উখিয়ায় চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের বিক্ষোভে দিনভর উত্তেজনা, আটক ২৭ জনকে মুক্তি

উখিয়া থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা। ছবি: সংগৃহীত

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শিক্ষাকেন্দ্র থেকে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের বিক্ষোভ ঘিরে কক্সবাজারের উখিয়ায় দিনভর সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও আটকের ঘটনা ঘটেছে।

বিক্ষোভকারীদের ২৭ জনকে আটকের পর বিকেলে মুক্তি দেয় পুলিশ। এরপর পরিস্থিতি শান্ত হয়।

আজ বুধবার সকাল ৭টার দিকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ এলাকায় চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা সড়ক অবরোধ করে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পমুখী সংযোগ সড়কগুলোও বন্ধ করে দেয়। 

এতে সব সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়, যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।

আন্দোলনকারী শিক্ষকরা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা শান্তিপূর্ণভাবে সড়কের পাশে অবস্থান করছিলেন। যানজটের কারণে এনজিওর গাড়ি আটকে গেলে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ এসে লাঠিচার্জ করে। 

পুলিশের লাঠিচার্জে অন্তত ১০ জন শিক্ষক আহত হন এবং আন্দোলনকারী শিক্ষকদের মুখপাত্র সাইদুল ইসলাম শামীমসহ অন্তত ৭ জনকে আটক করা হয়।

পরে আহতদের উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে তাদের দেখতে আসা আন্দোলনকারী আরও ২০ জনকে পুলিশ আটক করে।

আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে কয়েকশ আন্দোলনকারী উখিয়া থানা ঘেরাও করে ওসির পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দিতে থাকেন।

তারা প্রিজনভ্যানের প্রবেশপথ আটকে দিলে আবার পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া–পাল্টাধাওয়া হয়।

দুপুরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষক ও আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরা থানায় গিয়ে আলোচনায় বসে। এর মধ্যেই বিকেল ৩টার দিকে বিক্ষোভকারীরা ফটকের তালা ভেঙে থানায় প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ আবার লাঠিচার্জ চালায়। এতে এনসিপির জেলা সংগঠক খালিদ বিন সাইদ ও এক সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।

শেষ পর্যন্ত বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সর্বদলীয় বৈঠকের মাধ্যমে ৭ ঘণ্টা পর আটক ২৭ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়।

এ তথ্য নিশ্চিত করে জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসীম উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে এবং আর কোনো বিশৃঙ্খলা বা ক্ষয়ক্ষতি না করার শর্তে মুচলেকা নিয়ে ২৭ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।'

পুলিশের সঙ্গে বিএনপি, এনসিপি, জামায়াত ও গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন দলের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল বৈঠক করে।

এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব এস এম সুজা উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা আলোচনা করে ঐকমত্যে পৌঁছেছি। শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি ও তাদের প্রতি অন্যায় আচরণের বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে। দাবিগুলো সর্বোচ্চ পর্যায়ে তুলে ধরা হবে।'

পরে মুক্তিপ্রাপ্ত শিক্ষক ও প্রতিনিধিরা উখিয়া শহীদ মিনারে সমাবেশ করেন।

চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের আন্দোলনের সমন্বয়ক শামিম হোসেন অভিযোগ করে বলেন, 'ওসি আমাদের গালিগালাজ করে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করেছে। হ্যান্ডকাফ পরিয়ে নির্যাতন করেছে। আমরা এর বিচার চাই।'

উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে স্থানীয় বাংলাদেশি শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে গত জুলাইয়ে প্রায় ১২০০ শিক্ষককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর থেকে তারা চাকরির দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।

গত সোমবারও সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তারা কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়ক অবরোধ করেন। 

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, প্রশাসন বারবার আশ্বাস দিলেও এখনো কোনো কার্যকর সমাধান দেয়নি।

Comments

The Daily Star  | English

Sada Pathor Looting: Admin officials, law enforcers involved

Some government officials  including members of law enforcement agencies were involved in the rampant looting of stones from Bholaganj’s Sada Pathor area, found a probe committee of the Sylhet district administration.

7h ago