ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান আর নেই

প্রথিতযশা শিল্পী ও ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান (৮০) আর নেই। আজ রোববার সকাল ১০টা সাত মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
হামিদুজ্জামান খানের স্ত্রী ও চিত্রশিল্পী আইভি জামান বাসসকে জানান, গত ১৭ জুলাই তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখান থেকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার পর আজ সকালে তিনি মারা যান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য দুপুরে তার মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে রাখা হবে। এরপর আসরের নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
১৯৪৬ সালের ১৬ মার্চ কিশোরগঞ্জের সহশ্রাম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হামিদুজ্জামান খান। ১৯৬৭ সালে বাংলাদেশ কলেজ অব আর্টস অ্যান্ড ক্রাফটস (বর্তমান চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭০ সালে চারুকলায় শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন তিনি।
তাকে অমর করে রেখেছে তার স্মারক ভাস্কর্যগুলো। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হামিদুজ্জামান খানের কাজগুলো সারা দেশে সাহসিকতা, প্রতিরোধ এবং স্মরণের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
তার বিখ্যাত কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে আশুগঞ্জ সার কারখানায় 'জাগ্রত বাংলা', জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে 'সংশপ্তক' এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে 'বিজয় কেতন'।
তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্মের মধ্যে রয়েছে মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকে 'ইউনিটি', কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে 'ফ্রিডম', বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে 'স্বাধীনতা চিরন্তন', পাবলিক সার্ভিস কমিশনে 'মৃত্যুঞ্জয়ী' এবং মাদারীপুরে 'এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম'।
প্রখ্যাত এই শিল্পীর একক প্রদর্শনী হয়েছে ৪৭টি। হামিদুজ্জামান খান ২০০৬ সালে শিল্পকলায় অবদানের জন্য একুশে পদক লাভ করেন। ২০২২ সালে বাংলা একাডেমি ফেলো নির্বাচিত হন।
Comments