পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করতে বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৭৯ রান

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

উদ্বোধনী জুটিতে পরিবর্তন এনে উড়ন্ত সূচনা পেল পাকিস্তান। সিরিজে প্রথমবারের মতো খেলতে নেমে আগ্রাসী ফিফটি করলেন ওপেনার সাহিবজাদা ফারহান। তার ও সাইম আইয়ুবের গড়ে দেওয়া শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে ঝড় তুললেন হাসান নওয়াজ ও মোহাম্মদ নওয়াজ। ফলে সফরকারীদের হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্যে নামা বাংলাদেশ পেল বড় লক্ষ্য।

বৃহস্পতিবার তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে আগে ব্যাট করেছে পাকিস্তান। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান তুলেছে তারা। প্রথম দুটি ম্যাচ জিতে ইতোমধ্যে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ।

এই ম্যাচের একাদশে বড় পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ দল। পাঁচজন খেলোয়াড়কে বদল করেছে তারা। বাইরে চলে গেছেন পারভেজ হোসেন ইমন, তাওহিদ হৃদয়, মোস্তাফিজুর রহমান, রিশাদ হোসেন ও তানজিম হাসান সাকিব। তাদের জায়গায় ঢুকেছেন তানজিদ হাসান তামিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, তাসকিন আহমেদ ও নাসুম আহমেদ।

আগের দুটি ওয়ানডেতে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপের উপরের দিকের ব্যাটার ধুঁকেছিলেন। তা বদলে গেল এদিন। তুলনামূলক ব্যাটিং সহায়ক পিচে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ ভুগল সালমান আলী আগার দলের বিপরীতে।

বাঁহাতি স্পিনার নাসুম ৪ ওভারে ২২ রানে পান ২ উইকেট। ১ উইকেট নিতে পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফুদ্দিনের খরচা ২৮ রান। বাকিরা ছিলেন খরুচে। ডানহাতি পেসার তাসকিন ৩ উইকেট শিকার করতে দেন ৩৮ রান। বাঁহাতি পেসার শরিফুল ১ উইকেট নেন ৩৬ রানের বিনিময়ে। অফ স্পিনার শেখ মেহেদী হাসান ৩ ওভারে ৩৯ রানে ছিলেন উইকেটশূন্য। আরেক অফ স্পিনার মিরাজ ১ ওভার হাত ঘুরিয়েই দেন ১৪ রান।

ফারহানের ব্যাট থেকে আসে ৪১ বলে ৬৩ রান। তিনি মারেন ছয়টি চার ও পাঁচটি ছক্কা। সাইম দুটি চার ও একটি ছয়ে করেন ২১ রান। হাসান খেলেন ১৭ বলে ৩৩ রানের ইনিংস। তিনি মারেন একটি চার ও তিনটি ছক্কা। নওয়াজ দুটি করে চার ও ছক্কায় করেন ১৬ বলে ২৭ রান।

ইনিংসের প্রথম ১০ ওভারে ১ উইকেটে ৮৬ রান তোলে পাকিস্তান। পরের ১০ ওভারে দলটির ৬ উইকেট তুলে নিলেও রানের গতি আটকাতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। শেষ ৪ ওভারেই সফরকারীরা আনে ৪৫ রান।

আগের দুটি টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ার প্লেতে ভীষণ বিপাকে পড়েছিল পাকিস্তান। প্রথম ম্যাচে ৪ ও দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ উইকেট হারিয়েছিল তারা। সেই ব্যর্থতা ঝেড়ে এদিন দেখা মেলে একেবারে ভিন্ন দৃশ্যের। ফারহানের উত্তাল ব্যাটে চড়ে স্কোরবোর্ডে দ্রুত উঠতে থাকে রান। ৬ ওভার শেষে বিনা উইকেটে ৫৭ রান তুলে ফেলে সফরকারীরা।

বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হওয়া ফারহান হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ২৯ বলে। ইনিংসের প্রথম ওভারে শেখ মেহেদী হাসানকে ছক্কা ও চার মেরে ডানা মেলেন তিনি। পরের ওভারে শরিফুল ইসলামকে হাঁকান ছক্কা। তাসকিনের করা পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে তিনি আবার মারেন ছয়, সাইম আনেন দুটি চার। পরের ওভারে মিরাজকে টানা দুটি ছক্কায় ওড়ানোর পর সিঙ্গেল নিয়ে স্পর্শ করেন ফিফটি।

বাংলাদেশ প্রথম সাফল্য পায় অষ্টম ওভারে। ছক্কা হজমের পরের বলেই উইকেট তুলে নাসুম নেন শোধ। আরেকটি ছক্কার চেষ্টায় ডিপ স্কয়ার লেগে শামীম হোসেনের তালুবন্দি হন সাইম। এরপর দ্বাদশ ওভারে ফারহানের আগ্রাসনের ইতিও টানেন নাসুম। স্লগ সুইপ করে তিনি ক্যাচ দেন শেখ মেহেদীর হাতে।

মোহাম্মদ হারিস স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন না ক্রিজে। ১ রানে রিভিউ নিয়ে ও ২ রানে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া ব্যাটারের ভোগান্তি থামান তাসকিন। তিনি ১৪ বলে করেন ৫ রান। এরপর হাসান তাণ্ডব চালিয়ে শরিফুলের শিকার হওয়ার পর হুসাইন তালাতকে (৪ বলে ১ রান) টিকতে দেননি সাইফুদ্দিন।

পাকিস্তানের সংগ্রহ ১৭০ ছাড়িয়ে যায় নওয়াজের ব্যাটে। সাইফুদ্দিনের করা ১৯তম ওভারে ওঠে ১৯ রান। নওয়াজের ব্যাটে দুটি ছক্কা হজমের পাশাপাশি তিনি দেন দুটি ওয়াইড ও একটি নো। শেষ ওভারে তাসকিন ছিলেন আঁটসাঁট। মাত্র ৫ রান দিয়ে নওয়াজ ও ফাহিম আশরাফকে (২ বলে ৪ রান) বিদায় করেন তিনি। সালমান ৯ বলে ১২ ও আব্বাস আফ্রিদি ৩ বলে ১ রানে অপরাজিত থাকেন।

Comments

The Daily Star  | English
Rohingya children

Education at Rohingya camps in disarray

The funding shortfall stems largely from a drastic reduction in humanitarian aid by the US

10h ago