আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ, মুক্তমতের মানুষ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রশ্ন

গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ-সম্পর্কিত 'সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫' এর একটি ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ। ওই অধ্যাদেশের একটি ধারায় বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ বা তার পক্ষে বা সমর্থনে যেকোনো প্রেস বিবৃতির প্রকাশনা বা মুদ্রণ কিংবা গণমাধ্যম, অনলাইন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে যেকোনো ধরনের প্রচারণা অথবা মিছিল, সভা-সমাবেশ বা সংবাদ সম্মেলন আয়োজন বা জনসমক্ষে বক্তৃতা দেওয়া নিষিদ্ধ।

সম্পাদক পরিষদ মনে করে, এই ধারাটি দেশের মানুষের স্বাধীন মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের অধিকার সীমিত করবে। সংবাদ প্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে শঙ্কা সৃষ্টি করবে।

প্রশ্ন উঠেছে, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ বলে দেশে-বিদেশে এই দলটির যেকোনো কার্যক্রম, যেমন: ঝটিকা মিছিল, অনলাইন সমাবেশ ইত্যাদি বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার করলে সেটিও কি ওই ধারায় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে?

একটি নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল বা সংগঠন যদি কোনো কর্মসূচি পালন করে, সেই সংবাদ জানার অধিকার যেমন মানুষের আছে, তেমনি সেই সংবাদটি প্রকাশ ও প্রচার করাও গণমাধ্যমের দায়িত্ব। যেমন: নিষিদ্ধ ঘোষিত হিযবুত তাহরীরের মিছিলসহ নানা কর্মকাণ্ডের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। সুতরাং ওই সংবাদ প্রকাশের কারণে এটা বলার সুযোগ নেই যে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম তাদের সমর্থন করছে বা তাদের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে।

একইভাবে আওয়ামী লীগ বা তার যেকোনো অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যেকোনো কর্মকাণ্ডের খবর প্রকাশকেও তাদের প্রতি সমর্থন বলার সুযোগ নেই। যে ঘটনার সংবাদমূল্য আছে, সেটি প্রকাশ ও প্রচারের দায়িত্ব যেমন গণমাধ্যমের, তেমনি সেই খবর এড়িয়ে যাওয়া বা চেপে যাওয়া সাংবাদিকতার নীতিমালারও পরিপন্থি।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দমনে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এবং তার সকল অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পরদিন ১১ মে রাত ১০টার দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। একটি ফটোকার্ড শেয়ার করে তিনি লেখেন, 'আওয়ামী লীগের পক্ষে বা সমর্থনে কোনো প্রেস বিবৃতির প্রকাশনা বা মুদ্রণ কিংবা গণমাধ্যম, অনলাইন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে যেকোনো ধরনের প্রচারণা, অথবা মিছিল, সভা-সমাবেশ বা সংবাদ সম্মেলন আয়োজন বা জনসমক্ষে বক্তৃতা প্রদান নিষিদ্ধ।'

পরদিন ১২ মে দুপুরে আরেকটি পোস্টে তিনি লেখেন, ফেসবুক-ইউটিউবে আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বললে গ্রেপ্তার করা হবে। একটি পোস্টার শেয়ার করে তার ক্যাপশনে বলা হয়, 'দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলে রেহাই নেই! গোপন বৈঠক, উসকানিমূলক মিছিল বা পোস্ট করলেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।' পোস্টারের শিরোনামে লেখা, 'ফেসবুক-ইউটিউবে আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বললেই গ্রেপ্তার।'

নিচের দিকে বিস্তারিতর জায়গায় লেখা ছিল, 'নেতাকর্মীরা গোপনে কোথাও বৈঠক, সমাবেশ কিংবা মিছিল করলে সংশ্লিষ্ট এলাকার থানার পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে পারবে। বর্তমানে শুধু মিছিল-সমাবেশ নয়, ফেসবুক-ইউটিউবে কেউ আওয়ামী লীগের পক্ষে কথা বললেও তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে। বিদেশ থেকে যারা আওয়ামী লীগের পক্ষে ফেসবুকে পোস্ট দেবেন, কমেন্ট করবেন, তাদের বিরুদ্ধেও মামলা করা যাবে।'

যদিও পরবর্তীতে আসিফ মাহমুদের অ্যাকাউন্টে গিয়ে এই পোস্টটি আর পাওয়া যায়নি। বরং তিনি আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে জারি করা সরকারের প্রজ্ঞাপনটি শেয়ার করেন। কিন্তু তারপরও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একধরনের বিভ্রান্তি বা ভীতি ছড়িয়ে যায় যে, আওয়ামী লীগের সমর্থনে লেখা বা বলা বলতে আসলে কী বুঝানো হচ্ছে এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত নন, এমন লোকদেরকেও গ্রেপ্তার করা হবে কি না?

