‘আমি পৌর বিএনপির সেক্রেটারি, ডিআইজির বইনতে, তো আমি খাব না তে ক্যাডা খ্যাব?’

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খালেদ মাসুদ তালুকদার সোহেলের কথোপকথনের একটি অডিও নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
অডিওতে চাঁদাবাজি, ব্যবসা নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কয়েকজনকে কথা বলতে শোনা যায়। কথোপকথনের এক পর্যায়ে সোহেল বলেন, 'ডিআইজির নাম কইরাই তো খাই আমি।'
'আমি পৌর বিএনপির সেক্রেটারি, আমি ডিআইজির বইনতে, তো আমি খাব না তে ক্যাডা খ্যাব?' আজ মঙ্গলবার দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়।
ছয় মিনিট ১০ সেকেন্ডের ওই অডিওতে সোহেলকে বলতে শোনা যায়, এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তিনি ১০ লাখ টাকার মধ্যে ছয় লাখ টাকা নিয়েছেন এবং প্রতি মাসে আরও এক লাখ টাকা দিতে বলেছেন।
একজন বলেন, তুমি শুধু সোহেল না, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তুমি যে টাকাই খাও সেটা কিন্তু মানুষ—এটুকু বলতেই সোহেল চটজলদি জবাব দেন, 'জানবোই তো! আমি দিবার পাই দেইখা খাবার পাই। আমার অতখানিক ক্ষমতা আছে তো, তুমগের নাই, তুমরা খ্যাবার পাও না।'
প্রসঙ্গক্রমে, ১০ লাখ টাকা এসে পড়লে কী করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আরে, আমার কী দোষ! ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার ওসি আইসা কয়, ভাই দুই লাখ ট্যায়া থাইকলো। অ্যালা দেইখেন আমার মুখ। আমি দুই লাখ ট্যায়া নিয়া ওগোরে ভালো কইরা দেখলাম। শ্যাষ, এহন আর কী করুম! ওসি আমারে ট্যায়া দিলে আমি কি না করমু? সুযুগ কি বারবারই আসে?'
পদ-পদবি ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথাও বলেন তিনি। সোহেল বলেন, 'আমার নাম কইয়া চান্দা তুলবার গেছিল, তিনটারে আটকায় থুইছি জেলখানার মধ্যে। আমার ক্ষমতা আছে আমি আটকামু না, কি করমু।'
সূত্র মতে, উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা খালেদ মাসুদ তালুকদার পুলিশের ময়মনসিংহ রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আশরাফুর রহমানের ভগ্নিপতি।
ছড়িয়ে পড়া অডিওর ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা সোহেল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যে কথাগুলো বলেছি, সেগুলো কতটুকু সত্য আপনারা তদন্ত করেন। মূল বিষয় হলো আমাকে বেকায়দায় ফেলার জন্য একটি মহল এটা করেছে।'
তিনি আরও বলেন, 'আপনারা তদন্ত করে দেখবেন আমি আসলেই কোনো অন্যায় বা চাঁদাবাজি করেছি কি না। এটি পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে তৈরি করা হয়েছে।'
তার এমন বক্তব্যের কারণে স্থানীয়রা তদন্ত করে তাকে দল থেকে অব্যাহতি ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাদারগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মঞ্জুর কাদের বাবুল খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগে ভাগে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।'
জানতে চাইলে মাদারগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল্লাহ সাইফ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
Comments