবার ইউনিট গঠন, জনবল বৃদ্ধি, বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা সেবা উন্নতকরণ, পুলিশ মেডিকেল কলেজ স্থাপন, নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ তৈরি এবং ভূমি বিরোধ ও পরিবেশ আইন বাস্তবায়ন সংক্রান্ত অতিরিক্ত কাজের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন।

এছাড়া, পুলিশের পুরনো দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন বাতিল, ডিআইজি পদ সংখ্যা বৃদ্ধি এবং এভিয়েশন ইউনিট চালু করা।

৩০ এপ্রিল উপদেষ্টা ও সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে আবারও এসব দাবি তুলে ধরা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রথমবারের মতো ১ মে পুলিশ সপ্তাহের শেষ দিনে ধর্মীয় নেতা, সাংবাদিক ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে আলোচনা হতে পুলিশের প্রতি জনসাধারণের প্রত্যাশা নিয়ে।

আগের বছরগুলোর মতো এবার রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে কোনো প্যারেড হবে না, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে না এবং কোনো প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানও হবে না। সবমিলিয়ে এ বছর পুলিশ সপ্তাহ পালন করা হবে বেশ সীমিত পরিসরে।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi migrants workers rights in Malaysia

Migrants in Malaysia: Worker faces deportation after speaking up

Nearly 200 workers then began a strike on Friday, he said, requesting not to be named for fear of backlash.

7h ago