দেশ-বিদেশের ৫০টির বেশি জাতের আমের বাগান ‘মাহিন কানন-২’ 

নড়াইল সদর উপজেলার বনগ্রামে মাহিন কাননের একটি আম গাছ। ছবি: স্টার

নড়াইল সদর উপজেলার বনগ্রামে গড়ে উঠেছে এক ব্যতিক্রমধর্মী আমবাগান, যেখানে দেশি-বিদেশি ৫০টির বেশি দুর্লভ জাতের আম চাষ করা হচ্ছে। 

শহরের কোলাহল থেকে দূরে 'মাহিন কানন-২' নামের এই চার একরের বাগান রীতিমতো আলোড়ন তুলেছে স্থানীয় পর্যটক ও কৃষিপ্রেমীদের মধ্যে।

নড়াইল শহরের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর কবির এবং তার জাপান প্রবাসী বোন জাসমিন আরা সুলতানা কাকলির যৌথ প্রচেষ্টায় ২০২১ সালে শুরু হয় এই স্বপ্নযাত্রা। 

শখ থেকেই শুরু হলেও বর্তমানে এটি রূপ নিয়েছে একটি চোখ ধাঁধানো উদ্যান হিসেবে।

নড়াইল সদর উপজেলার বনগ্রামে মাহিন কাননে বিদেশি জাতের একটি আম গাছ। ছবি: স্টার

এই এক বাগানে রয়েছে জাপানের 'মিয়াজাকি', থাইল্যান্ডের 'চিয়াংমাই', 'নাম ডাক মাই', 'বানানা ম্যাংগো', চীনের 'জিন হুয়াং', আমেরিকার 'সুপার কেন্ট' ও 'আমেরিকান বিউটি'র মতো আন্তর্জাতিক মানের আমের জাত।

পাশাপাশি রয়েছে দেশি হিমসাগর, ল্যাংড়া, কাঁচামিঠা, আম্রপালি, বারি-৪, ৮, ১১, ১২ ও ১৩ জাতের আম। সবচেয়ে ব্যতিক্রম 'থ্রি টেস্ট' নামের একটি আম, যেটি এক ফলেই তিন রকম স্বাদের অনুভূতি দেয়।

বাগানের মালিক জাহাঙ্গীর কবির দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা আর দুর্লভ ফলগাছ সংগ্রহের আগ্রহ থেকেই এই উদ্যোগ। বোনের আর্থিক সহায়তা আর মানসিক সমর্থন আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে দেশ-বিদেশের নানা জাতের আম লাগাতে।'

তিনি আরও বলেন, 'কিছু চারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এবং কিছু বিদেশ থেকে সংগ্রহ করেছি। এবার প্রায় প্রতিটি গাছেই ফল এসেছে।'

শুধু আম নয়, এই বাগানে রয়েছে আপেল, আঙুর, কাঠাল, কদবেল, ড্রাগন ফলের গাছও। আছে বাহারি ফুলগাছ। চারজন স্থানীয় শ্রমিক প্রতিদিন গাছগুলোর পরিচর্যা করেন এবং এখান থেকে তাদের জীবিকাও নির্বাহ হচ্ছে।

নড়াইল শহরের কলেজশিক্ষার্থী সারোয়ার শেখ বলেন, 'এত রকমের আমগাছ একসঙ্গে আগে কখনো দেখিনি। সবগুলো আমের রং ও নাম এত অনন্য, মনে হয় যেন কোনো রূপকথার বাগানে এসেছি।'

নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জসিম উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নড়াইলে এখন রঙিন ও উন্নত জাতের আম চাষ হচ্ছে, এটা অত্যন্ত ইতিবাচক। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কিছু জাত আমরা কাজের আওতায় রাখি। তবে কেউ নিজ উদ্যোগে নতুন জাত নিয়ে এলে তা উৎসাহব্যঞ্জক। পর্যবেক্ষণ করব, যদি ফলন ভালো হয় ও স্বাদ যথার্থ হয়, তাহলে কলম বা কাটিংয়ের মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Promises on paper, pollution in reality

Environment Adviser Syeda Rizwana Hasan’s admission of failure to stop rampant stone extraction in Sylhet’s Jaflong may be honest, but it highlights her glaring limitations as an administrator.

9h ago