রাজস্ব আদায় কম, ছোট হচ্ছে বাজেটের আকার

২০২৫-২৬ অর্থবছর
অলঙ্করণ: আনোয়ার সোহেল/স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ২ জুন সংকোচনমূলক বাজেট ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঋণের সুদ পরিশোধে খরচ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি রাজস্ব আদায় কম হওয়ায় বাজেটের আকার ছোট করতে বাধ্য হচ্ছে সরকার।

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় তা সাত হাজার কোটি টাকা কম।

চলতি অর্থবছরে সুদ পরিশোধে এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। টাকার দাম ক্রমাগত কমে যাওয়ায় তা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন—শুধু সুদ পরিশোধের পরিমাণ ২০ হাজার কোটি টাকা বেড়ে যেতে পারে। এটি মোট বাজেটের ১৬ দশমিক আট শতাংশ বা এক লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা।

এর সঙ্গে মূল ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ধরলে বাজেটের ওপর খরচের চাপ আরও বাড়বে।

ঋণ পরিশোধে খরচ ক্রমাগত বাড়তে থাকায় অন্যান্য খাতে খরচের সুযোগ কমছে।

খসড়া পরিকল্পনা অনুযায়ী উন্নয়ন বাজেট ৩৫ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে দুই লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা ও পরিচালন বাজেট ২৮ হাজার কোটি টাকা বেড়ে পাঁচ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে বলে জানা গেছে।

তবে আগামী অর্থবছরে বেতন, ভাতা ও ভর্তুকির মতো খরচ চলতি অর্থবছরের মতোই অপরিবর্তিত থাকবে। বাজেট ঘাটতি জিডিপির পাঁচ শতাংশের নিচে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাজস্ব আদায় কম হওয়া সত্ত্বেও কাঠামোগত সংস্কারই আগামী বাজেটে মূল লক্ষ‍্য থাকবে অন্তর্বর্তী সরকারের।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ টেলিভিশন ভাষণে বাজেট উপস্থাপন করবেন।

সম্প্রতি প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি বলেন, 'পরবর্তী সরকারের জন্য এই বাজেট গুরুত্বপূর্ণ হবে। আমরা চাই তারা সংস্কার চালিয়ে যাবে।'

প্রস্তাবিত সংস্কারে খরচ বাড়ানোর পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায় বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। মূল উদ্যোগের মধ্যে আছে—জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মধ্যে করনীতি ও কর প্রশাসনকে আলাদা করা। প্রশাসনিক সংঘাত এবং দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার কমানো। এই সংস্কারের ফলে প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়বে এবং করদাতাদের হয়রানি কমবে বলেও আশা করা হচ্ছে।

সরকার সব পণ্যে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বসানোর পরিকল্পনা করছে। বর্তমানে অসমভাবে ভ্যাট বসানো হচ্ছে। কর ছাড় কমিয়ে রাজস্ব বোর্ড নতুন কর ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক উন্নতির মাধ্যমে অতিরিক্ত ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

আগামী অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে চার লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় তা সাত দশমিক ছয় শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত বিশ্বে সর্বনিম্ন। মাত্র সাত দশমিক চার শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেটে সতর্ক করে বলা হয়েছে—রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ কম হওয়ায় অন্যান্য বিনিয়োগে সরকারের টাকা দেওয়ার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে।

বিশ্বব্যাংক জাতীয় শুল্কনীতির আওতায় করের টাকা স্বচ্ছভাবে খরচের কাঠামো, অভিন্ন ভ্যাট হার এবং শুল্ক ও অশুল্ক বাধা কমানোসহ একাধিক প্রাতিষ্ঠানিক ও নীতিগত সংস্কারের সুপারিশ করেছে।

আগামী বাজেটে দেশের ভঙ্গুর ব্যাংকিং খাতের সংস্কারে বিশেষ বরাদ্দও দেওয়া হবে। আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এই এজেন্ডার সঙ্গে যুক্ত প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh trade deficit July-August FY25

Trade deficit narrows 2.6% in July-April

The country’s trade deficit narrowed by 2.60 percent in the first ten months of the current fiscal year compared to the same period a year ago, thanks to a rise in export earnings coupled with subdued imports..During the July-April period of fiscal year (FY) 2024-25, the trade gap was $18.

3h ago