৩ লাল কার্ড ও হাতাহাতি: ৭ বছর আগের কথা মনে করাল আবাহনী-কিংস

সাম্প্রতিক সময়ে আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংসের মধ্যে যেন আলাদা দ্বৈরথ তৈরি হয়েছে। প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই বাড়তি উত্তেজনা ও ঝামেলায় পরিপূর্ণ। শুক্রবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে আবারও হলো হাতাহাতির ঘটনা। এই উত্তেজনাকর ম্যাচটি যেন ফিরে নিয়ে গেল ২০১৮ সালের ২৩ নভেম্বরের সেই ঐতিহাসিক ঝামেলাপূর্ণ মুহূর্তে।
শুক্রবার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে আবাহনী লিমিটেডকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বসুন্ধরা কিংস। যেখানে মাঠে ও গ্যালারিতে ঘটে গেছে চরম বিশৃঙ্খলা। ম্যাচে তিনজন খেলোয়াড় লাল কার্ড দেখেন, আর এরপর শুরু হয় মারামারি—খেলোয়াড়, কর্মকর্তা এমনকি সমর্থকরাও জড়িয়ে পড়েন তীব্র বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতিতে।
শিরোপা দৌড়ে মোহামেডানের থেকে সাত পয়েন্ট পিছিয়ে থেকে ম্যাচটি শুরু করেছিল আবাহনী। তবে কিংসের থেকে ছয় পয়েন্ট এগিয়ে ছিল তারা। বাকি ছিল মাত্র পাঁচটি ম্যাচ। এর আগেই কিংসের কাছে ফেডারেশন কাপের নাটকীয় ফাইনালে হেরে এসেছে দলটি।

এদিন কিংসের হয়ে দুই অর্ধে একটি করে গোল করে আবাহনীর শিরোপা স্বপ্ন প্রায় শেষ করে দেন দলটি সাবেক ফরোয়ার্ড ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে কিংসের সোহেল রানার একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে আবাহনীর বদলি খেলোয়াড় আসাদুল মোল্লার সঙ্গে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। মুহূর্তেই দুই দলের অন্যান্য খেলোয়াড়রাও জড়িয়ে পড়েন, যার মধ্যে ছিলেন কিংসের সাদ উদ্দিন ও আবাহনীর শাহিন আহমেদ।

রেফারি ভুবন মোহন তরফদার ও তার সহকারীরা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন, কিন্তু ততোক্ষণে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বেঞ্চ ও গ্যালারিতেও। কয়েক মিনিট আলোচনা করে রেফারি কিংসের সোহেল ও সাদ এবং আবাহনীর শাহিনকে লাল কার্ড দেখান। খেলা পুনরায় শুরু হলেও মাঠে চলতে থাকে বিশৃঙ্খলা। গ্যালারি থেকে আবাহনী কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে গালিগালাজ করা হয়, এমনকি সাদ উদ্দিনকে আবাহনীর খেলোয়াড়দের ওপর চড়াও হওয়া থেকে আটকাতে হস্তক্ষেপ করে থামাতে হয় পুলিশকে।

মাত্র তিন বছর আগে চালু হওয়া বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা ইতোমধ্যেই নিরাপত্তাহীনতা ও দর্শক অনিয়মের জন্য পরিচিত হয়ে উঠেছে। এদিনের ঘটনা যেন ফিরে নিয়ে গেল সেই দুর্ভাগ্যজনক ২০১৮ সালের দিনটিতে, যখন ফেডারেশন কাপের ফাইনালে এই দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষে চারজন লাল কার্ড দেখেছিলেন। সেদিন আবাহনী ৩-১ গোলে জিতলেও, ম্যাচের ভিডিও ক্লিপ আজও অনলাইনে লক্ষ লক্ষ দর্শক দেখেন—যা বাংলাদেশ ফুটবলের ইতিহাসে অন্যতম কলঙ্কজনক অধ্যায়।
Comments