গাজায় ‘বিতর্কিত’ ত্রাণ সংস্থা জিএইচএফকে ৩ কোটি ডলার অনুদান দেবে যুক্তরাষ্ট্র

মার্চের শুরুতে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। পরবর্তীতে ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে মে মাসের শেষ দিকে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থাগুলোকে বাদ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) নামে সংগঠন তৈরি করে সীমিত আকারে ত্রাণ বিতরণ শুরু করে ইসরায়েল।
গতকাল বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বিতর্কিত সংগঠন জিএইচএফকে সরাসরি অর্থ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
শুরু থেকেই জিএইচএফের সঙ্গে বিতর্ক জড়িয়ে আছে। নতুন করে ত্রাণ কার্যক্রম শুরুর পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই জিএইচএফ'র বিতরণকেন্দ্রে ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়ছে, জিএইচএফের জন্য প্রথমবারের মতো সরাসরি অর্থায়ন উদ্যোগ অনুমোদন পেয়েছে।
পাশাপাশি অন্য দেশগুলোকেও এই কর্মসূচিকে সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র টমি পিগট সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনকে তিন কোটি ডলার অনুদান অনুমোদন করেছি। একইসঙ্গে আমরা অন্যান্য দেশগুলোকেও গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) ও তাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজে সহায়তা করার আহ্বান জানাচ্ছি'।
মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় খাদ্যসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সরবরাহ দুই মাসের বেশি সময় বন্ধ করে দেয়। এই অবরোধের কারণে গাজায় খাদ্য সংকট ও অপুষ্টির আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরায়েলি পাল্টা বোমা হামলায় গাজা প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম ইসরায়েলি সেনাদের পাহারায় পরিচালিত হচ্ছে। ওই প্রতিষ্ঠনাএর মার্কিন ঠিকাদারদের কাছেও অস্ত্র থাকে। মে মাসের শেষে তাদের কার্যক্রম শুরু হয়।
তবে তাদের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খলা, প্রাণহানির ঘটনা ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মে মাসের শেষের দিক থেকে প্রায় ৫৫০ মানুষ জিএইচএফের বিভিন্ন ত্রাণকেন্দ্রের কাছে নিহত হয়েছেন।
তবে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন তাদের ত্রাণ বিতরণ স্থানগুলোর আশেপাশে কোনো প্রাণঘাতী ঘটনা ঘটার কথা অস্বীকার করেছে।

জাতিসংঘ ও শীর্ষ আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো এই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তাদের মতে, সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে ত্রাণ বিতরণ করার উদ্যোগ মানবিক সহায়তার নিরপেক্ষতা ও মৌলিক নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
সমালোচনার বিষয়ে পিগট বলেন, সংস্থাটি এখন পর্যন্ত ৪ কোটি ৬০ লক্ষ খাবার বিতরণ করেছে যা 'অবিশ্বাস্য' ও 'প্রশংসার দাবি রাখে'।
পিগট আরও বলেন, 'প্রথম দিন থেকেই আমরা বলেছি, ইসরায়েলকে সুরক্ষিত রেখে গাজার মানুষকে ত্রাণ দেওয়ার কোনো সৃজনশীল সমাধান দিতে পারলে আমরা সাদরে গ্রহণ করব।'
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও 'এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে' কাজ করে যাচ্ছেন এবং জিএইচএফের এই উদ্যোগ তাদেরই সেই লক্ষ্য পূরণের অংশ।
Comments