বাংলাদেশ দল ঘোষণার পরই জানা গেল স্থগিত বিশ্বকাপ

দল ঘোষণা করেই দুঃসংবাদটা পায় বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন। আজ (শনিবার) দুপুরে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলন করে দ্বিতীয় নারী কাবাডি বিশ্বকাপের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করে ফেডারেশন। অভিজ্ঞ রুপালীকে অধিনায়ক করে গড়া হয় এই দল। কিন্তু ঘোষণার এক ঘণ্টাও পেরোয়নি, তখনই ভারত থেকে ই-মেইল আসে— বিশ্বকাপ স্থগিত!
সংবাদ সম্মেলন শেষ হয় দুপুর আড়াইটায়। তার কিছুক্ষণ পরই কাবাডি ফেডারেশনের মেইলে আসে ভারতীয় আয়োজকদের বার্তা— ৩ থেকে ১৩ আগস্ট হায়দরাবাদে অনুষ্ঠিতব্য দ্বিতীয় নারী কাবাডি বিশ্বকাপ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। আয়োজকদের ভাষ্য, অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর কন্টিনজেন্ট তালিকা যথাসময়ে মন্ত্রণালয়ে জমা না পড়ায় ছাড়পত্র দিতে বিলম্ব হচ্ছে। ফলে সময়মতো বিশ্বকাপ আয়োজন করা সম্ভব নয়।
অবশ্য সংবাদ সম্মেলনেই বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এস এম নেওয়াজ সোহাগ জানিয়েছিলেন এখনও তারা ভিসা প্রক্রিয়া শুরু করেননি। এছাড়াও চাইনিজ তাইপে, ইরানসহ কয়েকটি দেশের ভিসা জটিলতার কথাও জানান তিনি। আগামীকাল রোববারই ভিসার জন্য আবেদন করার কথা ছিল বাংলাদেশের। তবে এই পরিস্থিতিতে এখন আর তা প্রয়োজন পড়ছে না।
বিশ্বকাপ স্থগিত হলেও সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় কাবাডির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে ছিল বিস্তৃত আলোচনা। বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন ২০২৫-২৬ মৌসুমের জন্য তাদের বর্ষপঞ্জি প্রকাশ করেছে। এতে জাতীয় পর্যায়ে থাকছে ১০টি প্রতিযোগিতা, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ৭টি ইভেন্ট এবং প্রশিক্ষণ ক্যাম্প হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে ৪টি ইভেন্ট।
জাতীয় কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপ (পুরুষ ও নারী) এবার আয়োজন করা হবে আটটি জোনে বিভক্ত করে। প্রতিটি জোনে থাকবে আটটি করে জেলা। নদীঘেঁষা এই জোনগুলোর নামকরণ করা হয়েছে দেশের প্রধান নদ-নদীর নামে— পদ্মা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, কর্ণফুলী, রূপসা, ধানসিঁড়ি, সুরমা ও মধুমতি।
জোনভিত্তিক খেলা শুরু হবে পদ্মা জোন দিয়ে (ভেন্যু: বগুড়া) এবং শেষ হবে মধুমতি জোনে (ভেন্যু: গোপালগঞ্জ ন্যাশনাল কাবাডি একাডেমি)। অন্যান্য জোনের ভেন্যুগুলো হচ্ছে— তিস্তা: রংপুর, ব্রহ্মপুত্র: টাঙ্গাইল, কর্ণফুলী: কুমিল্লা, রূপসা: যশোর, ধানসিঁড়ি: বরিশাল, সুরমা: সিলেট।
এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গোপালগঞ্জে তৈরি হচ্ছে দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ কাবাডি কমপ্লেক্স। ২ একর জমির ওপর গড়ে উঠবে এই কেন্দ্র, যেখানে থাকবে একাডেমিক কার্যক্রম, বয়সভিত্তিক প্রশিক্ষণ, জাতীয় নারী-পুরুষ দলের অনুশীলন সুবিধা, ইনডোর জিমনেশিয়াম, সুইমিংপুল, হোস্টেল ও দুটি খেলার মাঠ। থাকবে কোচ, ফিজিক্যাল ট্রেইনার, রেফারিদের জন্য টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইউনিটও। দ্রুত সংস্কার কাজ শেষে চালু করা হবে এ কমপ্লেক্স।
সঙ্গে বাংলাদেশ কাবাডির ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায় রচিত হতে যাচ্ছে, প্রথমবারের মতো কাবাডি খেলোয়াড়দের মাসিক বেতনের আওতায় আনছে ফেডারেশন। প্রাথমিকভাবে, বাহরাইনে অনুষ্ঠিতব্য ইয়ুথ এশিয়ান গেমসে অংশ নিতে যাওয়া অনূর্ধ্ব-১৮ নারী দলের ২০ জন সদস্যকে এই সুবিধা দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে পুরুষ দলের খেলোয়াড়দেরও মাসিক বেতনের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি, খেলোয়াড়দের জন্য পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্সের মাধ্যমে ইনজুরি ও স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত সহায়তা চালু করা হয়েছে।
Comments