গত ১০ মে রাতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় তিনটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্তের আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধন করা হয়। সংশোধনী অনুযায়ী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে। সেইসঙ্গে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও দলটির নেতাদের বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এর পাশাপাশি, জুলাই ঘোষণাপত্র ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার সিদ্ধান্তও উপদেষ্টা পরিষদের সভায় গৃহীত হয়।

কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞার ফলে গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অন্য কোনো প্লাটফর্মে সাংবাদিক, লেখক, বুদ্ধিজীবী এমনকি সাধারণ মানুষের কথা বলার স্পেস সংকুচিত হলো কি না—সেই প্রশ্ন ওঠে। এরকম বাস্তবতায় ১৩ মে রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে বিবৃতি দিয়ে এই বিভ্রান্তি অবসানের চেষ্টা করা হয়।

বিবৃতিতে লেখা হয়, 'আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনটি অন্য কোনো রাজনৈতিক দল বা মুক্তমতের মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করে না। আওয়ামী লীগ, এর কোনো কর্মকাণ্ড, দলটি সম্পর্কে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের যৌক্তিক, গঠনমূলক বা আইনানুগ বিশ্লেষণ বা মতামত প্রদান এই প্রজ্ঞাপন দ্বারা খর্বিত করা হয়নি।'

এখানে যে বিষয়টি পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হয়েছে তা হলো, আওয়ামী লীগের পক্ষে যায় বা তার প্রশংসামূলক কিছু লেখা ও বলা যাবে না, সেটা যেকোনো প্লাটফর্মেই হোক। কিন্তু আওয়ামী লীগের কোনো কর্মকাণ্ড, দলটি সম্পর্কে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের যৌক্তিক, গঠনমূলক বা আইনানুগ বিশ্লেষণ বা মতামত প্রদান করা যাবে। ফলে এখানে কয়েকটি প্রশ্নের সুরাহা করা প্রয়োজন।

১. 'মুক্তমতের মানুষ'র সংজ্ঞা কী এবং কে এটা ঠিক করবে?

২. সরকারের যৌক্তিক ও গঠনমূলক বিশ্লেষণ বা মতামতের মানদণ্ড কী হবে? কতটুকু সমালোচনাকে সরকার যৌক্তিক ও গঠনমূলক মনে করবে?

৩. সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে সক্রিয় বিভিন্ন গ্রুপ যেভাবে নানাবিধ মব তৈরি করছে বা বিভিন্ন ইস্যুতে যারা ভিন্নমতের মানুষ বা সমালোচকদের 'আওয়ামী লীগের দোসর' ট্যাগ দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করছে—তাদের বিষয়ে সরকারের অবস্থান কী হবে? তারা যদি কোনো ব্যক্তির কোনো বক্তব্য বা লেখাকে আওয়ামী লীগের পক্ষে গেছে দাবি করে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানায়, সেক্ষেত্রে সরকারের প্রতিক্রিয়া কী হবে?

৪. স্থানীয় পর্যায়ে ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক বিরোধের সুযোগ নিয়ে কেউ যদি তার প্রতিপক্ষের কোনো এটি লেখা বা কথাকে ভুলভাবে কিংবা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে সেটিকে আওয়ামী লীগের পক্ষে বলে দাবি করে, তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কি তাকে গ্রেপ্তার করবে?

৫. গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে কে আওয়ামী লীগের পক্ষে লিখলেন বা বললেন—সেটি কে ঠিক করবে? অর্থাৎ কোন বক্তব্যটি আওয়ামী লীগের পক্ষে, সেটি নির্ধারণ করার এখতিয়ার কার? যেকোনো নাগরিকের?

৬. ধরা যাক, একজন নির্দলীয় শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক বা গবেষক বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি, নির্বাচন, গণতন্ত্র ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কোনো একটি প্রবন্ধ-নিবন্ধ-কলাম এমনকি ফেসবুকে একটি পোস্ট দিলেন। বইপত্রে উল্লিখিত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তিনি লিখলেন। সেখানে প্রসঙ্গক্রমে বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ বা তার কোনো অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কিছু প্রশংসাসূচক কথা তিনি লিখলেন। এটি কি তিনি পারবেন? নাকি এই ধরনের লেখা বন্ধ করতে হবে? অথবা এই জাতীয় ঐতিহাসিক ঘটনা নিয়ে লিখতে গেলে কোনোভাবেই যাতে আওয়ামী লীগের প্রশংসামূলক না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে?

