বরাদ্দ সংকটে কুড়িগ্রামের ৩ গ্রাম তিস্তার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কা

তিস্তা নদীর ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বজরা এলাকায় তিস্তাপাড়ে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে তারা এই দাবি জানান।
তারা বলেন, বজরা ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে তিস্তার ভাঙন তীব্র হয়েছে। প্রতিদিন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসতভিটা, আবাদি জমি ও স্থাপনা। এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে সাদুয়া, দামার হাট ও বগলাকুড়া গ্রাম মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে।
গত শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত এই তিনটি গ্রামের ৩০টির বেশি বসতভিটা ও শতাধিক বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। সব হারিয়ে কেউ কেউ সরকারি রাস্তা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধর ওপর আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রিত। গ্রাম ছেড়ে চলে গেছেন অনেকে, জানান তারা।
যোগাযোগ করা হলে বজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম জানান, সাদুয়া, দামার হাট ও বগলাকুড়া গ্রামে দুই শতাধিক পরিবার বসবাস করে। তার প্রধান পেশা কৃষিকাজ ও পশু পালন। তিন গ্রামে আনুমানিক এক হাজার ২০০ বিঘা আবাদি জমি রয়েছে। শনিবার থেকে তিস্তার ভাঙনে ৩০টি বসতভিটা ও শতাধিক বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন ষাটোর্ধ্ব সাহেরা বেওয়া। তিনি বলেন, 'মঙ্গলবার বিকেলে আমাদের আট শতাংশ জমির বসতভিটা ও দুই বিঘা আবাদি জমি গিলে খেয়েছে তিস্তা নদী। ছয়জনের পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছি সরকারি রাস্তার ওপর।'
মোজাম্মেল হক বলেন, 'আমার বসতভিটা ও এক বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে রোববার রাতে। পরিবারের লোকজনকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছি আত্মীয়ের বাড়িতে। খুব কষ্টে আছি।'
তিস্তাপাড়ের বাসিন্দা আমজাদ হোসেন অভিযোগ করেন, বজরা ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে অনেক দিন ধরে ভাঙন চললেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, 'বজরা ইউনিয়নের ভাঙন পরিদর্শন করা হয়েছে। বরাদ্দ না থাকায় ভাঙন রোধে দ্রুত কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না। বরাদ্দের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি।'
Comments