৭. কোনো ঐতিহাসিক ঘটনায় কিংবা সমসাময়িক রাজনৈতিক ইস্যুতে লিখিত কোনো প্রবন্ধ-নিবন্ধ বা কলামে একজন সাংবাদিক, শিক্ষক, গবেষক বা অন্য কোনো পেশার মানুষ কী লিখলেন সরকার বা তার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেটি আমলে না নিলেও অতি উৎসাহী কেউ যদি ওই লেখার কোনো একটি প্যারা বা কোনো একটি লাইনের ছবি তুলে বা স্ক্রিনশট নিয়ে সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে প্রচার চালায় যে, তিনি আওয়ামী লীগের পক্ষে লিখেছেন, অতএব তিনি আওয়ামী লীগের দোসর—তাহলে তার সুরক্ষা কে দেবে?

৮. বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় অনেক রাজনৈতিক কর্মীর বাইরে প্রচুর সাংবাদিকও গ্রেপ্তার হয়েছেন। জেল খেটেছেন। বিভিন্ন অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ওইসব মামলার পেছনে সাংবাদিকদেরই কোনো না কোনো অংশ জড়িত ছিল। এর পেছনে নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে ব্যক্তিগত শত্রুতা, প্রতিহিংসা, ঈর্ষা, ইগো, প্রেসক্লাসবসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের রাজনীতি ইত্যাদি। অর্থাৎ সাংবাদিকদেরই একটি অংশ প্রতিপক্ষের সঙ্গে আঁতাত করে ওইসব মামলা দায়ের করেছেন।

গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুতির পরে সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে বেশকিছু গ্রুপ সক্রিয়। এর মধ্যে কোনো কোনা গ্রুপ সুনির্দিষ্টভাবে সাংবাদিকদের টার্গেট করে পরিচালিত হয়। এরকম একটি গ্রুপে পোস্টের কারণে সম্প্রতি তিনটি টেলিভিশন চ্যানেলের চারজন সাংবাদিকের চাকরি চলে যায়। এই ধরনের গ্রুপের সঙ্গে অনেক সাংবাদিকও জড়িত—যারা অতীতের সরকারের আমলে নানাভাবে বঞ্চিত ও নির্যাতিত হয়েছেন। আবার কেউ কেউ বিগত সরকারের বেনিফিশিয়ারি হওয়ারে পরেও ভোল পাল্টে ফেলেছেন—এমন অভিযোগও আছে।

এরকম কোনো গ্রুপ বা কোনো ব্যক্তি যদি কারো লেখা কিংবা টকশোতে যে দেওয়া বক্তব্যের কোনো এটি অংশকে আওয়ামী লীগের পক্ষে গেছে দাবি করে 'মব' তৈরির চেষ্টা করেন, রাষ্ট্র বা সরকার কি তাকে সুরক্ষা দেবে?

৯. সরকার বলছে, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনটি অন্য কোনো রাজনৈতিক দল বা মুক্তমতের মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করবে না। কিন্তু প্রশ্ন হলো সরকার এটি নিশ্চিত করবে কীভাবে? মুক্তমতের মানুষের সংজ্ঞা কী এবং কে এটা ঠিক করবে?

১০. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (পরবর্তীতে সাইবার নিরাপত্তা আইন) অপপ্রয়োগের প্রধান কারণ হলো এর সংজ্ঞায়ন। অর্থাৎ সেখানে বলা হয়েছে ধর্মীয় অনুভূতি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ইত্যাদি। কিন্তু ধর্মীয় অনুভূতির মানদণ্ড কী এবং কী লিখলে সেই অনুভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হবে বা কে কার অনুভূতিতে আঘাত দিলো; মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে কী বুঝায় এবং এটা কে ঠিক করবে; কোন কথাটি বললে সেটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আঘাত বলে বিবেচিত হবে—এসব নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল।

বস্তুত সচেতনভাবেই ধোঁয়াশা তৈরি করে রাখা হয়েছিল যাতে যেকোনো সময় যেকোনো অজুহাতে ভিন্নমতের লোকদেরকে গ্রেপ্তার করা যায়। ফলে এখন 'মুক্তমতের মানুষ' এবং 'গঠনমূলক মতামত' ইস্যুতেও সেরকম ধোঁয়াশা থাকলো কি না এবং এর মধ্য দিয়ে সমাজে মুক্তভাবে কথা বলার বিষয়ে যে একটা ভীতি বা ভয়ের সংস্কৃতি জারি ছিল, সেটি অব্যাহত থাকবে নাকি আরও বাড়বে, তা দেখার জন্য আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।


আমীন আল রশীদ: সাংবাদিক ও লেখক

Comments

The Daily Star  | English

BGMEA wants 3-month window from India to clear pending shipments

The association urges the interim government to send a letter to India seeking the opportunity

4h ago